চট্টগ্রাম: কুকুর লেলিয়ে দিয়ে মেধাবী ছাত্র হিমাদ্রি মজুমদার হিমু হত্যা মামলার সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়েছে। প্রথম দিনে মঙ্গলবার মামলার বাদি ও হিমু’র মামা শ্রীপ্রকাশ দাশ অসিত আদালতে সাক্ষ্য দিয়েছেন।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ এস এম মুজিবুর রহমানের আদালতে এ সাক্ষ্যগ্রহণ অনুষ্ঠিত হয়।
আদালতে দেয়া সাক্ষ্যে মামলার বাদি বলেন, হিমু শিকড় নামে মাদক বিরোধী একটি সংগঠনের সঙ্গে জড়িত ছিল।
২০১১ সালের ২৬ অক্টোবর আসামীদের বিরুদ্ধে শিকড়ের পক্ষ থেকে মো.ইসমাইল নামে একজন সংগঠক পাঁচলাইশ থানায় একটি জিডি করেন। এতে আসামীদের সঙ্গে শিকড় সংগঠকদের বিরোধ সৃষ্টি হয়।
বাদি আদালতে কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, মাদকের বিরোধিতা করায় সম্ভাবনাময় ছাত্র হিমুকে নির্মমভাবে হিংস্র, বিদেশি কুকুর লেলিয়ে দিয়ে খুন করেছে আসামীরা। আমি তাদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই।
চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতের বেঞ্চ সহকারী মো.ওমর ফুয়াদ বাংলানিউজকে বলেন, সাক্ষ্য দেয়ার পর আসামী শাওনের পক্ষে বাদিকে আংশিক জেরা করা হয়েছে। আদালত আগামী ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি জেরা ও সাক্ষ্যগ্রহণের পরবর্তী সময় নির্ধারণ করেছেন।
এর আগে গত ৩ ফেব্রুয়ারি পাঁচ আসামীর বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে চাঞ্চল্যকর এ হত্যা মামলার বিচার শুরু হয়।
অভিযুক্ত পাঁচ আসামি হলেন, জাহিদুর রহমান শাওন, জুনায়েদ আহমেদ রিয়াদ এবং তার বাবা শাহ সেলিম টিপু, শাহাদাত হোসেন সাজু ও মাহবুব আলী ড্যানি।
উল্লেখ্য ২০১২ সালের ২৭ এপ্রিল নগরীর পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার ১ নম্বর সড়কের ‘ফরহাদ ম্যানশন’ নামের ১০১ নম্বর বাড়ির চারতলায় হিমুকে হিংস্র কুকুর লেলিয়ে দিয়ে নিমর্মভাবে নির্যাতন করে সেখান থেকে ফেলে দেয় অভিজাত পরিবারের কয়েকজন বখাটে যুবক।
গুরুতর আহত হিমু ২৬ দিন মৃত্যুর সঙ্গে পাঞ্জা লড়ে ২৩ মে ঢাকার একটি হাসপাতালে মারা যান। হিমু পাঁচলাইশ আবাসিক এলাকার ১ নম্বর সড়কের ইংরেজি মাধ্যমের সামারফিল্ড স্কুল অ্যান্ড কলেজের ‘এ’ লেভেলের শিক্ষার্থী ছিল।
এ ঘটনায় হিমুর মামা শ্রীপ্রকাশ দাশ অসিত বাদি হয়ে পাঁচলাইশ থানায় পাঁচজনকে আসামী করে একটি মামলা দায়ের করেন। মামলা দায়েরের এক মাসের মাথায় আসামী শাহাদাৎ হোসাইন সাজুকে গ্রেপ্তার করা হয়।
এরপর ২০১২ সালের ১০ অক্টোবর শাহ সেলিম টিপু ও ছেলে রিয়াদ আদালতে আত্মসমর্পণ করলে আদালত তাদের কারাগারে পাঠান। কিন্তু পরবর্তীতে তিনজনই জামিন পেয়ে কারাগার থেকে বেরিয়ে যান। বাকি দু’জন শুরু থেকেই পলাতক আছেন।
২০১২ সালের ৩০ সেপ্টেম্বর পাঁচলাইশ থানা পুলিশ ওই মামলায় এজাহারভুক্ত পাঁচজন আসামীকে অন্তর্ভুক্ত করে আদালতে চার্জশীট দাখিল করেন। ১৮ অক্টোবর পলাতক আসামীদের বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করেন চট্টগ্রাম মুখ্য মহানগর হাকিম।
ওই আদালত থেকে বিচারের জন্য প্রস্তুত হয়ে মামলাটির নথি নভেম্বরের শুরুতে চট্টগ্রাম মহানগর দায়রা জজ আদালতে আসে এবং অভিযোগ গঠনের মধ্য দিয়ে বিচার শুরু হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৭৪০ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ১৮,২০১৪