ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৭ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বন্দরে বেসরকারি খাতে চার্জ আদায়ে নীতিমালা হচ্ছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০২৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ৯, ২০১৪
বন্দরে বেসরকারি খাতে চার্জ আদায়ে নীতিমালা হচ্ছে

চট্টগ্রাম: চট্টগ্রাম বন্দরে বেসরকারি খাতে চার্জ আদায়ে নুতন নীতিমালা প্রণয়ন করতে যাচ্ছে জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর)। আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে এ নীতিমালা প্রণয়ন করা হবে।


নীতিমালা হলে চট্টগ্রাম বন্দরে সেবাদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো যাচ্ছেতাইভাবে চার্জ আদায় করতে পারবে না বলে মনে করেছন সংশ্লিষ্টরা।

রোববার চট্টগ্রাম কাস্টমস হাউসের সম্মেলন কক্ষে অনুষ্ঠিত এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্তের কথা জানান জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের সদস্য (শুল্ক-নীতি) ফরিদ উদ্দিন।
বৈঠকে কাস্টমস কর্মকর্তা, ব্যবাসায়ী ও স্টেকহোল্ডাররা উপস্থিত ছিলেন।

এনবিআর’র সদস্য (শুল্ক-নীতি) ফরিদ উদ্দিন বলেন, আগামী ১৭ ফেব্রুয়ারি থেকে তিনদিনব্যাপী ঢাকায় এনবিআরে বন্দর ব্যবহারকারীদের সঙ্গে বৈঠক অনুষ্ঠিত হবে। বৈঠক শেষে আগামী ৩০ মার্চের মধ্যে এই নীতিমালা চূড়ান্ত করা হবে। নীতিমালা প্রণয়নের ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক নিয়মকানুনকে প্রাধান্য দেওয়া হবে।

উল্লেখ্য, গত ১ ফেব্রুয়ারি থেকে ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার অ্যাসোসিয়েশন (বাফা) পণ্য খালাসের ছাড়পত্র নেওয়ার চার্জ বৃদ্ধি করে। এর প্রতিবাদ জানায় বিজিএমইএ। এর পরিপ্রেক্ষিতে রোববার কাস্টম হাউসে বৈঠকটি অনুষ্ঠিত হয়। এর আগে বেসরকারি ডিপোমালিকরা গত ১ জানুয়ারি থেকে দুইবার চার্জ বৃদ্ধি করে।

বৈঠকে নতুন নীতিমালা প্রণয়ন না হওয়া পর্যন্ত ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারের নতুন বর্ধিত চার্জ স্থগিত রাখার আহবান জানান এনবিআর সদস্য ফরিদ উদ্দিন। তার আহ্বানে সাড়া দিয়ে বর্ধিত চার্জ আদায় থেকে বিরত থাকার সিদ্ধান্ত নিয়েছেন বলে জানিয়েছেন ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারস অ্যাসোসিয়েশনের পরিচালক (প্রশাসন) অমিয় সরকার বর্মণ।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, চার্জ আদায়ে নীতিমালা প্রণয়নের সিদ্ধান্ত হয়েছে। তাই বর্ধিত চার্জ আদায় স্থগিত থাকবে। আগের নিয়মেই চার্জ আদায় করা হবে।

১ ফেব্রুয়ারি থেকে আমদানি চালানের ক্ষেত্রে প্রতি বিল অব লেডিংয়ের (বিএল) বিপরীতে ছাড়পত্র প্রদানের মাশুল ৭৫ শতাংশ বাড়ানো হয়। ফলে ব্যবসায়ীদেরকে আমদানি পণ্যের চালানে সর্বোচ্চ সাড়ে ৩ হাজার টাকা চার্জ দিতে হচ্ছিল ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারদের। সর্বশেষ ২০১০ সালের ১ ডিসেম্বর আমদানি পণ্যের চালানে মাশুল দেড় হাজার টাকা থেকে বাড়িয়ে দুই হাজার টাকা নির্ধারণ করেছিল ফ্রেইট ফরোয়ার্ডাররা।

ঘোষণা ছাড়া এ চার্জ বৃদ্ধিকে অযৌক্তিক বলে দাবি করে আসছে বিজিএমইএ। বাফা’র একতরফা চার্জ বৃদ্ধি প্রত্যাহার না হলে আন্তর্জাতিক বাজারে সক্ষমতা কমে পোশাক শিল্পে এর নেতিবাচক প্রভাব পড়বে বলেও জাতীয় রাজস্ব বোর্ডকে জানান তারা।

অপরদিকে ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারদের দাবি, কম চার্জে তাদের পক্ষে ব্যবসা পরিচালনা করা সম্ভব নয়। আনুষঙ্গিক ব্যয় বৃদ্ধির কারণে ব্যবসা পরিচালনায় হিমসিম খেতে হচ্ছে। আয়-ব্যয়ে ভারসাম্য রাখতে না পেরে ইতিমধ্যে অনেক প্রতিষ্ঠান বন্ধ হয়ে গেছে। এ অবস্থায় অস্তিত্ব রক্ষায় ফ্রেইট ফরওয়ার্ডারদেরকে আমদানি পর্যায়ে ডেলিভারি সার্ভিস চার্জ বাড়াতে হয়েছে।

আন্তর্জাতিক বাণিজ্য পরিমন্ডলে ফ্রেইট ফরওয়ার্ডাররা আমদানি-রপ্তানিকারকদের মধ্যে যোগসূত্র হিসেবে কাজ করে থাকেন। এ ক্ষেত্রে ফ্রেইট ফরওয়ার্ডাররা পণ্য পরিবহন ব্যবসাটি পান। আমদানি পণ্যের প্রায় ৫০ শতাংশই আনা হয় ফ্রেইট ফরোয়ার্ডারের মাধ্যমে। বাকি ৫০ শতাংশ আসে কন্টেনারের মালিকদের প্রতিনিধিদের মাধ্যমে।

রোববারের বৈঠকে কাস্টম হাউসের কমিশনার মো.মাসুদ সাদিক, বাংলাদেশ ফ্রেইট ফরোয়ার্ডার এসোসিয়েশন (বাফা) সভাপতি মাহাবুবুল আনাম, বাফার পরিচালক (জনসংযোগ) খায়রুল আলম সুজন, শিপিং এজেন্ট এসোসিয়েশন এর সভাপতি আক্তার হোসেন, বিজিএমইএ’র সাবেক প্রথম সহ-সভাপতি নাসির উদ্দিন চৌধুরী, চট্টগ্রাম চেম্বার এর পরিচালক মাহফুজুল হক শাহ, চট্টগ্রাম মেট্রোপলিটন চেম্বারের সহ-সভাপতি মাহাবুব চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদে সময়: ২০২০ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ০৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।