চট্টগ্রাম: আগামী ৯ জানুয়ারি নতুন স্কেলে মজুরি দেয়ার আশ্বাসে শান্ত হয়েছেন চট্টগ্রাম রপ্তানি প্রক্রিয়াজাতকরণ অঞ্চলের (সিইপিজেড)সেকশন-সেভেন নামের দু’টি তৈরি পোশাক কারখানার শ্রমিকরা। এর ফলে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা পর উত্তেজিত শ্রমিকরা কারখানার সামনে থেকে সরে গেছেন।
শনিবার সকাল থেকে কারখানা দু’টিতে কয়েক দফা হামলা, ভাংচুর এবং পুলিশের সঙ্গে সঙ্গে দফায় দফায় ধাওয়া পাল্টা ধাওয়ার পর দুপুর ১টার দিকে পুলিশ ও বেপজা কর্তৃপক্ষের মধ্যস্থতায় বৈঠকে বসের কারখানার মালিক ও শ্রমিক প্রতিনিধিরা।
চট্টগ্রামের শিল্প পুলিশের গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক আরিফুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, বৈঠকে মালিকের প্রতিনিধি ৯ জানুয়ারি নতুন স্কেলে বেতন দেবেন বলে ঘোষণা দিয়েছেন।
বৈঠকে সিইপিজেডের মহাব্যবস্থাপক এস এম আব্দুর রশিদ, চট্টগ্রামের শিল্প পুলিশের পরিচালক এস কে এম তোফায়েল হাছান, গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক আরিফুর রহমান, নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর) সাইফুল করিম, সেকশন-সেভেন গার্মেণ্টসের চিফ অপারেটিং অফিসার মোহাম্মদ সেলিম এবং ১০ জন শ্রমিক প্রতিনিধি।
বৈঠকে শিল্প পুলিশের পক্ষ থেকে সিইপিজেডের ভেতরে কেউ গুজব কিংবা অবাঞ্চিত লিফলেট ছড়ালে কঠোর পদক্ষেপ নেয়ার কথা বলেন পরিদর্শক আরিফুর রহমান।
বৈঠক শেষে সিদ্ধান্ত উত্তেজিত শ্রমিকদের জানালে দুপুর ২টার দিকে পরিস্থিতি পুরোপুরি স্বাভাবিক হয়ে গেছে বলে জানান আরিফুর রহমান।
এর আগে শনিবার সকাল ৯টার দিকে সিইপিজেডের চার নম্বর সড়কে গার্মেণ্টস কারখানা দু’টিতে একইসঙ্গে উত্তেজনা দেখা দেয়।
শিল্প পুলিশের গোয়েন্দা শাখার পরিদর্শক আরিফুর রহমান বাংলানিউজকে জানান, জানুয়ারিতেও পুরনো স্কেলে বেতন দেয়া হবে জানতে পেরে সেকশন-সেভেন গার্মেণ্টসের একটি কারখানার শ্রমিকদের মধ্যে উত্তেজনার সৃষ্টি হয়। এসময় শ্রমিকরা কর্মকর্তাদের কাছে মজুরির নতুন তালিকা দেখতে চান। এ নিয়ে কর্মকর্তাদের সঙ্গে কথা কাটাকাটির এক পর্যায়ে শ্রমিকরা কারখানা ছেড়ে বেরিয়ে যান। এ খবর সেকশন-সেভেনের আরেকটি কারখানায় ছড়িয়ে পড়লে সেখানকার শ্রমিকরাও বেরিয়ে যান।
আরিফুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, প্রায় ৮-১০ হাজার শ্রমিক একসঙ্গে বেরিয়ে রাস্তায় অবস্থান নেয়। এসময় ভেতর থেকে ফটক বন্ধ করে দেয়া হয়। উত্তেজিত শ্রমিকরা ইট, পাটকেল ছুঁড়ে কারখানার দু’টির সামনের কাঁচ ভাংচুর করে। এরপর শ্রমিকরা কারখানার ভেতরে ঢুকতে চাইলেও আমাদের বাধায় ঢুকতে পারেনি।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, কারখানায় ঢুকতে বাধা পেয়ে একটি কারখানার সামনে শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাটকেল ছুঁড়তে থাকে। এসময় সিইপিজেডের ভেতরে থাকা যানবাহন লক্ষ্য করেও তারা বড় বড় ইটের টুকরা ছুঁড়তে থাকে। পরে সেখানে যানবাহন চলাচল বন্ধ করে দেয়া হয়।
নগর পুলিশের উপ-কমিশনার (বন্দর) সাইফুল করিম বাংলানিউজকে বলেন, উত্তেজিত শ্রমিকরা পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট, পাটকেল ছুঁড়তে থাকলে পুলিশ শটগানের কয়েক রাউণ্ড গুলি ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দিয়েছে।
পরিদর্শক আরিফুর রহমান বাংলানিউজকে বলেন, আমরা প্রথম দফায় ঘণ্টাখানেকের মধ্যেই পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে এনেছিলাম। কিন্তু শ্রমিকরা আধাঘণ্টার মধ্যেই আবারও বহিরাগত নিয়ে জড়ো হয়ে পুলিশের উপর হামলা শুরু করে। পুলিশ আবারও শটগানের গুলি ছুঁড়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়।
শ্রমিকদের হামলায় শিল্প পুলিশের সাত সদস্য আহত হয়েছে বলেও আরিফুর রহমান দাবি করেছেন।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৪৫ ঘণ্টা, জানুয়ারি ০৪, ২০১৪
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর