ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

ক্রিকেট

শচীনের ব্যাট দিয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছিলেন আফ্রিদি

স্পোর্টস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১০০ ঘণ্টা, আগস্ট ৬, ২০২০
শচীনের ব্যাট দিয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েছিলেন আফ্রিদি শচীন টেন্ডুলকার ও শহীদ আফ্রিদি/ছবি: সংগৃহীত

১৯৯৬ সালে কেনিয়ার রাজধানী নাইরোবিতে এক লঙ্কাকাণ্ড ঘটিয়ে ফেলেন শহীদ আফ্রিদি। লঙ্কা মানে শ্রীলঙ্কার বিপক্ষেই তুলনামূলক ধীরগতির ক্রিকেটে তখন আচমকা এক ঝড় তোলেন সাবেক পাকিস্তানি অলরাউন্ডার।

মাত্র ৩৭ বল খেলেই ছুঁয়ে ফেলেন তিন অংকের ম্যাজিক ফিগার। ওই সময় যা ছিল প্রায় অকল্পনীয় ব্যাপার। লঙ্কান বোলারদের তুলোধুনা করে ওয়ানডে ইতিহাসের সবচেয়ে দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড গড়েন তিনি, যা স্থায়ী হয় ১৮ বছর।

মজার ব্যাপার হলো, যে ব্যাট আফ্রিদিকে ‘ব্যাটসম্যান’ বানিয়েছে সেটি তার তখনকার সতীর্থ ও সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক ওয়াকার ইউনিস উপহার দিয়েছিলেন। আর ওয়াকারকে ওই ব্যাট উপহার দিয়েছিলেন ভারতীয় কিংবদন্তি ব্যাটসম্যান শচীন টেন্ডুলকার। আফ্রিদির সেদিনের ৪০ বলে ১০৪ রানের ঝড়ের সাক্ষী ছিলেন সাবেক পাকিস্তানি অলরাউন্ডার আজহার মাহমুদ এই তথ্য খোলাসা করেছেন।  

আজহার মাহমুদ জানান, আফ্রিদি ওই সময় পাকিস্তান ‘এ’ দলের হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে ছিলেন। কিন্তু ইনজুরি আক্রান্ত মুশতাক আহমেদের জায়গায় ডাক পড়ে তার। সাবেক পাকিস্তানি পেস অলরাউন্ডার ‘দ্য গ্রেটেস্ট রাইভালরি’ অনুষ্ঠানে বলেন, ‘সাহারা কাপ শেষে ১৯৯৬ সালে নাইরোবিতে অভিষেক হয় আফ্রিদির, যেখানে আমিও অভিষিক্ত হই। তো ওই সিরিজে মুশতাক আহমেদ ইনজুরিতে পড়লো এবং ওই সময় পাকিস্তান এ দলের হয়ে তখন ওয়েস্ট ইন্ডিজ সফরে থাকা আফ্রিদির ডাক পড়লো। ’

অভিষেক ম্যাচে আফ্রিদি ব্যাট করার সুযোগ পাননি। কারণ তার ছয় নম্বরে ব্যাট করার কথা। আজহার বলেন, ‘ওই সময়, দুই শ্রীলঙ্কান ওপেনার জয়সুরিয়া এবং উইকেটরক্ষক কালিভুথারানা আগ্রাসী ব্যাটিং করতো। ফলে আমরা ভাবলাম আমাদেরও তিন নম্বরে এমন একজন দরকার। ওয়াসিম ভাই (সাবেক পাকিস্তানি অধিনায়ক) বললেন তোমরা যাও এবং নেটে স্লগ করার চেষ্টা করো। আমি ঠিকঠাক স্লগ করছিলাম, কিন্তু আফ্রিদি স্পিনারদের রীতিমত বিধ্বস্ত করছিল। ’

আফ্রিদির ‘একজন বোলার যে বলে হিট করতে পারে’ থেকে ‘একজন ব্যাটসম্যান’ হয়ে ওঠা নিয়ে মাহমুদ বলেন, ‘পরেরদিন, আমরা শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে নামলাম এবং দল সিদ্ধান্ত নিল আফ্রিদি তিনে নামবে। আমার মনে আছে শচীনের কাছ থেকে ওয়াকার একটি ব্যাট উপহার হিসেবে পেয়েছিলেন, সে (আফ্রিদি) কিংবদন্তি শচীনের ব্যাট দিয়ে খেললো এবং সেঞ্চুরিও করলো। এরপর থেকে সে পুরোদস্তুর ব্যাটসম্যান বনে গেল। মূলত সে ছিল বোলার যে বলে হিট করতে পারে, কিন্তু শেষ পর্যন্ত তার ক্যারিয়ার ছিল অসাধারণ। ’

‘বিশেষ করে ২০১১ বিশ্বকাপে, সে (আফ্রিদি) দলকে ভালোভাবে নেতৃত্ব দিয়েছে। নিজেও ছিল সেরা ফর্মে। সে দারুণ বোলিং করেছে। সে কিংবদন্তি স্পিনার আবদুল কাদিরের কাছ থেকে একটা ডেলিভারি শিখেছিল যেটা ঘুরে ভেতরে যেত এবং প্যাডে আঘাত করতো। সবমিলিয়ে ওটা পাকিস্তানের জন্যও ভালো বিশ্বকাপ ছিল। যদিও দুর্ভাগ্যবশত আমরা ভারতের কাছে হেরে গিয়েছিলাম। কিন্তু আফ্রিদি পাকিস্তানের অনেক বড় সম্পদ ছিল। ’

সত্যিকার অর্থেই ওয়ানডেতে পাকিস্তানের অন্যতম সেরা খেলোয়াড় ছিলেন আফ্রিদি। তার নেতৃত্বে পাকিস্তান ২০১১ বিশ্বকাপের সেমিফাইনালও খেলেছে। তার দ্রুততম সেঞ্চুরির রেকর্ড অবশ্য ২০১৪ সালে ভেঙে দেন নিউজিল্যান্ডের অলরাউন্ডার কোরি অ্যান্ডারসন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে আফ্রিদির চেয়ে এক বল কম খেলে রেকর্ড ভাঙেন তিনি। পরে ২০১৫ সালে এই রেকর্ড ভাঙেন সাবেক প্রোটিয়া ব্যাটসম্যান এবি ডি ভিলিয়ার্স। ওয়েস্ট ইন্ডিজের বিপক্ষে দক্ষিণ আফ্রিকার সাবেক অধিনায়ক নতুন রেকর্ড গড়তে খেলেন মাত্র ৩১ বল।

বাংলাদেশ সময়: ২১০০ ঘণ্টা, আগস্ট ০৬, ২০২০
এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।