ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

ক্রিকেট

বিশ্বকাপে টিকিট কালোবাজারিতে ফাঁকা সিলেট স্টেডিয়াম!

সাব্বির আহমদ, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮১০ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৪
বিশ্বকাপে টিকিট কালোবাজারিতে ফাঁকা সিলেট স্টেডিয়াম!

সিলেট: মাস তিনেক আগে বিজয় দিবস টি-টোয়েন্টি ঘরোয়া ম্যাচে যে দর্শক ঢল নেমেছিলো, তাও দেখা যাচ্ছে না টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ আসরেসিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়ামে।

ধুম-ধাড়াক্কা টি-টোয়েন্টির খেলায় দেশের একমাত্র গ্রিন গ্যালারির স্টেডিয়ামটিতে যেখানে উপচেপড়া ভিড় থাকার কথা সেখানে ফাঁকা থাকছে গ্যালারির অনেক অংশ।

এজন্য স্টেডিয়াম ও ক্রিকেট বোর্ড কর্মকর্তাদের টিকিট কালোবাজারিই দায়ী বলে মনে করছেন দর্শক ও ক্রীড়ামোদীরা।

সংশ্লিষ্টদের অভিযোগ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে প্রতিদিন টিকিট কালোবাজারি করছেন খোদ বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) পরিচালক শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল, বিভাগীয় কোচ এ কে এম মাহমুদ ইমন এবং বাংলাদেশ ক্রিকেট বোর্ডের (বিসিবি) সিলেট ভেন্যুর মিডিয়া ম্যানেজার ফরহাদ কোরেশী, সুম্মত নূরী চৌধুরী জুয়েল এবং ছাত্রদল নেতা রেজাউল করিম নাচন।

দিনে এক হাজার টিকিট তারা নিয়ম বহির্ভূতভাবে বিক্রি করছেন -এমন তথ্য স্টেডিয়াম সংশ্লিষ্ট সূত্রের।

ক্রীড়ামোদীদের অভিযোগ, টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপে ‘গেস্ট কার্ড’র নামে এক ধরনের বাণিজ্য করছেন শফিউল আলম চৌধুরী নাদেল। ইচ্ছেমত ‘গেস্ট কার্ড’ বিতরণ করেছেন বিসিবির সিলেটের এই পরিচালক।

গেস্ট কার্ড না পাওয়া সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সহ-সাধারণ সম্পাদক জুম্মা আব্বাস রাজু বাংলানিউজকে জানান, গেস্ট কার্ড অনেকগুলো বিতরণ করা হয়েছে, কিন্তু তিনি নিজেই কোনো গেস্ট কার্ড পাননি।

এছাড়া, স্টেডিয়ামের ভেতরে অবৈধ স্ন্যাকবারের দোকান খুলে দিয়ে অতিরিক্ত দাম আদায় করে আরেক ধরনের বাণিজ্য করছেন স্টেডিয়ামের দায়িত্বে থাকা সংশ্লিষ্টরা। বাইরে থেকে খাবার-পানীয় আনা নিষেধ থাকায় বাধ্য হয়ে এসব কিনতে হচ্ছে দর্শকদের।

এদিকে বুধবারও ৩শ’ থেকে ৫শ’ টাকায় বিশ্বকাপের টিকিট স্টেডিয়ামের আশপাশে বিক্রি হতে দেখা গেছে বলে অভিযোগ ভুক্তভোগীদের।

সূত্র জানায়, কর্মকর্তারা অতিরিক্ত টিকিট কিনে নিয়ে কালোবাজারে ছেড়েছেন। সেই টিকিট অতিরিক্ত দামেই কিনে নিতে দেখা গেছে ক্রিকেটপ্রেমীদের।

সংশ্লিষ্ট একটি ঘনিষ্ঠ সূত্র বাংলানিউজকে নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানায়, বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার মাধ্যমে প্রায় দশ লাখ টাকার টিকিট আনা হয় বিসিবি থেকে। সিলেট সিটি করপোরেশন, জেলা ক্রীড়া সংস্থা ও বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার কর্মকর্তাদের জন্য এসব টিকিট আনা হয়। বিসিবি থেকে বিশেষ সুবিধায় আনা এসব টিকিট এখন কালোবাজারে ছাড়া হয়েছে।

একই চক্র স্টেডিয়ামের ভেতরে ও বাইরে দোকান বসিয়ে দর্শকদের জিম্মি করে তাদের কাছে ইচ্ছেমতো দামে পণ্য বিক্রি করছে। এরমধ্যে প্রতি গ্লাস পানি ১০ টাকা, ১৫ টাকার পানির বোতল ৫০ টাকা, ১০ টাকার চিপস ৪০ টাকা, ১২ টাকার জুস ৩৫ টাকা, ৫ টাকার চানাচুর প্যাকেট ১৫ টাকা ও ১০ টাকার আইসক্রিম ৫০ টাকা নেওয়া হচ্ছে।

ক্রিকেটপ্রেমী এমসি কলেজের শিক্ষার্থী সামসুজ্জামান বাংলানিউজকে বলেন, পুরো স্টেডিয়াম খালি, কিন্তু টিকেট পাওয়া যাচ্ছে না। আবার অতিরিক্ত দাম দিয়ে অনেকেই স্টেডিয়ামের আশপাশ থেকে টিকিট কিন নিচ্ছেন। আর স্টেডিয়ামের ভেতর থেকে বাধ্য হয়ে কিছু কিনতে গেলেই ইচ্ছেমতো টাকা আদায় চলছে।

তিনি অভিযোগ করে বলেন, এভাবে টিকিট কালোবাজারে চলে যাওয়ায় সত্যিকারের দর্শক হারাচ্ছে সিলেট বিভাগীয় স্টেডিয়াম।

সিলেট ক্রীড়া লেখক সমিতির কোষাধ্যক্ষ মামুন খান ব্যাপারটিকে খুবই দুঃখজনক আখ্যা দেন। তিনি বাংলানিউজকে বলেন, প্রথমবারের মত এই স্টেডিয়ামে আন্তর্জাতিক পর্যায়ের খেলা হচ্ছে। উচিত ছিলো কীভাবে দর্শক সমাগম দেখানো যায়। কিন্তু টিকিট কালোবাজারিরা সেই প্রত্যাশায় গুঁড়েবালি দিচ্ছে।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১০ ঘণ্টা, মার্চ ১৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।