ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

দুঃসময়ে সেনাবাহিনী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৯২৩ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৩
দুঃসময়ে সেনাবাহিনী মানুষের পাশে দাঁড়িয়েছে ছবি: বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

চট্টগ্রাম: দেশের সকল প্রাকৃতিক দূর্যোগ ও দুঃসময়ে বরাবরই বাংলাদেশ সেনাবাহিনী বিপন্ন মানুষের পাশে এসে দাঁড়িয়েছে বলে মন্তব্য করেছেন রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ। তিনি বলেন, সেনাবাহিনীর সদস্যরা এ দেশের জনগনেরই অবিচ্ছেদ্য অংশ।

তাই সেনাবাহিনীর সদস্যরা আপামর জনগণের সুখ-দুঃখ, হাসি-কান্নার সমান অংশীদার।

মঙ্গলবার চট্টগ্রামের ভাটিয়ারির বাংলাদেশ মিলিটারি একাডেমিতে ৬৯তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্স এবং ৪০তম বিএমএ স্পেশাল কোর্সের ক্যাডেটদের কমিশনপ্রাপ্তি উপলক্ষে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে রাষ্ট্রপতি এসব কথা বলেন।


দেশের প্রাকৃতিক দুর্যোগ ও দুঃসময়ে সেনাবাহিনীর অবদানের কথা উল্লেখ করে রাষ্ট্রপতি অ্যাডভোকেট আবদুল হামিদ বলেন, ‘পার্বত্যঞ্চলে শান্তি প্রতিষ্ঠার জন্য ১৯৯৭ সালে স্বাক্ষরিত শান্তি চুক্তি বাস্তবায়নে সেনাবাহিনী অগ্রণী ভূমিকা রেখেছে। এছাড়াও এ বাহিনী দুর্গম পার্বত্য এলাকায় সড়ক ও অবকাঠামো নির্মাণ, ঢাকার জলাবদ্ধতা ও যানজট নিরসন, হাতির ঝিল প্রকল্প বাস্তবায়ন ও ফ্লাইওভার নির্মাণ এবং ভোটার তালিকা ও মেশিন রিডেবল পাসপোর্ট প্রস্তুতকরণের ক্ষেত্রেও অসামান্য দক্ষতা ও নৈপুণ্যের স্বাক্ষর রেখেছে। যমুনা সেতুর নিরাপত্তা রক্ষার দায়িত্বে নিয়োজিত রয়েছে ৯৮ কম্পোজিট ব্রিগেড। এরই সাথে সামঞ্জস্য রেখে জনগণের বহুল আকাঙ্ক্ষিত পদ্মা সেতুর সার্বিক নিরাপত্তা ও নির্মাণ কাজ তদারকির জন্য ইতিমধ্যে উদ্বোধন করা হয়েছে ৯৯ কম্পোজিট ব্রিগেড। ’

রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, ‘বর্তমান বিশ্বে বাংলাদেশ একটি ‍প্রতিশ্রুতিশীল, উন্নয়নকামী এবং শান্তি প্রিয় দেশ হিসেবে পরিচিত। জাতিসংঘ শান্তিরক্ষা মিশনে সর্বাধিক শান্তিরক্ষী নিয়োগের মাধ্যমে আমাদের দেশ বিশ্ব শান্তি রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখে চলেছে। সেনাবাহিনী দেশে ও বিদেশে অর্পিত দায়িত্ব পালনে দক্ষতা ও পেশাদারিত্বের স্বাক্ষর রাখছে। সেনাবাহিনীর এ সুনামকে অক্ষুণ্ন রেখে উত্তরোত্তর আরও উন্নতির অভীষ্ট লক্ষ্যের দিকে এগিয়ে নিতে হবে। ’

নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্য রাষ্ট্রপতি আবদুল হামিদ বলেন, ‘আজকের দিনটি তোমাদের জীবনে অত্যন্ত আনন্দের এবং খুবই গুরুত্বপূর্ণ। আনন্দের এ কারণে যে, চৌকস ও আত্মবিশ্বাসী কর্মকর্তা হিসেবে তোমরা আজ বৃহত্তর কর্মজীবনে প্রবেশ করতে যাচ্ছো। আর গুরুত্বপুর্ণ এ কারণে যে, তোমাদের উপর ন্যস্ত হচ্ছে দেশ মাতৃকার মহান স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষার পবিত্র দায়িত্ব। এ দায়িত্ব পালনে তোমাদের সজাগ ও সদা প্রস্তুত থাকতে হবে। শেষ রক্তবিন্দু দিয়ে হলেও দেশের স্বাধীনতা ও সার্বভৌমত্ব রক্ষা করা হবে তোমাদের জীবনের প্রথম ও প্রধান ব্রত। তোমরা সর্বদা নিঃস্বার্থভাবে দেশ ও জনগণের সেবা করবে। এ কাজে কখনই পিছপা হবে না, আমার দোয়া ও শুভ কামনা সর্বদা তোমাদের জন্য অব্যাহত থাকবে। ’

এর আগে রাষ্ট্রপতি কুচকাওয়াজ পরিদর্শন ও সালাম গ্রহণ করেন। এ সময় সেনাবাহিনীর প্রধান জেনারেল ইকবাল করিম ভূইয়া উপস্থিত ছিলেন।

এছাড়া কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে স্থানীয় কমান্ডার ও ২৪ পদাতিক ডিভিশনের জেনারেল অফিসার কমান্ডিং মেজর জেনারেল সাব্বির আহমেদ এবং বিএমএ কমান্ড্যান্ট মেজর জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর কবির তালুকদারসহ উচ্চপদস্ত সামরিক ও বেসামরিক কর্মকর্তা, ঢাকাস্থ বৈদেশিক মিশনের কূটনীতিগণ এবং সদ্য কমিশনপ্রাপ্ত কর্মকর্তাদের পিতা-মাতা ও অভিভাবকগণ উপস্থিত ছিলেন।

ব্যাটালিয়ন সিনিয়র আন্ডার অফিসার মো. খোরশেদ হাসান ৬৯তম বিএমএ দীর্ঘমেয়াদী কোর্সে সেরা চৌকস ক্যাডেট বিবেচিত হন এবং `সোর্ড অব অনার` লাভ করেন। অন্যদিকে সামরিক বিষয়ে অনন্য কৃতিত্বের জন্য তিনি `সেনাবাহিনী প্রধানের স্বর্ণপদক` লাভ করেন। বিভিন্ন আন্তঃকোম্পানি প্রতিযোগিতায় চ্যাম্পিয়ন হওয়ায় জাহাঙ্গীর কোম্পানিকে শীতকালীন টার্মের জন্য `বিএমএ পতাকা` প্রদান করা হয়।

কুচকাওয়াজের মাধ্যমে মোট ১৫৮ জন ক্যাডেট কমিশন লাভ করেন। এর মধ্যে ৬৯তম বিএমএ দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সে ১০১ জন পুরুষ ও ৫জন মহিলা এবং ৪০তম বিএমএ স্পেশাল কোর্সে ১০জন পুরুষ ও ২জন মহিলা বাংলাদেশ সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। এছাড়া ৬৯ তম বিএমএ দীর্ঘ মেয়াদী কোর্সে ৯ জন এবং বিএমএ সংক্ষিপ্ত কোর্সে ৩০ জন ফিলিস্তিনি ক্যাডেট ফিলিস্তিন সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন। নেপালী একজন ক্যাডেট নেপালিজ সেনাবাহিনীতে কমিশন লাভ করেন।

বাংলাদেশ সময়: ১৯২০ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২৪, ২০১৩
সম্পাদনা: তপন চক্রবর্তী, ব্যুরো এডিটর

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।