ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আ’লীগ সাতটি, জাপা-১, তরিকত-১ বেসরকারিভাবে জয়ী

বাংলানিউজ টিম, চট্টগ্রাম ব্যুরো | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২২৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৪
আ’লীগ সাতটি, জাপা-১, তরিকত-১ বেসরকারিভাবে জয়ী ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনে চট্টগ্রামের নয়টি আসনের মধ্যে সাতটিতে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী ও জাতীয় পার্টি এবং তরিকত ফেডারেশনের একজন করে প্রার্থী নির্বাচিত হয়েছেন।

রোববার জেলার এবং নগরীর আসনগুলোর ফলাফল ঘোষণা শেষে তাদেরকে বেসরকারীভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়।



এমএ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়ামে স্থাপিত অস্থায়ী কন্ট্রোল রুমে নগরীর তিনটি আসনের ফলাফল ঘোষণা করেছেন বিভাগীয় কমিশনার ও রিটার্নিং অফিসার মোহাম্মদ আবদুল্লাহ।

অন্যদিকে জেলার ছয়টি আসনের ফলাফল চট্টগ্রাম জেলা প্রশাসক কার্যালয় মিলনায়তনে জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসার আবদুল মান্নান নির্বাচনের ফলাফল ঘোষণা করেছেন।


ফলাফল ঘোষণার সময় জেলা প্রশাসক আবদুল মান্নান বলেন,‘ জেলার ছয়টি আসনে গড়ে ৫৪ দশমিক ১৬ শতাংশ ভোটার তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন। নির্বাচনে কেন্দ্রগুলোর তথ্য অনুযায়ী প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী থেকে বিপুল ভোটে এগিয়ে থাকায় ছয় প্রার্থীকে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হলো। ’

চট্টগ্রাম-২ আসনে (ফটিকছড়ি) নৌকা প্রতীকে তরিকত ফেডারেশনের চেয়ারম্যান নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী ১৩৩ টি কেন্দ্রে ১ লাখ ২৫ হাজার ৩৫১ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার প্রতিদ্বন্দ্বী আওয়ামী লীগের বিদ্রোহী প্রার্থী ড. মাহমুদ হাসান পেয়েছেন ১২ হাজার ৪৩৩ এবং স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. নাজিম উদ্দিন ৭৩১ ভোট পেয়েছেন।

ওই আসনে শতকরা ৪৩ দশমিক ০৭ শতাংশ ভোটগ্রহণ করা হয়েছে। এরমধ্যে নজিবুল বশর মাইজভাণ্ডারী তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর চেয়ে ১ লাখ ১২ হাজার ৯১৮ ভোট বেশি পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

চট্টগ্রাম-৩ আসনে (সন্দ্বীপ) ৭৯ টি কেন্দ্রে ১লাখ ১১হাজার ৭৪৭ ভোট পেয়ে এগিয়ে জয়ী হয়েছেন আওয়ামী লীগের মাহফুজুর রহমান মিতা। অন্যদিকে তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী  জাতীয় পার্টির এম এ ছালাম পেয়েছেন ৩ হাজার ৪৬৬ ভোট এবং জাসদের নূরুল আক্তার ৮৭৪ ভোট পেয়েছেন।

এরমধ্যে আওয়ামী লীগের মিতা তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর থেকে ১ লাখ ৮হাজার ২৭৭ ভোট বেশি পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন। ওই আসনে ভোট পড়েছে শতকরা ৬৬ শতাংশ।

চট্টগ্রাম-১২ (পটিয়া) আওয়ামী লীগের সামশুল হক চৌধুরী মোট ৯৯ কেন্দ্রে ১ লাখ ২৮হাজার ২১৪ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির সিরাজুল ইসলাম চৌধুরী পেয়েছেন ১০ হাজার ১৯৭ ভোট। নির্বাচনে এ আসনে শতকরা ৬৬ শতাংশ ভোট পড়েছে।

আওয়ামী লীগের প্রার্থী সামশুল হক চৌধুরী তার প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী সিরাজুল ইসলামের চেয়ে ১ লাখ ১৮হাজার ১৭ ভোট বেশি পেয়ে বেসরকারিভাবে নির্বাচিত হয়েছেন।

চট্টগ্রাম-১৩ (আনোয়ারা-পশ্চিম পটিয়া) আসনের ৯৭ কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের সাইফুজ্জামান চৌধুরী জাবেদ ভোট পেয়েছেন ১ লাখ ৭৮ হাজার ৯৮৫। অন্যদিকে তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাতীয় পার্টির তপন চক্রবর্তী পেয়েছেন ৫হাজার ৪১৮ ভোট ও বিএনএফ থেকে নারায়ণ রক্ষিত ১হাজার ৯৫৪ ভোট পেয়েছেন।

এই আসনে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী থেকে ১লাখ ৭৩ হাজার ৫৬৭ ভোটের ব্যবধানে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন জাভেদ। এ আসনে শতকরা ৬৯ শতাংশ ভোটার ভোটে অংশ নিয়েছেন।

