ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৩১ চৈত্র ১৪৩২, ১৫ মে ২০২৫, ১৭ জিলকদ ১৪৪৬

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

আজ চবির ৫ম সমাবর্তন, বর্ণিল সাজে ক্যাম্পাস

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট  | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৯:৩৮, মে ১৪, ২০২৫
আজ চবির ৫ম সমাবর্তন, বর্ণিল সাজে ক্যাম্পাস ...

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: দীর্ঘ ৯ বছর অপেক্ষার পর অবশেষে আজ বুধবার (১৪ মে) চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) অনুষ্ঠিত হচ্ছে ৫ম সমাবর্তন। আর তাই দেশের সর্ববৃহৎ ক্যাম্পাসকে সাজানো হয়েছে বর্ণিল সাজে।

দিনটিকে ঘিরে ক্যাম্পাসজুড়ে হয়েছে নানান সংস্কার।  

গ্রীষ্মের আগমনে চারিদিকে ফুটতে শুরু করেছে নানা প্রজাতির ফুল।

সোনালু, কৃষ্ণচূড়া, জারুল, চম্পা, করবী, জবা, টগর, ভৃঙ্গরাজের সমারোহে চবি ক্যাম্পাসে দিনের আলোটা ঝকঝকে। লাল-নীল-সবুজ বাতির ঝলক সপ্তাহজুড়ে রাতভর দিয়ে যাচ্ছিলো সমাবর্তনের আগমনী বার্তা।

খাতা-কলমে সমাবর্তনের দিনটি ১৪ মে হলেও দুইদিন ধরেই ক্যাম্পাসজুড়ে শুরু হয়েছে সমাবর্তনের আমেজ। পুরোনো বন্ধুদের সঙ্গে আড্ডা, পরিবারের সঙ্গে একাডেমিক জীবনের শেষ মুহূর্তগুলো ভাগ করে নেওয়া, তীব্র গরমেও গাউন পরে ঘুরে বেড়ানো, আর আকাশে ছুঁড়ে দেওয়া কালো টুপির সঙ্গে মিশে আছে একরাশ আনন্দ উচ্ছ্বাস।  

অংশগ্রহণের দিক থেকে দেশের সর্ববৃহৎ এই সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন প্রায় ২৩ হাজার গ্র্যাজুয়েট। ২০১১ থেকে ২০২৩ সালের মধ্যে অনার্স, মাস্টার্স এবং ২০১৪ থেকে ২০২৪ সালের মধ্যে এমফিল, পিএইচডি সম্পন্ন করা শিক্ষার্থীরা এবারের সমাবর্তনে অংশগ্রহণ করছেন। সফলভাবে সমাবর্তন সম্পন্ন করতে কাজ করেছে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১৯টি উপ-কমিটি।

সমাবর্তনের বিশেষ আকর্ষণ হিসেবে থাকছে নোবেলজয়ী অর্থনীতিবিদ ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা, চবির অর্থনীতি বিভাগের প্রাক্তন শিক্ষক অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। বিশ্বব্যাপী দারিদ্র্য বিমোচন ও শান্তি প্রতিষ্ঠায় অবদানের স্বীকৃতিস্বরূপ তাঁকে ডক্টর অব লেটারস (ডি-লিট) ডিগ্রি দেওয়া হবে এবার সমাবর্তনে।  

এছাড়া সমাবর্তনে অতিথি হিসেবে থাকবেন জ্বালানি উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ফাওজুল কবির খান, শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক সি আর আবরার, মুক্তিযুদ্ধবিষয়ক উপদেষ্টা ফারুক-ই-আজম ও স্বাস্থ্য উপদেষ্টা নূরজাহান বেগম।

গতরাতেই চবির কেন্দ্রীয় খেলার মাঠে শেষ হয়েছে বিশাল শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত প্যান্ডেলের কাজ। অতিথিদের জন্য রাখা হয়েছে পৃথক স্টল, আইসিইউসহ মেডিক্যাল কর্নার ও খাবারের স্টল।

আজ দুপুর পৌনে ২টায় সমাবর্তনের শোভাযাত্রা অনুষ্ঠিত হবে। দুপুর ২টায় জাতীয় সংগীতের মধ্য দিয়ে শুরু হবে মূল অনুষ্ঠান। অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখবেন উপাচার্য, দুই উপ-উপাচার্য, ইউজিসির চেয়ারম্যান, শিক্ষা উপদেষ্টা ও প্রধান উপদেষ্টা। অনুষ্ঠান শেষ হবে বিকেল ৪টায়।

শিক্ষার্থীদের জন্য দুপুর ১২টার মধ্যে খাবার সংগ্রহের সময় নির্ধারণ করা হয়েছে। বেলা ১টার মধ্যে কেন্দ্রীয় খেলার মাঠের প্যান্ডেলে প্রবেশ করতে হবে। এরপর থাকছে না প্যান্ডেলে ঢোকার সুযোগ। মূল ভেন্যুতে আমন্ত্রণপত্র ও মোবাইল ফোন ছাড়া অন্য কিছু নেওয়া যাবে না।

প্রায় ১৪ কোটি টাকা ব্যয়ে হতে যাচ্ছে এ আয়োজন। যেখানে ৩ কোটি টাকাই খরচ হয়েছে প্যান্ডেল নির্মাণে। ২ কোটি টাকা সার্টিফিকেটসহ অন্যান্য উপকরণে ব্যয় করা হয়েছে। এছাড়া গাউন, টুপি, গিফট, দুপুরের খাবারসহ অন্যান্য খাতে খরচ হয়েছে আরও প্রায় ৯ কোটি টাকা।

চবির পঞ্চম সমাবর্তনে ৪২ জন পিএইচডি এবং ৩৩ জন এমফিল, ডিগ্রিসহ মোট ২২ হাজার ৫৮৬ জন শিক্ষার্থীকে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি প্রদান করা হবে। এর মধ্যে কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের ৪ হাজার ৯৮৮ জন, বিজ্ঞান ২ হাজার ৭৬৬ জন, ব্যবসা প্রশাসন ৪ হাজার ৫৯৩ জন, সমাজবিজ্ঞান ৪ হাজার ১৫৮ জন, জীববিজ্ঞান ১ হাজার ৬৮৫ জন, ইঞ্জিনিয়ারিং ৭৯৬ জন, আইন ৭০৩ জন, শিক্ষা ৩১৭ জন, মেরিন সায়েন্স ২৮৪ জন, চিকিৎসা ২২৯৬ জন বিভিন্ন ডিগ্রি অর্জনকারী এবার সমাবর্তনে অংশ নিচ্ছেন।

বাংলাদেশ সময়: ০৯৩০ ঘণ্টা, মে ১৪, ২০২৫
এমএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।