ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

সাতকানিয়া ঢেমশা বড়ুয়া পাড়া কেন্দ্রে জামাত-শিবিরের তান্ডব

রমেন দাশগুপ্ত, স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬২৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ৫, ২০১৪
সাতকানিয়া ঢেমশা বড়ুয়া পাড়া কেন্দ্রে জামাত-শিবিরের তান্ডব ছবি: সোহেল সরোয়ার / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

সাতকানিয়া থেকে: উপজেলার ঢেমশা ইউনিয়নের উত্তর ঢেমশা সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে প্রিজাইডিং অফিসার ও পুলিশসহ ১০জনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়েছে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা। এ সময় তারা ওই কেন্দ্রে আগুন ধরিয়ে দেয়াসহ ব্যালট বাক্স ছিনতাই করেছে।



রোববার দুপুরে ঢেমশা ইউনিয়নের উত্তর ঢেমশা বড়ুয়া সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে এ তাণ্ডব চালায় জামায়াত-শিবির।

আহতরা হলেন, সাতকানিয়া সরকারি কলেজের পদার্থ বিজ্ঞান বিভাগের সহকারী অধ্যাপক ও প্রিজাইডিং অফিসার জামাল উদ্দিন, সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নাসিমুল ইসলাম, অনিল বণিক, পুলিশের এসআই তাজুল হক এবং কনস্টেবল নিখীল।


shatkaniya-01প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ভোটগ্রহণ চলাকালে চারদিক ঘিরে অতর্কিতভাবে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা ওই কেন্দ্রে হামলা চালায়। এসময় ওই কেন্দ্রে আইন-শৃঙ্খলা বাহিনীর উপস্থিতি কম থাকায় তারা কেন্দ্রের ভেতরে প্রবেশ করে প্রিজাইডিং অফিসার জামাল উদ্দিনকে এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে এবং তার দুই হাত থেতলে দেয়।

এছাড়া সহকারী প্রিজাইডিং অফিসার নাজমুল ইসলাম এবং অনিল বণিককেও এলোপাতাড়ি কুপিয়ে জখম করে। এসময় পুলিশ বাধা দিতে গেলে দুই পুলিশ সদস্যের উপর শিবিরের ক্যাডাররা হামলা চালায়।

হামলায় আহত সাতকানিয়া থানার উপ-পরিদর্শক তাজুল ইসলাম বাংলানিউজকে জানান, অতর্কিত ভাবে কেন্দ্রের চারদিকে হামলা চালিয়ে প্রিজাইডিং অফিসারসহ সহকারী প্রিজাইডিং অফিসারকে কুপিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এসময় তারা ব্যালট বাক্সসহ নির্বাচনের সরঞ্জামাদি ছিনিয়ে নেয়।

এছাড়া কেন্দ্রের বিভিন্ন টেবিল-চেয়ার স্কুলের পাশের ডোবায় ফেলে দেয়। তাদের বাধা দিতে গেলে দুই পুলিশ সদস্যও আহত হয়েছেন বলে তিনি জানান।

তিনি বলেন,‘আহতদের হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে। ’

এদিকে সাতকানিয়া ও লোহাগাড়ার বিভিন্ন স্থানে মহাসড়কসহ অন্যান্য সড়কে শনিবার রাত থেকে গাছ ফেলে রাখায় ঘটনাস্থলে র‌্যাব, বিজিবিসহ সেনাবাহিনী পৌঁছাতে দেরি হয়। এসুযোগে উত্তর ঢেমশার ওই কেন্দ্রে তাণ্ডব ঘটিয়ে পালিয়ে যায় জামায়াত-শিবির ক্যাডাররা।  

ওই এলাকায় বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত হলেও থমথমে অবস্থা বিরাজ করছে।

shatkaniya-02র‌্যাবের এএসপি আমিরুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন,‘বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত আছে। চারটা পর্যন্ত ভোটগ্রহণ চলবে। ভোটাররা নিরাপদে ভোট দিতে পারবেন। ’

এই কেন্দ্রের পোলিং অফিসার শিপ্রা নন্দী বাংলানিউজকে জানান, এখানে ১হাজার ৭১৭ জন ভোটার রয়েছে। এরমধ্যে তাণ্ডবের আগমুহূর্ত পর্যন্ত ৩০ থেকে ৪০ ভোটার ভোট দিয়েছেন।

এদিকে স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, নির্বাচনের আগে থেকেই তাদের বিভিন্নভাবে হুমকি-ধমকি দিয়ে আসছে জামায়াত-শিবিরের ক্যাডাররা।

ওই এলাকার বাসিন্দা টিটু বড়ুয়া বাংলানিউজকে বলেন,‘আমাদের পাড়ায় ৭শ’ ভোট আছে। নির্বাচনের আগেই আমাদের বিভিন্ন হুমকি দেয়া হয়েছে। আমরা যাতে কেন্দ্রে যেতে না পারি সেজন্য এ কেন্দ্রে হামলা চালানো হয়েছে। ’

এদিকে এ ঘটনা পর সেখানে জনশূন্য হয়ে পড়েছে।

প্রসঙ্গত, সাতকানিয়ায় শনিবার থেকে বিভিন্ন ভোট কেন্দ্রে আগুন দেয়াসহ ককটেল বিস্ফোরণ করেছে জামায়াত-শিবির। এছাড়াও চরতি ইউনিয়নের দুরদরি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে পাশের পাহাড় থেকে ককটেল-গুলি ছুঁড়ে আতঙ্ক সৃষ্টির চেষ্টা করে।

এর আগে সহিংসতার কারণে সাতকানিয়ার দুটি কেন্দ্রের ভোটগ্রহণ স্থগিত করা হয়।

বাংলাদেশ সময: ১৫ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৫, ২০১৪
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর।

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।