চট্টগ্রাম-১৫ আসনে (সাতকানিয়া-লোহাগাড়া) মোট কেন্দ্রের সংখ্যা ১৩৮টি। এরমধ্যে ভোটের আগের রাতে সহিংসতার ঘটনায় দুটি কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত করায় ১৩৬টিতে ভোট দিতে পেরেছেন ভোটাররা।

এ আসনে নৌকা প্রতীকে আওয়ামী লীগ থেকে ড. আবু রেজা মুহাম্মদ নেজামউদ্দিন নদভি পেয়েছেন ১লাখ ১হাজার ৮৬৬ ভোট। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী বিএনএফ‘র জয়নাল আবেদিন কাদেরী ৪হাজার ৪৪৮ ভোট পেয়েছেন। ভোটগ্রহণের হার শতকরা ৩৩শতাংশ।

রির্টানিং অফিসার আবদুল মান্নান বলেন,‘স্থগিত হওয়া দুই কেন্দ্রের মোট ভোটার সংখ্যা ৫ হাজার ৭৮২। বিজয়ী প্রার্থীর সঙ্গে নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর ভোটের ব্যবধান অনেক বেশি। ওই দুই কেন্দ্রের ভোটেও প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থী কাছাকাছি যেতে পারবেন না। তাই এ দুই কেন্দ্রে আর ভোটগ্রহণ হবে না।

প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর থেকে ৯৭ হাজার ৪১৮ ভোট বেশি পাওয়ায় নদভিকে বেসরকারিভাবে বিজয়ী ঘোষণা করা হয়েছে।  

এদিকে নগরীর তিনটি আসনের ফলাফল এম এ আজিজ স্টেডিয়াম সংলগ্ন জিমনেসিয়ামে স্থাপিত অস্থায়ী কন্ট্রোল রুম থেকে ঘোষণা করা হয়েছে। ওই ফলাফল ঘোষণায় রিটার্নিং অফিসার ও বিভাগীয় কমিশনার মোহাম্মদ আব্দুল্লাহ বলেন,‘বেসরকারিভাবে তিনটি আসনের প্রার্থীদের বেসরকারিভাবে নির্বাচিত ঘোষণা করা হয়েছে। ’

একটি জোটের অংশ না নেয়ায় এবং প্রতিহতের ঘোষণার মধ্যেও সুষ্ঠুভাবে নিবর্অচনের ভোটগ্রহণ সম্পন্ন হয়েছে বলেও তিনি দাবি করেন।

সাংবাদিকদের এক প্রশ্নের জবাবে বিভাগীয় কমিশনার মো. আবদুল্লাহ বলেন,‘যেহেতু কোন কেন্দ্রে ভোটগ্রহণ স্থগিত হয়নি বা বাধাগ্রস্ত হয়নি, সুতরাং কোন সহিংসতার ঘটনাও এসব আসনে ঘটেনি। ’

চট্টগ্রাম-৪ (সীতাকুণ্ড-নগরীর দুটি ওয়ার্ড) আসনে আওয়ামী লীগের ‍দিদারুল আলম ১০৩টি কেন্দ্রে ১লাখ ৫৩হাজার ৮১৫ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন। তার নিকটতম প্রতিদ্বন্দ্বী জাসদের আ ফ ম মফিজুর রহমান পেয়েছেন ৪হাজার ৪৬২ ভোট এবং ওয়ার্কার্স পার্টির দিদারুল আলম চৌধুরী পেয়েছেন ২হাজার ১৩৬ ভোট।

এছাড়া এই আসনে জেপি (মঞ্জু) থেকে অ আ ম হায়দার আলী চৌধুরী ১হাজার ১৯২ভোট পেয়েছেন।

চট্টগ্রাম-৯ (কোতয়ালী-বাকলিয়া) আসনের ১৪৩টি কেন্দ্রে জাতীয় পার্টির প্রার্থী জিয়াউদ্দিন আহমেদ বাবলু ৭৯ হাজার ৭৭৯ ভোট পেয়ে জয়ী হয়েছেন।  

তার নিকটতম প্রার্থী ওয়ার্কার্স পার্টির অ্যাডভোকেট আবু হানিফ পেয়েছেন ৩হাজার ৫৯৯ ভোট। বিএনএফ’র অধ্যাপক আরিফ মঈনুদ্দিন ১হাজার ৭৬২ ভোট পেয়েছেন ও ন্যাপের আলী আহমেদ নাজির পেয়েছেন ১হাজার ৬৪১ ভোট।

চট্টগ্রাম-১১ (বন্দর-পতেঙ্গা) আসনের ১৪২টি কেন্দ্রে আওয়ামী লীগের এম এ লতিফ ৬৪ হাজার ৩২ভোট পেয়ে বেসরকারিভাবে জয়ী হয়েছেন।  

ওই আসনে তার নিকটতম প্রার্থী জাতীয় পার্টির কামাল উদ্দিন চৌধুরী ১ হাজার ৯৯০ ভোট পেয়েছেন এবং জাতীয় সমাজতান্ত্রিক দলের (জাসদ) মো. জসীম উদ্দিন বাবুল পেয়েছেন ৫৬৬ ভোট।

বাংলাদেশ সময়: ২২৪২ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৪
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।