ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

নির্বাচন পরবর্তী নিরাপত্তার দাবি নাগরিক পর্যবেক্ষণ কমিটির

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৩৩ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৪
নির্বাচন পরবর্তী নিরাপত্তার দাবি নাগরিক পর্যবেক্ষণ কমিটির ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: দশম জাতীয় সংসদ নির্বাচনের পর নির্বাচন পরবর্তী নাগরিক নিরাপত্তা দাবি জানিয়েছে নাগরিক পর্যবেক্ষণ কমিটি। নির্বাচন পর্যবেক্ষণের প্রাথমিক রিপোর্ট প্রকাশ অনুষ্ঠানে দেশের মানুষের সামগ্রিক নিরাপত্তা জোরদারেও দাবি জানানো হয়।



ভোটগ্রহণ শেষে রোববার সন্ধ্যায় চট্টগ্রাম প্রেসক্লাবে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব দাবি জানানো হয়।

সংবাদ সম্মেলনে নির্বাচন পর্যবেক্ষণের প্রাথমিক প্রতিবেদন তুলে ধরে বলা হয়,‘কয়েকটি কেন্দ্রে নির্বাচনকালীন সহিংসতার চিত্র দেখে গেছে।
সেসব এলাকায় সাধারণ মানুষের মনে চরম আতঙ্ক, উদ্বেগ ও অসন্তোষ ভর করেছে। ওইসব এলাকার বেশির ভাগ মানুষই নির্বাচন পরবর্তী সহিংসতার আশঙ্কা করেছেন। তাদের সামগ্রিক নিরাপত্তা নিশ্চিতে প্রশাসনের আরো কঠোর হওয়ার দাবি জানিয়েছেন তারা। ’

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য পাঠ করেন পর্যবেক্ষণ কমিটির সদস্য সচিব পেশাজীবী নেতা সাংবাদিক রিয়াজ হায়দার চৌধুরী।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন নির্বাচন পর্যবেক্ষণ কমিটির আহবায়ক মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক গবেষক ডা. মাহফুজুর রহমান, চট্টগ্রাম প্রেসক্লাব সাধারণ সম্পাদক মহসিন চৌধুরী, সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোট চট্টগ্রামের সদস্য সচিব বিশিষ্ট নাট্য নির্দেশক আহমেদ ইকবাল হায়দার, পেশাজীবী নেতা ও সাংস্কৃতিক সংগঠক আবৃত্তিকার অঞ্চল চৌধুরী, সাংবাদিক গবেষক জামাল উদ্দিন, মুক্তিযোদ্ধা সংগঠক দেওয়ান মাকসুদ আহমেদ, সাবেক কাউন্সিলর আলহাজ জামাল হোসেন, এডভোকেট সাইফুদ্দিন মোহাম্মদ খালেদ।

এতে বলা হয়, ‘মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী নানা শ্রেণী পেশার মানুষ মনে করছেন- সাংবিধানিক গণতান্ত্রিক উত্তরণে দশম জাতীয় সংসদ যেমন অনিবার্য ছিল তেমনি মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় অর্জিত মানুষের সাংবিধানিক অধিকার হিসেবে জননিরাপত্তা নিশ্চিত করাও রাষ্ট্রেরই দায়িত্ব। ’

‘এক্ষেত্রে মুক্তিযুদ্ধের সপক্ষের সকল রাজনৈতিক, পেশাজীবী, সামাজিক, সাংস্কৃতিক সংগঠনের ঐক্যবদ্ধতাই পারে মৌলবাদী অপশক্তি ও তাদের প্রণোদনাকারী রাজনৈতিক জাতীয় এবং আন্তর্জাতিক শক্তির বিরুদ্ধে জনতার অধিকার নিশ্চিত করতে। ’

বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রের চিত্র তুলে ধরে সংবাদ সম্মেলনে বলা হয়,‘ব্যাপক উদ্বেগ-আতঙ্ক ও নির্বাচন বয়কটকারী প্রধান বিরোধী জোটের বিএনপি-জামায়াত নেতা-কর্মীদের কয়েকটি কেন্দ্রের ব্যালেট বাক্স ছিনতাই, বোমা বিষ্ফোরণ এবং কেন্দ্রে অগ্নি-সংযোগের কারণে এবারের ভোট চিত্র ছিল অন্যরকম। ’

প্রতিবেদনে জানানো হয়, চট্টগ্রাম বিভাগের ১১টি জেলার মধ্যে ১০ জেলায় এবার জাতীয় নির্বাচন সম্পন্ন হয়েছে। অন্য জেলা (চাঁদপুরে) বিনাপ্রতিদ্বন্ধিতায় নির্বাচিত হওয়ায় সেখানে কোন আসনেই নির্বাচন হয়নি।

চট্টগ্রাম জেলার যে ৯টি আসনে নির্বাচন হয়েছে, এরমধ্যে নগরীর ২টি আসনেই প্রায় শান্তিপূর্ণ ভোট হয়েছে।

রিপোর্টে বলা হয়, জামায়াত-শিবির অধ্যুষিত নগরীর চট্টগ্রাম কলেজ এলাকার মাত্র একটি কেন্দ্রেই ককটেল বিস্ফোরণের ঘটনা ঘটেছে। কক্সবাজার ও পার্বত্যজেলায় ভোটার উপস্থিতি কম হলেও উদ্বেগ আতঙ্কের তুলনায় অপেক্ষাকৃত কম অপ্রীতিকর ঘটনা ঘটেছে।

চট্টগ্রামের সাতকানিয়া-লোহাগাড়া আসনের বিভিন্ন কেন্দ্রের বর্ণনা দিয়ে বলা হয়,‘লোহাগাড়ায় সংঘর্ষ ব্যালেট ছিনতাই কেন্দ্রে অগ্নিসংযোগ করে এক ভীতিকর অবস্থা সৃষ্টি করে জামায়াত-শিবির। তবুও আসনটিতে শেষ পর্যন্ত বড় কোন অঘটন ছাড়াই ভোট সম্পন্ন হয়েছে। নগরে অনেকটা ঝুঁকিহীনভাবেই স্বতঃস্ফূর্ত ভোট হয়েছে বন্দর-পতেঙ্গা আসনেও।

ব্যাপক আতঙ্ক-উদ্বেগ ও ভীতি সত্ত্বেও এবং নির্বাচনকালে ত্রাস সৃষ্টির চেষ্টার মধ্যেও সাধারণ মানুষের ভোটদানে আগ্রহ লক্ষ্যনীয় ছিল বলে প্রতিবেদনের সামগ্রিক পর্যালোচনায় বলা হয়েছে।

এতে বলা হয়,‘আতঙ্ক বা ত্রাস সৃষ্টির কারণে অনেক ভোটার ভোট দিতে আগ্রহ হারিয়েছেন, তবে ভোট সম্পাদনে সাধারণ নাগরিক ও প্রশাসনের সদিচ্ছার কমতি ছিলনা। ’

‘চট্টগ্রাম বিভাগের মধ্যে নির্বাচনের ভোটগ্রহণ চলাকালে সাতকানিয়ায় একজন শিবির কর্মী, লক্ষ্মীপুরে একজন শিবির কর্মী এবং ফেনীতে যুবদল ও ছাত্রদলের দুইকর্মীসহ মোট ৪জন নিহত হয়েছেন। ’

শীতের প্রভাব এবং অত্যধিক প্রতিদ্বন্দী না থাকায় ভোটকেন্দ্রগুলোতে সকাল থেকে উপস্থিতি তুলনামূলক কম থাকলেও বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে ভোটারদের উপস্থিতি লক্ষ্যনীয় ছিল বলেও রিপোর্টে উল্লেখ করা হয়।

বাংলাদেশ সময়: ২১৩৩ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৪
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।