চট্টগ্রাম: যৌতুকের দাবিতে স্ত্রীকে হত্যার দায়ে আব্দুল হান্নান (৪০) নামে একজনকে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন চট্টগ্রামের একটি আদালত। একই রায়ে আদালত তাকে এক লক্ষ টাকা অর্থদণ্ডও দিয়েছেন।
এছাড়া আদালত একই মামলার আরেক আসামী আব্দুল হান্নানের মা বারেকা খাতুনের (৬২) বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় তাকে বেকসুর খালাস দিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার চট্টগ্রামের নারী ও শিশু নির্যাতন দমন ট্রাইব্যুনাল-১ এর বিচারক মো.রেজাউল করিম এ রায় দিয়েছেন।
ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট চন্দন তালুকদার বাংলানিউজকে বলেন, ‘আসামীর বিরুদ্ধে নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনের ১১ (ক)/৩০ ধারায় আনা অভিযোগ রাষ্ট্রপক্ষ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ করতে পারায় তাকে সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। ’
আদালত সূত্রে জানা গেছে, চট্টগ্রামের চন্দনাইশ উপজেলার জাফরাবাদ ইউনিয়নের নতুন চরপাড়া এলাকার আমির হোসেনের ছেলে আব্দুল হান্নানের সঙ্গে একই গ্রামের দুদু মিয়ার মেয়ে নার্গিস আক্তারের ২০০০ সালে নোটারি পাবলিকমতে বিয়ে হয়। বিয়ের পর থেকে তাকে ৫০ হাজার টাকা যৌতুকের জন্য চাপ দিতে থাকে আব্দুল হান্নান।
২০০১ সালের ১৯ এপ্রিল রাত ১০টার দিকে যৌতুকের জন্য নির্যাতনের এক পর্যায়ে নার্গিসকে শ্বাসরোধ করে খুন করে আব্দুল হান্নান। এসময় নার্গিস পাঁচ মাসের অন্ত:স্বত্তা ছিলেন।
খুনের পর নার্গিসের লাশ ফেলে দেয়া হয় বাড়ির পাশে একটি আখক্ষেতে। স্থানীয়রা পরদিন সকালে লাশ দেখতে পেয়ে পুলিশকে খবর দেয়। এ ঘটনায় দুদু মিয়া বাদি হয়ে ২০ এপ্রিল চন্দনাইশ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন।
তদন্ত শেষে চন্দনাইশ থানা পুলিশ ২০০১ সালের ২৫ জুলাই আদালতে আব্দুল হান্নান ও তার মাকে আসামী করে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। ২০০২ সালের ৩১ জানুয়ারি আদালতে আসামীদের বিরুদ্ধে অভিযোগ গঠন করা হয়।
অভিযোগপত্রে উল্লিখিত ১৯ জন সাক্ষীর মধ্যে ৮ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে বৃহস্পতিবার আদালত এ রায় ঘোষণা করেন। রায় ঘোষণার সময় আসামীরা আদালতে হাজির ছিলেন না।
ট্রাইব্যুনালের পিপি অ্যাডভোকেট চন্দন তালুকদার বাংলানিউজকে জানান, ঘটনার পর মূল আসামী আব্দুল হান্নানকে গ্রেপ্তার করা হয়েছিল। জামিনে পেয়ে গত বছরের ১৭ আগস্ট থেকে হান্নান পলাতক আছে।
বাংলাদেশ সময়: ১১৩০ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৩,২০১৪