চট্টগ্রাম: নান্দনিক চট্টগ্রাম শহর বানানো এবং চট্টগ্রাম উন্নয়ন কর্তৃপক্ষকে (সিডিএ) নতুনভাবে সাজানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছেন গৃহায়ণ ও গণপূর্ত মন্ত্রী এবং আওয়ামী লীগের প্রেসিডিয়াম সদস্য ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। অন্যদিকে চট্টগ্রামের উন্নয়নে চমক দেখাতে চান ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ।
মন্ত্রীসভার সদস্য হিসেবে শপথ নেয়ার পর চট্টগ্রামে প্রথমবারের মত সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়ে মোশাররফ ও জাবেদ তাদের বিভিন্ন পরিকল্পনা তুলে ধরেছেন।
বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম সার্কিট হাউসের সম্মেলন কক্ষে সাংবাদিকদের সঙ্গে আয়োজিত এ মতবিনিময় সভায় আরও উপস্থিত ছিলেন সাবেক মেয়র ও নগর আওয়ামী লীগের সভাপতি এবিএম মহিউদ্দিন চৌধুরী, দক্ষিণ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি মোছলেম উদ্দিন আহমদ, নগর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক আ জ ম নাছির উদ্দিন, সীতাকুণ্ড থেকে নির্বাচিত সাংসদ দিদারুল আলমসহ আওয়ামী লীগ ও সহযোগী সংগঠনের নেতারা।
উন্নয়নের নানা প্রতিশ্রুতি মোশাররফের
চট্টগ্রামকে নান্দনিক শহর হিসেবে গড়ে তোলার ঘোষণা দিয়েছেন ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ হোসেন। তিনি জানিয়েছেন, চট্টগ্রাম নগরীর যানজট নিরসনে বিমানবন্দর থেকে বারিক বিল্ডিং হয়ে তৃতীয় কর্ণফুলী সেতু পর্যন্ত এলাকায় এলিভেটেড এক্সপ্রেস ওয়ে নির্মাণ করা হবে। চট্টগ্রামে আরও কয়েকটি আবাসিক এলাকা গড়ে তোলা হবে। ডিসি হিল পার্কের আধুনিকায়নের পাশাপাশি নতুনভাবে চট্টগ্রামে আরও কয়েকটি পার্ক গড়ে তোলা হবে।
এছাড়া সিডিএ’র মাধ্যমে চট্টগ্রামে কয়েকটি ভাল শিক্ষা প্রতিষ্ঠান গড়ে তোলা হবে বলেও তিনি জানিয়েছেন।
সিডিএকে নতুনভাবে সাজাবেন মোশাররফ
মতবিনিময় সভায় ইঞ্জিনিয়ার মোশাররফ বিভিন্ন প্রসঙ্গে নিজেই বারবার তুলেছেন সিডিএ’র কথা। তিনি বলেন, সিডিএ আমার মন্ত্রণালয়ের অধীন সংস্থা। কিন্তু এ সংস্থাকে আরও দূরদৃষ্টিসম্পন্ন, তীক্ষ্ম হতে হবে। সিডিএ একটি সেবামূলক প্রতিষ্ঠান, এটি কোন বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান নয়। আমি সিডিএকে নতুনভাবে গড়ে তুলতে চাই। নতুনভাবে সিডিএকে সাজাব।
এছাড়া সিটি কর্পোরেশনের সঙ্গে সমন্বয় করে সিডিএ’র কাজ করা উচিৎ বলেও মত দেন মোশাররফ।
তবে সিডিএ নিয়ে মন্ত্রী বিভিন্ন বক্তব্য দিলেও সংস্থাটির চেয়ারম্যান ও নগর আওয়ামী লীগের অর্থ সম্পাদক আবদুচ ছালাম সভায় উপস্থিত ছিলেন না।
পাঁচ বছর পরই নির্বাচন
সমঝোতা হলেও পাঁচ বছর পরই নির্বাচন হবে বলে জানিয়েছেন মন্ত্রী মোশাররফ হোসেন।
মোশাররফ বলেন, বিএনপি চেয়ারপারসন সংলাপের কথা বলেছেন। সংলাপ হবে, তবে তার আগে জামায়াতকে ছাড়তে হবে। জামায়াতকে ছেড়ে আসলেই আমরা সংলাপে বসব। সংলাপে সমঝোতা হলে সেই অনুযায়ী পাঁচ বছর পর নির্বাচন হবে।
উন্নয়নে চমক দেখাবেন জাবেদ
দক্ষিণ চট্টগ্রামের সাংসদ হিসেবে ভূমি প্রতিমন্ত্রী সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদের কাছে এক সাংবাদিক প্রশ্ন রাখেন, চট্টগ্রাম শহরকে সম্প্রসারণ করার জন্য কালুরঘাটে কর্ণফুলী নদীর উপর কংক্রিট সেতু বানাবেন কিনা ?
জবাবে জাবেদ বলেন, চট্টগ্রামে শেখ হাসিনার নেতৃত্বে অনেক উন্নয়ন হয়েছে। মেরিন ড্রাইভ হচ্ছে, ফাইভ স্টার হোটেল হচ্ছে, ফ্লাইওভার হচ্ছে। চট্টগ্রামের উন্নয়নে আরও চমক চট্টগ্রামবাসী দেখবেন।
দুর্নীতি কমাতে পদ্ধতিগত উন্নয়ন
ভূমি মন্ত্রণালয়ের দুর্নীতি প্রসঙ্গে জাবেদ বলেন, আমি হাজারবার দুর্নীতি না করার কথা, স্বচ্ছতা, জবাবদিহিতার কথা বললেও চোর কোনদিন ধর্মের কাহিনী শুনবেনা। এজন্য সিস্টেমের উন্নয়ন ঘটাতে হবে। ভূমি মন্ত্রণালয়ের যাবতীয় কার্যক্রম অটোমোশনের আওতায় আনব।
জাবেদ বলেন, সাধারণ মানুষকে ভূমিদস্যুদের হাত থেকে রক্ষার চ্যালেঞ্জ আমি নেব। এ কাজ আমার কাছে অনেক বেশি প্রায়োরিটি পাবে।
বাংলাদেশ সময়: ২০৪০ঘণ্টা, জানুয়ারি ১৬,২০১৪
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর।