ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নাশকতায় পূর্বাঞ্চলেই ক্ষতি ৪৬ কোটি

মো.মহিউদ্দিন, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২০২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৮, ২০১৪
নাশকতায় পূর্বাঞ্চলেই ক্ষতি ৪৬ কোটি ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম/(ফাইল ফটো)

চট্টগ্রাম: রেলপথে নাশকতা ঠেকাতে নেয়া পদক্ষেপ, অবরোধ-হরতালে শিডিউল বিপর্যয়ের কারণে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন খাতে আয় হ্রাস এবং নাশকতায় দিনে দিনে ক্ষতি বাড়ছে রেলওয়ের।    

অবরোধ-হরতালে রেলে নাশকতায় গত দুই মাসে ক্ষতি হয়েছে প্রায় অর্ধ শতকোটি টাকা।

গত দুই মাসে সরকার বিরোধী আন্দোলনে বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলেই ক্ষতি হয়েছে ৪৫ কোটি ৭০ লাখ ২৯ হাজার ৭০০ টাকা।

সরকার বিরোধী অবরোধের ক্ষয়ক্ষতির বিবরণী পর্যালোচনা করে দেখা গেছে গত নভেম্বর ও ডিসেম্বর মাসে রেলের ইঞ্চিন, বগি, রেলপথ, রেলসেতু, বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতি, সংকেত ও টেলিযোগাযোগ এবং স্টেশন ভবনে নাশকতার কারণে ক্ষতি হয়েছে ১৫ কোটি ৩ লাখ ৬৫ হাজার ৭০০টাকা।


এ দু’মাসে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন খাতে আয় কমেছে ৩০ কোটি ২২ লাখ টাকা। এছাড়া ট্রেন চালাতে ট্র্যাক পেট্রোলিং এ ব্যয় হয়েছে ৪৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।

বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলের মহাব্যবস্থাপক (জিএম) মোহাম্মদ মকবুল আহাম্মদ বাংলানিউজকে বলেন, ‘নভেম্বর মাস থেকেই রেলপথে নাশকতা শুরু হয়। এতে দিন দিন রেলের ক্ষতি বাড়ছে।

গত দুই মাসে প্রায় অর্ধশত কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। রেলওয়ে সেবা খাত হওয়াতে পরিচালনা করতে হচ্ছে। এতে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন খাতে আয় কমলেও ব্যয় বেড়েছে নিরাপত্তা খাতে। ’

জিএম বলেন, ‘হরতাল-অবরোধ সমর্থনকারীদের নাশকতায় নিয়মিত শিডিউল বিপর্যয় ঘটছে। এরমধ্যে কঠোর নিরাপত্তার মাধ্যমে ট্রেন পরিচালনা করা হচ্ছে। এতে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন কমে গেছে। ফলে এ দুই খাত থেকে আয় কমে গেছে। ’

ক্ষয়ক্ষতির বিবরণী পর্যালোচনা করে দেখা গেছে, গত বছরের নভেম্বরে ১১টি নাশকতার ঘটনায় রেলের ইঞ্চিনের ক্ষতি হয়েছে ১৯ লাখ ৭৬হাজার টাকা। ডিসেম্বরে ২১ ঘটনায় ৭ কোটি ৭১ লাখ ১৩ হাজার ৭০০টাকা।

নভেম্বরে রেলের বগিতে নাশকতায় ৬৯লাখ ৯৯ হাজার ৪০০ টাকার ক্ষতি হয়। ডিসেম্বরে এ ক্ষতি বেড়ে দাড়ায় ৪ কোটি ৭১ লাখ ৪৭ হাজারে।

নভেম্বর মাসে রেলপথে ক্ষতির পরিমাণ ৫৫ লাখ ৬৭ হাজার ৬০০টাকা। ডিসেম্বরে ৫৭ লাখ ৪৮ হাজার ৮৭৫ টাকা। নভেম্বর-ডিসেম্বরে রেলসেতু ক্ষতিগ্রস্থ হয়ে ৫২ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।

এ দুই মাসে রেলের বৈদ্যুতিক যন্ত্রপাতির ক্ষতির পরিমাণ ১১ লাখ ৯৬ হাজার ৬২৫ টাকা। পাঁচ ঘটনায় সংকেত ও টেলিযোগাযোগে যথাক্রমে সাড়ে ১৩ হাজার ও ২ লাখ ২০ হাজার টাকার ক্ষতি হয়।
 
এ ছাড়া রেলওয়ের পূর্বাঞ্চলের আওতাধীন বিভিন্ন স্টেশন ভবনে নাশকতার ঘটনায় ৪৩ লাখ ৩১ হাজার টাকার ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে রেলওয়ে।

এদিকে যাত্রী ও পণ্য পরিবহন রেলে আয়ের অন্যতম বড় খাত হলেও গত দুই মাসে এ দুই খাতে উল্লেখযোগ্য হারে আয় কমেছে।

কর্মকর্তারা জানান, নিয়মিত শিডিউল বিপর্যয়, যাত্রা বাতিল, ঝুঁকি নিয়ে পণ্য পরিবহনে ব্যবসায়ীদের আগ্রহ না থাকায় এ খাতে আয় কমেছে।

বিবরণীতে দেখা যায়, গত নভেম্বর মাসে বাংলাদেশ রেলওয়ে পূর্বাঞ্চলে যাত্রী খাতে আয় কমেছে তিন কোটি ৩৬ লাখ টাকা। ডিসেম্বর মাসে ক্ষতি বেড়ে দাঁড়ায় ২১ কোটি ৯২ লাখ টাকায়।

নভেম্বরে পণ্য পরিবহন খাতে আয় কমেছে ১ কোটি ৪৪ লাখ টাকা। ডিসেম্বরে তা বেড়ে ৩ কোটি ৫০ লাখে দাঁড়ায়।

নাশকতায় হতাহত ১৯:
গত দুই মাসে নাশকতার ঘটনায় ১৮ জন আহত হয়েছে। এরমধ্যে ১৭ জন রেল কর্মচারী এবং একজন যাত্রী।

নাশকতার ঘটনায় রেলওয়ে নিরাপত্তা বাহিনীর একজন সদস্য নিহত হন।

অতিরিক্ত ব্যয় ৪৪ লাখ:
নাশকতার কারণে বড় ধরণের আর্থিক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে রেলওয়ে। এর সঙ্গে যুক্ত হয়েছে রেলের নিরাপত্তা ব্যয়ও।

রেল পরিচালনা করতে গত দুই মাসে বাংলাদেশ রেলওয়ের অতিরিক্ত ব্যয় হয়েছে ৪৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা।

পূর্বাঞ্চলের জিএম বলেন,‘নাশকতা ঠেকাতে রেল পরিচালনায় এডভান্স পাইলট পদ্ধতি অনুসরণ করা হচ্ছে। এতে একটি যাত্রীবাহী ট্রেন যাওয়ার আগে একটি ইঞ্জিন যাবে। সেটি ক্লিয়ারেন্স দিলে যাত্রীবাহী ট্রেনটি ছেড়ে যাচ্ছে। ’

এতে গত দুই মাসে আমাদের অতিরিক্ত ৪৪ লাখ ৬৪ হাজার টাকা ব্যয় হয়েছে বলে তিনি জানান।

বাংলাদেশ সময়: ২১৫৯ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৮, ২০১৪
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।