ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘আমি গর্বিত, আমার পিতা দেশের হয়ে লড়েছেন’

চট্টগ্রাম প্রতিদিন ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯৪০ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২২, ২০১৪
‘আমি গর্বিত, আমার পিতা দেশের হয়ে লড়েছেন’ ছবি : বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: বীর মুক্তিযোদ্ধা ও বিশিষ্ট রাজনীতিবিদ আবদুল্লাহ আল নোমান চট্টগ্রাম সিটি কর্পোরেশনের ২০১৪ সালের একুশে স্মারক সম্মাননা পাওয়ায় কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করেছেন তার ছেলে ইস্ট ডেল্টা ইউনিভার্সিটির প্রতিষ্ঠাতা ভাইস চেয়ারম্যান সাঈদ আল নোমান।
 
২১ শে ফেব্রুয়ারি মুসলিম হল প্রাঙ্গনে আয়োজিত অনুষ্ঠানে পিতার পক্ষে পুরষ্কার গ্রহণ করেন মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সাঈদ আল নোমান।

এ সময় তিনি অনুভূতি ব্যক্ত করতে গিয়ে নিজেকে একজন সৌভাগ্যবান ও গর্বিত সন্তান বলে মন্তব্য করেন।
 
সাঈদ আল নোমান বলেন,‘মুক্তিযুদ্ধ কেবল একবারই হয়।
যারা সেই যুদ্ধে অংশ গ্রহণ করেননি, তাদের মুক্তিযোদ্ধা হওয়ার আফসোস সারাজীবন বয়ে বেড়াতে হবে। আমি গর্বিত। আমার পিতা সরাসরি ১৯৭১ সালে মুক্তিযুদ্ধে সংগঠক হয়ে দেশের জন্য লড়াই করেছেন। স্বীকৃতি হিসেবে তাকে আজ এই একুশে পদক পুরষ্কার দেয়া হয়েছে। ’

তিনি বলেন,‘তার জীবদ্দশায় প্রাপ্ত এই পুরষ্কার দেখে আমি অনেক আনন্দিত। আমি মনে করি মৃত্যুর পর গুণীজনকে সম্মাননা জানানোতে সঠিক মূল্যায়ন হয়না। চট্টগ্রামে শহীদ মিনার তৈরির স্থান, স্থাপন, নির্ধারণ ও পরিকল্পনার পেছনে আমার বাবার ভূমিকার ইতিহাস সবার জানা। আমার চাচা ভাষা সৈনিক আবদুল্লাহ আল হারুন চৌধুরী রাষ্ট্রভাষা বাংলা ছাত্র সংগ্রাম পরিষদ চট্টগ্রামের তৎকালীন আহবায়ক ছিলেন। আরেক চাচা মাহবুবুল আলম চৌধুরী একুশের প্রথম কবিতার রচয়িতা। আমাদের পুরো পরিবার ‘৫২ হতে মুক্তিযুদ্ধ হয়ে স্বৈরাচারবিরোধী আন্দোলনসহ প্রত্যকটি প্রগতিশীল ‍আন্দোলনে ওতপ্রোতভাবে জড়িয়ে আছে। ’

সাঈদ আল নোমান বলেন,‘সৌভাগ্যক্রমে মন্ত্রীত্ব পাওয়া যায়। অর্থ-বিত্ত হারিয়ে আবার ফেরতও পাওয়া যায়। টাকা দিয়ে কখনো কখনো ক্ষমতাও বশে আনা যায়। কিন্তু মুক্তিযোদ্ধার উপাধি সরাসরি যুদ্ধে না গেলে কিছুতেই লাভ করা সম্ভব নয়। ’

প্রসঙ্গত, সিটি কর্পোরেশন চট্টগ্রামের ১২ গুণীজনকে এই সম্মাননা প্রদান করেছেন। আবদুল্লাহ আল নোমান পেয়েছেন মুক্তিযুদ্ধ ও স্বাধীনতা আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ার জন্য। ১৯৪৫ সালে জন্ম গ্রহণ করেন বর্ষীয়ান নেতা নোমান। রাজনীতির শুরুটা করেছিলেন প্রগতিশীল ছাত্র সংগঠন ‘ছাত্র ইউনিয়ন’ এর নেতৃত্ব দিয়ে।

এরপর অগ্রণী ভূমিকা পালন করেন ১৯৬২ সালের আইয়ুব বিরোধী আন্দোলন, হামিদুর রহমান শিক্ষা কমিশন বিরোধী আন্দোলন, ১৯৬৯ সালের ১১ দফাসহ নানা ইস্যুতে। ১৯৭০ সালে স্বাধিকার আন্দোলনে নেতৃত্ব দেয়ায় ইয়াহিয়ার সামরিক আদালতে নোমানকে ৭ বছর সশ্রম কারাদন্ড ও ১৪ বেত্রাঘাতের নির্দেশ দেয়া হয়। ১৯৭৩ সালে ভাসানীর ন্যাপের কেন্দ্রীয় সাংগঠনিক সম্পাদক হন এই জাতীয় নেতা।

এরপর বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দল বিএনপির  ১৫ বছর যুগ্ম মহাসচিবের দায়িত্ব পালন করেন। বর্তমানে দলটির ভাইস চেয়ারম্যানের দায়িত্ব পালন করছেন। স্বৈরাচার এরশাদ বিরোধী আন্দোলনেও নোমানের অগ্রনী ভূমিকা ছিল। তিনবার সংসদ সদস্য নির্বাচিত হওয়ার পাশপাশি নোমান দুই মেয়াদে বিভিন্ন মন্ত্রণালয়ের দায়িত্ব পালন করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯৫৬ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারী ২২, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।