ঢাকা, শুক্রবার, ২০ আষাঢ় ১৪৩২, ০৪ জুলাই ২০২৫, ০৮ মহররম ১৪৪৭

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

বাধার পাহাড় ডিঙিয়ে রেকর্ড কনটেইনার ওঠানামা চট্টগ্রাম বন্দরে

আল রাহমান, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৭:৪২, জুলাই ১, ২০২৫
বাধার পাহাড় ডিঙিয়ে রেকর্ড কনটেইনার ওঠানামা চট্টগ্রাম বন্দরে ...

চট্টগ্রাম: অর্থবছরের শুরু থেকে শেষ পর্যন্ত একের পর এক বাধার পাহাড় ডিঙিয়ে রেকর্ড পরিমাণ কনটেইনার হ্যান্ডলিং করতে সক্ষম হয়েছে চট্টগ্রাম বন্দর। অর্থবছরের শুরুতে জুলাই অভ্যুত্থান, সপ্তাহব্যাপী ইন্টারনেট বন্ধ থাকা, ফেনীতে ভয়াবহ বন্যা, দুই ঈদের ছুটি, প্রাকৃতিক দুর্যোগ, পণ্যবাহী গাড়িচালকদের কর্মবিরতি, কাস্টমসের কলম বিরতি, এনবিআরের কমপ্লিট শাট ডাউনসহ নানা চ্যালেঞ্জ মোকাবেলা করতে হয়েছে বন্দরকে।

এসব কারণে প্রায় দুই মাস কার্যত স্থবির ছিল বন্দরের কার্যক্রম। ধারণা করা হচ্ছে এসব বাধা না থাকলে কনটেইনার হ্যান্ডলিং ৩ দশমিক ৩ মিলিয়নের ঘরে যেত।
 

২০২৪-২৫ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর কর্তৃপক্ষের কনটেইনার, কার্গো (খোলা পণ্য) এবং জাহাজ হ্যান্ডলিং আগের অর্থবছরের চেয়ে বেড়েছে। অর্থবছর শেষ হওয়ার ১৫ দিন আগেই ছাড়িয়ে যায় আগের বছরের কনটেইনার হ্যান্ডলিংয়ের পরিমাণকে।  

সূত্র জানায়, ২০২৪-২৫ অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দরে ৩২ লাখ ৯৬ হাজার ৬৭ টিইইউস (২০ ফুট দৈর্ঘ্য হিসেবে) কনটেইনার ওঠানামা হয়েছে। আগের অর্থবছরে যা ছিল ৩১ লাখ ৬৮ হাজার ৬৯০ টিইইউস। আগের অর্থবছরের চেয়ে এবার বেশি হ্যান্ডলিং হয়েছে ১ লাখ ২৭ হাজার ৩৭৭ টিইইউস।  ৪ দশমিক ০২ শতাংশ বেশি কনটেইনার হ্যান্ডলিং করেছে চট্টগ্রাম বন্দর।

সদ্য বিদায়ী অর্থবছরে চট্টগ্রাম বন্দর কার্গো (খোলা পণ্য) হ্যান্ডলিং করেছে ১৩ কোটি ৭ লাখ ২৪ হাজার ৭৮৩ লাখ মেট্রিক টন। বন্দরে জাহাজ এসেছে ৪ হাজার ৭৭টি।  
 
২০২২-২৩ অর্থ বছরে আমদানি-রপ্তানি মিলিয়ে কন্টেইনার হ্যান্ডলিং হয় ৩০ লাখ ৭ হাজার ৩৭৫ টিইইউস কনটেইনার হ্যান্ডলিং করে। ২০২১-২২ অর্থবছরে হয়েছিল ৩২ লাখ ৫৫ হাজার ৩৫৮ টিইইউস, সেটাই ছিল চট্টগ্রাম বন্দরে এক অর্থবছরে সর্বোচ্চ পরিমাণ কনটেইনার হ্যান্ডলিং।

চট্টগ্রাম বন্দর সচিব মো. ওমর ফারুক বাংলানিউজকে বলেন, সদ্যবিদায়ী অর্থবছরে রেকর্ড পরিমাণ কনটেইনার হ্যান্ডলিং হয়েছে। সাফল্যের মূলে রয়েছে সরকারের প্রত্যক্ষ নির্দেশনা, নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের মাননীয় উপদেষ্টা মহোদয় ও মন্ত্রণালয়ের সার্বিক সহযোগিতা, বন্দরের বোর্ড সদস্যদের নিরলস তদারকি ও বন্দরের কর্মকর্তা কর্মচারীদের অক্লান্ত পরিশ্রম ও আন্তরিক প্রচেষ্টা। এ ছাড়া বন্দরের অটোমেশন সার্ভিস, ই-গেট পাস চালু, কনটেইনার অপারেটিং সিস্টেম আধুনিকায়নসহ বিভিন্ন অবকাঠামো উন্নয়নও এ সাফল্যের উল্লেখযোগ্য অংশ। একই সাথে বন্দর ব্যবহারকারীদের আন্তরিকতা, দ্রুত কনটেইনার ডেলিভারি নেওয়ার প্রবণতা ও বন্দরের সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষাসহ তাদের সার্বিক সহযোগিতা এ সাফল্যের পেছনে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রেখেছে।  

নৌ পরিবহন মন্ত্রণালয়ের তদারকি, এনবিআর, বাণিজ্য মন্ত্রণালয়, কাস্টমসের সহযোগিতা, বন্দরে নানা হ্যান্ডলিং ইক্যুইপমেন্ট সংযোজন, অটোমেশন, আমদানি-রপ্তানিকারক, বন্দর ব্যবহারকারী, সিঅ্যান্ডএফ এজেন্ট, শিপিং এজেন্ট, বার্থ অপারেটর, শিপ হ্যান্ডলিং অপারেটর, ফ্রেইট ফরওয়ার্ডার, এফবিসিসিআই, সিসিসিআই, বিজিএমইএ, বিকেএমইএ, পণ্য পরিবহনে সংশ্লিষ্টদের অবদানের জন্য এ অর্জন সম্ভব হয়েছে। সংশ্লিষ্ট সবার প্রতি কৃতজ্ঞতা।  

এআর/পিডি/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।