২০০৭ সালের ১৬ মার্চ, বাংলাদেশের ক্রিকেট ইতিহাসে এক শোকাবহ দিন। মাত্র ২২ বছর বয়সে এক মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় প্রাণ হারান জাতীয় দলের অলরাউন্ডার মানজারুল ইসলাম রানা।
খুলনার মুজগুন্নিতে ১৯৮৪ সালের ৪ মে জন্মগ্রহণ করেন রানা। অর্থাৎ আজ তার জন্মদিন। বেঁচে থাকলে তার বয়স হতো ৪১ বছর।
ক্রিকেট ক্যারিয়ার
বাঁহাতি ব্যাটসম্যান ও স্লো লেফট-আর্ম অর্থোডক্স বোলার হিসেবে ২০০০ সালে খুলনা বিভাগের হয়ে প্রথম শ্রেণির ক্রিকেটে অভিষেক ঘটে তার। ২০০৩ সালের নভেম্বরে ইংল্যান্ডের বিপক্ষে ওয়ানডে দিয়ে আন্তর্জাতিক অঙ্গনে পা রাখেন। মাত্র তৃতীয় বলে মাইকেল ভনের উইকেট নিয়ে তিনি হয়ে ওঠেন প্রথম বাংলাদেশি, যিনি আন্তর্জাতিক অভিষেকে প্রথম ওভারেই উইকেট শিকার করেন। পরের বছর ফেব্রুয়ারিতে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে টেস্ট অভিষেক ঘটে তার ।
রানা ৬টি টেস্ট ও ২৫টি ওয়ানডে খেলেছেন। ওয়ানডেতে ৩৩১ রান ও ২৩ উইকেট এবং টেস্টে ২৫৭ রান ও ৫ উইকেট নিয়েছেন। ২০০৫ সালে জিম্বাবুয়ের বিপক্ষে ওয়ানডে সিরিজে তার অলরাউন্ড পারফরম্যান্স বাংলাদেশকে ০-২ থেকে ৩-২ ব্যবধানে সিরিজ জয়ে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে ।
স্মৃতির পাতায় রানা
২০০৭ সালের ১৬ মার্চ খুলনার ডুমুরিয়া উপজেলার বালিয়াখালি ব্রিজের কাছে একটি অ্যাম্বুলেন্সের সঙ্গে মোটরসাইকেলের সংঘর্ষে ঘটনাস্থলেই প্রাণ হারান রানা। সঙ্গে থাকা সেতুও হাসপাতালে নেওয়ার পর মারা যান ।
রানার মৃত্যুতে জাতীয় দলের ড্রেসিং রুমে নেমে আসে শোকের ছায়া। বিশ্বকাপের প্রস্তুতি চলাকালীন এই খবর দলের মনোবলে আঘাত হানে। তবে পরদিন ভারতের বিপক্ষে ম্যাচে খেলোয়াড়রা কালো আর্মব্যান্ড পরে মাঠে নামেন এবং রানার স্মৃতিতে জয় উৎসর্গ করেন।
চিরস্মরণীয় রানা
রানার মৃত্যুতে দেশের ক্রিকেটে অপূরণীয় এক ক্ষতি হয়ে গেছে। বাঁহাতি অলরাউন্ডার হিসেবে তার ভালো সম্ভাবনা ছিল। কে জানে, হয়তো সাকিব আল হাসানের মতো আরেকজন বিশ্বসেরা বাঁহাতি স্পিন বোলিং অলরাউন্ডার হয়ে উঠতেন তিনি। কিন্তু মৃত্যু তার সম্ভাবনাকেই অকালেই থামিয়ে দেয়।
রানার স্মৃতিকে অমর করে রাখতে খুলনার শেখ আবু নাসের স্টেডিয়ামে তার নামে একটি স্ট্যান্ড নির্মাণ করা হয়েছে। তবে এর চেয়েও বড় কথা, রানার অবস্থান দেশের ক্রিকেটপ্রেমীদের হৃদয়ে।
এমএইচএম