দুবাইয়ে রোববার এশিয়া কাপের ফাইনালে মুখোমুখি হবে ভারত ও পাকিস্তান। গ্রুপ পর্ব ও সুপার ফোরে দুইবারের দেখায় জয় তুলে নিয়েছিল ভারত।
অন্যদিকে পাকিস্তান ভারতের কাছে দুইবারই হেরে যাওয়ায় বেশ চাপেই আছে। সেই চাপ কাটিয়ে ভারতের বিপক্ষে জিতে চ্যাম্পিয়ন হওয়ার স্বপ্ন দেখছে সালমান আলী আগার দল।
শুধু ক্রিকেট নয়, দুই দেশের রাজনৈতিক টানাপোড়েনও যেন ছাপ ফেলেছে এই ম্যাচে। টুর্নামেন্টজুড়ে উত্তেজনা ছড়িয়েছে নানা ঘটনার কারণে। প্রথম ম্যাচেই ভারতীয় অধিনায়ক সূর্যকুমার যাদব ‘হ্যান্ডশেক না করার নীতি’ অনুসরণ করে আলোচনায় আসেন।
ম্যাচশেষেও একই কাণ্ড ঘটান তিনি। জবাবে পাকিস্তানি পেসার হারিস রউফ কটূক্তি, ইশারা ও এমনকি যুদ্ধবিমান বিধ্বস্ত হওয়ার ভঙ্গি করেন। আইসিসি সূর্য ও রউফ দুজনকেই ৩০ শতাংশ জরিমানা করে।
এর বাইরে পাকিস্তানের স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী ও পিসিবি প্রধান মহসিন নকভি সামাজিক মাধ্যমে উসকানিমূলক পোস্ট করে পরিস্থিতিকে আরও তীব্র করেছেন।
ভারতের চ্যালেঞ্জ
অপরাজিত ভারতের ব্যাটিং ভরসা অভিষেক শর্মা। ছয় ম্যাচে ৩০৯ রান করে তিনি একাই দলের রান বোঝা কাঁধে তুলেছেন। দ্বিতীয় সর্বোচ্চ স্কোরার তিলক ভার্মার রান ১৪৪। বোলিংয়ে কুলদীপ যাদব ফিরেই নিয়েছেন ১৩ উইকেট। তবে ইনজুরির ছায়া আছে। শ্রীলঙ্কার বিপক্ষে হ্যামস্ট্রিংয়ের কারণে হার্দিক পান্ডিয়া মাঠ ছাড়েন। যদিও ভারতের বোলিং কোচ মরনে মরকেল জানিয়েছেন, হার্দিক ফাইনালে খেলতে পারেন। অভিষেকও গরমে ক্র্যাম্পে ভুগলেও এখন সুস্থ।
তবুও ভারতের ব্যাটিং অর্ডারে শঙ্কা রয়ে গেছে। অভিষেক ব্যর্থ হলে বাকিদের ওপর চাপ বাড়বে। সূর্যকুমার, শুবমান গিল কিংবা সঞ্জু স্যামসন এখনো বড় ইনিংস খেলতে পারেননি। শেষ দিকে রান তোলার পরিকল্পনাও স্পষ্ট নয়।
পাকিস্তানের দুর্বলতা
পাকিস্তানের ব্যাটিং পুরো টুর্নামেন্টেই ভঙ্গুর ছিল। সাইম আইয়ুব টানা চার ম্যাচে শূন্য রানে আউট হয়েছেন। হুসেইন তালাত ও সালমান আলী আগা ভারতের স্পিনারদের সামনে অসহায় ছিলেন। একমাত্র সাহিবজাদা ফারহান কিছুটা প্রতিরোধ গড়েছেন।
পাকিস্তানের ভরসা নতুন বলের আক্রমণ। শাহিন আফ্রিদি ও হারিস রউফ ভারতের টপ অর্ডার দ্রুত ভেঙে দিতে পারলে ম্যাচ জমতে পারে। তবে দুজনকে কার্যকর সহযোগিতা দেওয়ার মতো সঙ্গী পাকিস্তান পায়নি।
মাঠের বাইরেও লড়াই
ভারতের বোলিং কোচ ফাইনালের আগে বলেছেন, ‘এখন সৌন্দর্য নয়, কেবল জয়টাই মূল বিষয়। কুৎসিত জয়ও জয়। ’ পাকিস্তানের কোচ মাইক হেসনও বলেছেন, ‘ফাইনালই একমাত্র ম্যাচ, যা সত্যি গণ্য হয়। ’
ফাইনাল তাই নিছক ক্রিকেটীয় লড়াই নয়। রাজনৈতিক উত্তেজনা, মাঠের ঘটনার তীব্রতা আর দু’দলের ভঙ্গুরতা—সব মিলিয়ে রোববারের ম্যাচটি ইতিহাসে জায়গা করে নেবে নিশ্চিতভাবেই।
ভারত দল: সূর্যকুমার যাদব (অধিনায়ক), শুবমান গিল (সহ-অধিনায়ক), অভিষেক শর্মা, তিলক ভার্মা, হার্দিক পান্ডিয়া, শিভম দুবে, অক্ষর প্যাটেল, জিতেশ শর্মা (উইকেটকিপার), জসপ্রিত বুমরাহ, আর্শদীপ সিং, বরুণ চক্রবর্তী, কুলদীপ যাদব, সঞ্জু স্যামসন (উইকেটকিপার), হর্ষিত রানা, ঋতুরাজ সিং।
পাকিস্তান দল: সালমান আলি আগা (অধিনায়ক), আবরার আহমেদ, ফাহিম আশরাফ, ফখর জামান, হারিস রউফ, হাসান আলি, হাসান নওয়াজ, হুসেইন তালাত, খুশদিল শাহ, মোহাম্মদ হারিস, মোহাম্মদ নওয়াজ, মোহাম্মদ ওয়াসিম জুনিয়র, সাহিবজাদা ফারহান, সাইম আইয়ুব, সালমান মির্জা, শাহিন আফ্রিদি, সুফিয়ান মকিম।
এমএইচএম