চট্টগ্রাম: দীর্ঘদিন ধরেই চট্টগ্রামের তৃতীয় কর্ণফুলী সেতুর মুখে যানবাহন থামিয়ে চলছে যাত্রী উঠা-নামা। ফলে একদিকে যেমন দূর্ঘটনার শিকার হচ্ছে লোকজন, অন্যদিকে দিনভর লেগে থাকে যানজট।
বাস থামার জন্য নির্দিষ্ট জায়গা ছাড়া অন্য কোনও জায়গা থেকে ওঠা-নামা করা অনিয়ম।
অভিযোগ রয়েছে, ট্রাফিক পুলিশকে মাসোহারা দিয়ে এভাবে সড়কে প্রতিবন্ধকতা তৈরি করে প্রতিনিয়ত যাত্রী উঠা-নামা করছে যানবাহনগুলো।
দক্ষিণ চট্টগ্রামসহ কক্সবাজার-বান্দরবান এলাকার পর্যটক ও হাজার হাজার যাত্রী প্রতিদিন এ রুটে যাতায়াত করছে। সারা দিন এই রুটে যানাবাহনের চাপ খুব বেশি থাকে। তৃতীয় কর্ণফুলী সেতুর মুখেই রয়েছে একটি টার্মিনাল। কিন্তু এ টার্মিনাল থেকে কোন যাত্রীই যাতায়াত করে না। দক্ষিণ চট্টগ্রামের গাড়িগুলো এখান থেকে ছাড়ার কথা থাকলেও তাও ছাড়া হয় না। টার্মিনালের বিষয়টি জানেনও না অনেক যাত্রী।
শনিবার সকালে সরেজমিনে দেখা যায়, তৃতীয় কর্ণফুলী সেতুর মুখে এলোমেলোভাবে দাঁড়িয়ে যাত্রী উঠা-নামা করছে বাঁশখালী, আনোয়ারা, পটিয়া, সাতকানিয়া, চন্দনাইশ, কক্সবাজার ও বান্দরবানগামী যানবাহনগুলো। ফলে পুরো সড়কটিই প্রায় বন্ধ হয়ে আছে। তৃতীয় কর্ণফুলী সেতুর মুখ থেকে রাজাখালী পর্যন্ত সৃষ্টি হয়েছে দীর্ঘ যানজটের। এসময় ট্রাফিক পুলিশকে দায়িত্বপালনে নিষ্ক্রিয় দেখা গেছে।
গুরুত্বপূর্ণ এ রুটটিতে এই ধরনের বিশৃঙ্খলার জন্য ট্রাফিক পুলিশের কর্মকর্তারা যাত্রী, চালক এবং সহকারিদের অসচেতনতাকে দায়ী করেছেন। তবে যাত্রীসহ সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, নির্দিষ্ট চাঁদার বিনিময়ে রুট পারমিট বিহীন গাড়ি নগরীতে ঢুকতে দিচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। এছাড়া সেতুর মুখে যাত্রী উঠা নামার পরও ট্রাফিক পুলিশ কোন ব্যবস্থা না নেওয়ায় যানজট লেগেই থাকে।
সেতুর মুখ থেকে নিয়মিত বাসে বাঁশখালী যান আলী এরশাদ। তিনি বাংলানিউজকে বলেন,‘কর্ণফুলী সেতু এলাকায় কোন বাস টার্মিনাল আছে এটা আমার জানা নেই। সবগুলো গাড়ি সেতুর মুখে এসে দাঁড়ায়। এখান থেকে সবাই বাস, মাইক্রোবাস ও সিএনজি অটোরিকশায় উঠে। অনেকে বহদ্দারহাট বাস টার্মিনাল থেকেও বাসে উঠে। ’
আরাকান সড়ক পরিবহন শ্রমিক ইউনিয়নের সাধারণ সম্পাদক মো. মুছা বাংলানিউজকে বলেন, ‘কর্ণফুলী সেতুর পাশেই টার্মিনাল রয়েছে। দক্ষিণ চট্টগ্রামগামী গাড়িগুলো এখান থেকে ছাড়ে। কিন্তু কিছু ছোট যানবাহন সড়ক থেকে যাত্রী তুলে নেওয়ায় যাত্রী সংকটে পড়ে বাসগুলো। ফলে বাসগুলোও সড়কে দাঁড়িয়ে যাত্রী তুলে নেয়। ’
নগর ট্রাফিক পুলিশের অতিরিক্ত কমিশনার মো. মিজানুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, ‘কর্ণফুলী সেতু এলাকায় যানবাহন নিয়ন্ত্রণে একজন সার্জেন্ট সবসময় দায়িত্ব পালন করেন। যাতে যানজটের সৃষ্টি না হয় সে চেষ্টায় চালিয়ে যাচ্ছে ট্রাফিক পুলিশ। তবে যাত্রীদেরও সচেতন হতে হবে। বাস দাঁড়ানোর জন্য নির্ধারিত জায়গা রয়েছে। যাত্রীরা সেখান থেকে উঠলেই আমাদের যানবাহন নিয়ন্ত্রণে সুবিধা হয়। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৯৪০ ঘণ্টা, জানুয়ারী ১১, ২০১৪
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর