ঢাকা, মঙ্গলবার, ৫ চৈত্র ১৪৩০, ১৯ মার্চ ২০২৪, ০৮ রমজান ১৪৪৫

চট্টগ্রাম প্রতিদিন

চবি ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, শিক্ষক-সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি

ইউনিভার্সিটি করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২, ২০২২
চবি ছাত্রলীগের সংঘর্ষ, শিক্ষক-সাংবাদিকদের হত্যার হুমকি ...

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়: হল দখলকে কেন্দ্র করে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে (চবি) ছাত্রলীগের দুই পক্ষের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয়েছে। সংঘর্ষ চলাকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের একজন সহকারী প্রক্টর ও কর্মরত সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হয় ছাত্রলীগের এক পক্ষের নেতা-কর্মীরা।

শুক্রবার (০২ ডিসেম্বর) রাত ১০টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের এ এফ রহমান হলে সংঘর্ষের সূত্রপাত হয়। তিন ঘণ্টা ধরে দফায় দফায় সংঘর্ষ হয় উভয়পক্ষের মধ্যে।

সংঘর্ষে জড়ানো পক্ষ দুটি হলো- শাখা ছাত্রলীগের বগিভিত্তিক উপগ্রুপ বিজয় ও ভার্সিটি এক্সপ্রেস (ভিএক্স)।

উভয়পক্ষের অন্তত ২০ জন আহত হওয়ার খবর পাওয়া গেছে। আহতদের বেশ কয়েকজনকে কুপিয়ে জখম করা হয়েছে। তবে তাদের নাম-পরিচয় জানা যায়নি।

জানা গেছে, চবির এ এফ রহমান হলের দেওয়ালজুড়ে বিজয় গ্রুপের চিকা মারা হয়েছে বছরখানেক আগে। হলটিতে বিজয় গ্রুপ একক আধিপত্য বিস্তার করলেও ভিএক্সের অনুসারীরা বৃহস্পতি ও শুক্রবার (০১ ও ০২ ডিসেম্বর) হলের দেওয়ালে চিকা মেরে নিজেদের অবস্থান জানান দেয়। পরে বিজয়ের অনুসারীরা দেওয়ালের চিকা মুছে দিলে বিষয়টিকে কেন্দ্র করে দিনভর দুই পক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা যায়। শুক্রবার রাতে ভিএক্স গ্রুপের নেতাকর্মীরা এ এফ রহমান হলে মিটিংয়ে বসলে রাত ১০টার দিকে দুইপক্ষের নেতা-কর্মীদের মধ্যে সংঘর্ষ শুরু হয়।  

সংঘর্ষ চলাকালে এ এফ রহমান হলের অর্ধশতাধিক রুম ভাংচুর করে বিজয়ের নেতা-কর্মীরা। এসময় একজন শিক্ষকের গায়ে হাত তুলেন বিজয়ের এক কর্মী। এছাড়া কর্মরত সাংবাদিকদেরও হত্যার হুমকি দেন বিজয় গ্রুপের একাধিক কর্মী।  বেশ কয়েকটি ককটেল বিস্ফোরণ ঘটায় বিবাদে জড়ানো উভয়পক্ষ। এছাড়া দেশিয় অস্ত্র নিয়ে ছাত্রলীগের অনুসারীরা মহড়া দেয়।  

চবি ছাত্রলীগের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক ও ভিএক্স গ্রুপের নেতা মারুফ ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে যদিও বগিভিত্তিক রাজনীতি নিষিদ্ধ তবে এখনও বগিভিত্তিক উপগ্রুপগুলো সক্রিয়ভাবে কাজ করছে। পুরো ক্যাম্পাসে আজ পর্যন্ত কোনও গ্রুপ অন্য গ্রুপের চিকা মুছে ফেলছে এমন নজির নেই। কিন্তু গতকাল এএফ রহমান হলে আমরা কিছু জায়গায় চিকা মারার পর বিজয়ের অনুসারীরা সেগুলো মুছে দেয়, সেখান থেকেই মূলত দুই পক্ষের মধ্যে চাপা উত্তেজনা সৃষ্টি হয়।  

তিনি আরও বলেন, প্রধানমন্ত্রীর আগমন উপলক্ষে রাতে আমরা মিটিংয়ে বসলে তারা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। তবে পুরো সময়টা আমরা শান্ত থাকার চেষ্টা করেছি এবং প্রশাসনকে সহযোগিতা করেছি। কিন্তু বিজয় গ্রুপের অনুসারীদের একাধিকবার অতর্কিত হামলায় আমাদের ১৫ জনের বেশি আহত হয়েছে। গুরুতর আহত হওয়ায় বেশ কয়েকজনকে চট্টগ্রাম মেডিক্যালে পাঠানো হয়েছে। শুধু তাই নয়, তারা প্রশাসন এবং সাংবাদিকদের সঙ্গে যে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করেছে এর সাক্ষী গণমাধ্যমকর্মীরাই।  

চবি ছাত্রলীগের উপ-আপ্যায়ন বিষয়ক সম্পাদক ও বিজয় গ্রুপের নেতা নয়ন চন্দ্র মোদক বাংলানিউজকে বলেন, আগামী ৪ তারিখ মাননীয় প্রধানমন্ত্রী চট্টগ্রামে আসবেন, সে উপলক্ষে আমরা নেত্রীকে স্বাগতম জানানোর জন্য প্রস্তুতি নিচ্ছিলাম। এর মধ্যে তারা আমাদের ওপর অতর্কিত হামলা চালায়। আমরা বিষয়টি মিটমাট করেছি। এছাড়া শিক্ষক ও সাংবাদিকদের ওপরে যারা চড়াও হয়েছে আমরা তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেব।

সহকারী প্রক্টর এসএএম জিয়াউল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, আমরা ঘটনাস্থলে ছিলাম। পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। শিক্ষক ও সাংবাদিকদের ওপর চড়াও হওয়ার ঘটনা অত্যন্ত দুঃখজনক। বিশ্ববিদ্যালয়ের সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতির সঙ্গে যারা জড়িত একটি তদন্ত কমিটি করে তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নিবো। পাশাপাশি হলের দেওয়ালে থাকা সকল গ্রুপের চিকা মুছে দিবো আমরা।  

বাংলাদেশ সময়: ২২৫৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ০২, ২০২২, আপডেট: ০১৫৭ ঘণ্টা
এমএ/টিসি

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।