সৌদি আরবের প্রস্তাবিত উচ্চাভিলাষী টি-টোয়েন্টি লিগ—যার পেছনে রয়েছে ৪০০ মিলিয়ন মার্কিন ডলারের বিনিয়োগ পরিকল্পনা—তা বাস্তবায়নের পথে বড় ধাক্কা দিয়েছে ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) ও ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি)। নিজেদের ঘরোয়া টুর্নামেন্টের গুরুত্ব ও বাজারমূল্য ধরে রাখতেই এই সিদ্ধান্ত নিয়েছে তারা, এমনই জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম 'দ্য গার্ডিয়ান'।
'দ্য গার্ডিয়ান'–এর রিপোর্ট অনুযায়ী, ভারতীয় ক্রিকেট বোর্ড (বিসিসিআই) ও ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলস ক্রিকেট বোর্ড (ইসিবি) যৌথভাবে এই লিগের বিরোধিতা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে। তারা তাদের ক্রিকেটারদের এই লিগে অংশ নেওয়ার জন্য ‘নো অবজেকশন সার্টিফিকেট’ (NOC) দেবে না এবং আন্তর্জাতিক ক্রিকেট কাউন্সিলকে (আইসিসি) চাপ দেবে যেন তারা লিগটিকে কোনো অনুমোদন না দেয়।
এই সিদ্ধান্ত আসে চলতি জুন মাসে লন্ডনের লর্ডসে অনুষ্ঠিত বিশ্ব টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপ ফাইনালের সময় বিসিসিআই ও ইসিবির আলোচনার পর। তারা উদ্বিগ্ন, সৌদি লিগ চালু হলে আইপিএল ও দ্য হান্ড্রেডের মতো তাদের নিজস্ব লাভজনক ঘরোয়া টুর্নামেন্টের বাজার ক্ষতিগ্রস্ত হতে পারে।
অন্যদিকে, ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়া (সিএ) সৌদি বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে এই লিগে অংশ নেওয়ার বিষয়টি বিবেচনা করছে। কারণ, 'এসআরজে স্পোর্টস ইনভেস্টমেন্ট' নামে সৌদি কোম্পানি প্রায় ৪০০ মিলিয়ন ডলার বিনিয়োগ করতে চায় আট দলের একটি টি-টোয়েন্টি লিগে, যা বছরের বিভিন্ন সময়ে চারটি আলাদা ভেন্যুতে অনুষ্ঠিত হবে—গ্র্যান্ড স্ল্যাম টেনিস কাঠামোর আদলে।
ক্রিকেট অস্ট্রেলিয়ার জন্য এই বিনিয়োগ লাভজনক হতে পারে, কারণ বিগ ব্যাশ লিগের (বিবিএল) ফ্র্যাঞ্চাইজিগুলো এখনো সিএ এবং অস্ট্রেলিয়ার রাজ্য বোর্ডগুলোর মালিকানায়। প্রাইভেট বিনিয়োগের মাধ্যমে তারা অতিরিক্ত আয় করতে চায়।
তবে বিসিসিআই ও ইসিবি যেখানে নিজেদের শক্তিশালী ব্র্যান্ড আইপিএল ও দ্য হান্ড্রেড থেকে বড় অঙ্কের আয় করছে—আইপিএলের বাজারমূল্য প্রায় ১২ বিলিয়ন ডলার, আর দ্য হান্ড্রেডের ফ্র্যাঞ্চাইজির ৪৯ শতাংশ বিক্রি করে ইসিবি প্রায় ৭০০ মিলিয়ন ডলার পাচ্ছে—তারা এই নতুন লিগকে বাজার ভাগাভাগির হুমকি হিসেবে দেখছে।
এছাড়া উল্লেখযোগ্য বিষয় হলো, আইসিসির বর্তমান চেয়ারম্যান জয় শাহ, যিনি বিসিসিআই-এর সাবেক সচিব। ফলে বিসিসিআই চাইলে তার সিদ্ধান্তের বাইরে কিছু হওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম।
সব মিলিয়ে, সৌদি টি-টোয়েন্টি লিগ এখনো আনুষ্ঠানিকভাবে মাঠে গড়ানোর আগেই শক্তিশালী ক্রিকেট রাজনীতির মুখে পড়ে থমকে গেছে।
এমএইচএম