ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

‘চোরাচালান মামলায় মৃত্যুদণ্ডের নজির নেই’

রমেন দাশগুপ্ত, উর্মি মাহবুব ও আবদুল্লাহ আল মামুন | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৪
‘চোরাচালান মামলায় মৃত্যুদণ্ডের নজির নেই’

চট্টগ্রাম: দশ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় দায়ের হওয়া দু’টি মামলার রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন আসামীপক্ষের আইনজীবীরা। তারা এ রায়কে রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত বলেও মন্তব্য করেছেন।



দশ ট্রাক অস্ত্র মামলায় মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী এনএসআই’র সাবেক ডিজি অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দারের আইনজীবী হিসেবে অংশ নিয়েছিলেন অ্যাডভোকেট কামরুল ইসলাম সাজ্জাদ।

তিনি বাংলানিউজকে বলেন, ‘এটি হাই প্রোফাইল মামলা, হাই প্রোফাইল পলিটিক্যাল রায় হয়েছে।
এ রায়ের বিরুদ্ধে উচ্চ আদালতে আপিল করব। ’

সাজ্জাদ বলেন, ‘নজিরবিহীন ঘটনায় নজিরবিহীন রায়। বাংলাদেশের জন্মের পর থেকে চোরাচালান মামলায় মৃত্যুদণ্ডের নজির নেই। ’

আরেক মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুুজ্জামান বাবরের আইনজীবী মফিজুল হক ভূঁইয়া বাংলানিউজকে বলেন, ‘অস্ত্র ও চোরাচালান মামলায় রাষ্ট্রপক্ষ অভিযোগ প্রমাণ করতে ব্যর্থ হয়েছে। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে এ রায় দেয়া হয়েছে। আমরা এর প্রতিবাদ জানাই। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব। আসামীরা ন্যায়বিচার থেকে বঞ্চিত হয়েছেন। ’

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী জামায়াতের আমির মতিউর রহমান নিজামীর আইনজীবী অ্যাডভোকেট মোবারক শাহ বাংলানিউজকে বলেন, ‘এ মামলায় নিজামী সাহেবকে শাস্তি দেয়ার মত কোন উপাদান ছিলনা। সম্পূর্ণ অন্যায়ভাবে রায় দেয়া হয়েছে। আমরা উচ্চ আদালতে আপিল করব। ’

মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্ত আসামী এনএসআই’র সাবেক পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত উইং কমাণ্ডার সাহাবুদ্দিন আহমেদের আইনজীবী অ্যাডভোকেট হামদুর রহমান মাহমুদ, সিইউএফএল’র সাবেক এমডি মোহসিন উদ্দিন তালুকদারের আইনজীবী অ্যাডভোকেট ফজলুর রহমান ভূঁইয়াও রায়ে অসন্তোষ প্রকাশ করে উচ্চ আদালতে যাবার কথা জানিয়েছেন।

চট্টগ্রামের স্পেশাল ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক এস এম মুজিবুর রহমান বৃহস্পতিবার দশ ট্রাক অস্ত্র আটকের ঘটনায় দায়ের হওয়া দু’টি মামলার রায় ঘোষণা করেছেন বিচারক।

রায়ে জামায়াতের আমির ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবরসহ ১৪ আসামীকে চোরাচালান আইনে দায়ের হওয়া মামলায় মৃত্যুদণ্ড ও পাঁচ লক্ষ টাকা করে জরিমানা এবং অস্ত্র আইনে দায়ের হওয়া মামলায় যাবজ্জীবন কারাদণ্ড ও সঙ্গে আরও একটি ধারায় সাত বছর করে সশ্রম কারাদণ্ড দেয়া হয়েছে।

সাজাপ্রাপ্ত আসামীরা হলেন, জামায়াতের আমির ও সাবেক শিল্পমন্ত্রী মতিউর রহমান নিজামী, সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী লুৎফুজ্জামান বাবর, ভারতের বিচ্ছিন্নতাবাদী সংগঠন উলফা’র সামরিক কমাণ্ডার পরেশ বড়ুয়া, এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর জেনারেল রেজ্জাকুল হায়দার চৌধুরী, এনএসআই’র সাবেক মহাপরিচালক অবসরপ্রাপ্ত ব্রিগেডিয়ার জেনারেল আব্দুর রহিম, ডিজিএফআই’র সাবেক পরিচালক (নিরাপত্তা) অবসরপ্রাপ্ত উইং কমাণ্ডার সাহাবুদ্দিন আহমেদ, এনএসআই’র সাবেক উপ-পরিচালক অবসরপ্রাপ্ত মেজর লিয়াকত হোসেন, রায়ে আদালত এনএসআই’র সাবেক মাঠ কর্মকর্তা আকবর হোসেন খান, রায়ে আদালত সিইউএফএল’র সাবেক ব্যবস্থাপনা পরিচালক মোহসিন উদ্দিন তালুকদার,  সিইউএফএল’র সাবেক মহাব্যবস্থাপক (প্রশাসন) কে এম এনামুল হক, রায়ে আদালত চোরাচালানি হিসেবে অভিযুক্ত হাফিজুর রহমান, অস্ত্র খালাসের জন্য শ্রমিক সরবরাহকারী দীন মোহাম্মদ ও ট্রলার মালিক হাজী আবদুস সোবহান।

বাংলাদেশ সময়: ১৬২০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৩০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।