চট্টগ্রাম: রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক মহাব্যবস্থাপক ইউসুফ আলী মৃধাসহ ৫ জনের বিরুদ্ধে দুর্নীতির মামলায় বাদি ও তদন্তকারী কর্মকর্তা দুদকের উপ সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুর রেজা’র জবানবন্দি শেষ হয়েছে। তাকে জেরার জন্য ২৫ মার্চ সময় নির্ধারণ করেছেন আদালত।
মঙ্গলবার চট্টগ্রাম বিভাগীয় বিশেষ জজ মো.আতাউর রহমানের আদালতে অসমাপ্ত জবানবন্দি দেন এস এম রাশেদুর রেজা।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ এস এম মুজিবুর রহমানের আদালতে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি জবানবন্দি দেয়া শুরু করেন বাদি।
দুদকের পিপি অ্যাডভোকেট মাহমুদুল হক মাহমুদ বাংলানিউজকে বলেন, রেলের ফুয়েল চেকার পদে নিয়োগে দুর্নীতির মামলায় বাদির জবানবন্দি গ্রহণ শেষ হয়েছে। বাদী বলেছেন, ফুয়েল চেকার পদে আবুল কাশেম ও আনিসুর রহমান নামের দুই প্রার্থী অনুত্তীর্ণ হলেও আসামিরা পরষ্পর যোগসাজশে উত্তরপত্র ঘষামাজা করে তাদের উত্তীর্ণ দেখান।
এর আগে গত ৫ ফেব্রুয়ারি মৃধাসহ পাঁচজনের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরুর ঘোষণা দেন আদালত।
অভিযুক্ত বাকি চারজন হলেন, রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের সাবেক সমাজকল্যাণ কর্মকর্তা গোলাম কিবরিয়া, সাবেক অতিরিক্ত প্রধান যন্ত্র প্রকৌশলী হাফিজুর রহমান এবং অবৈধভাবে নিয়োগের অপেক্ষায় থাকা দু’প্রার্থী আবুল কাশেম ও আনিসুর রহমান।
আসামীদের মধ্যে দেড় বছর পলাতক থাকার পর ৩ মার্চ ইউসুফ আলী মৃধা আদলতে আত্মসমর্পণ করেন। আদালত তার জামিন আবেদন নামঞ্জুর করে তাকে কারাগারে পাঠান। অন্যদিকে আবুল কাশেম ও আনিসুল ২ মার্চ আত্মসমর্পণ করলে তাদেরও কারাগারে পাঠান আদালত।
রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের ফুয়েল চেকার পদে নিয়োগ পরীক্ষায় দুর্নীতির অভিযোগে রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের তিন কর্মকর্তাকে আসামী করে ২০১২ সালের ১৩ সেপ্টেম্বর কোতয়ালী থানায় মামলাটি দায়ের করেছিলেন দুর্নীতি দমন কমিশনের উপ-সহকারী পরিচালক এস এম রাশেদুর রেজা।
আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ, তারা সরকারী কর্মচারী হয়েও পরস্পরের যোগসাজশে ফুয়েল চেকার পদে নিয়োগ প্রার্থীদের লিখিত পরীক্ষার খাতা ও টেবুলেশন শিটের ফলাফল ঘষামাঝা করে পরীক্ষায় উত্তীর্ণ প্রার্থীকে নিয়োগ না দিয়ে ফেল করা প্রার্থীকে নিয়োগের সুপারিশ ও অনুমোদন করেন।
২০১৩ সালের ১৮ আগস্ট তিন কর্মকর্তার সঙ্গে নিয়োগের অপেক্ষায় থাকা দু’জনকে আসামী করে আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করা হয়। আসামীদের বিরুদ্ধে দণ্ডবিধির ১৬৬, ১৬৭, ৪৭৭ (ক), ২১৭ ও ১০৯ এবং ১৯৪৭ সালের দুর্নীতি প্রতিরোধ আইনের ৫ (২) ধারায় অভিযোগ আনা হয়েছে।
উল্লেখ্য ২০১২ সালের ৯ এপ্রিল সুরঞ্জিতের এপিএসের গাড়িতে ৭০ লাখ টাকা পায় বর্ডার গার্ড বাংলাদেশের (বিজিবি) জওয়ানরা। এ সময় ওই গাড়িতে অভিযুক্ত ওই দু’জন ছাড়াও রেলের নিরাপত্তা বাহিনীর ঢাকা বিভাগীয় কমান্ড্যান্ট এনামুল হকও ছিলেন। সে রাতে ফারুকের গাড়ি চালক আলী আজম বিজিবি দফতরে টাকাসহ গাড়িটি ঢুকিয়ে দেন। ঘটনার পরদিন থেকে আলী আজম ‘রহস্যজনকভাবে’ নিখোঁজ আছেন।
পরে ওই ঘটনার জেরে রেলমন্ত্রীর পদ ছাড়েন সুরঞ্জিত। বরখাস্ত হন ফারুক এবং সাময়িক বরখাস্ত হন মৃধা ও এনামুল।
বাংলাদেশ সময়: ১৯৩২ ঘণ্টা, মার্চ ০৪, ২০১৪