ঢাকা, শনিবার, ১৪ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

ক্রিকেট

শেষ বিকেলের দুই উইকেটে দিন বাংলাদেশের

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট, স্পোর্টস | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৬৪৭ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ১৪, ২০২২
শেষ বিকেলের দুই উইকেটে দিন বাংলাদেশের ছবি : উজ্জ্বল ধর

চট্টগ্রাম থেকে : শীত আসি আসি করা দিনের সুন্দর সকাল। বাংলাদেশও যেন সূর্যের মতো আলো ছড়ালো একটু একটু করে।

দিনের দৈর্ঘ্য যত বাড়ল, ততই অবশ্য সঙ্গী হলো হতাশা। কখনো ক্যাচ ছেড়ে হতাশ করলেন এবাদত হোসেন-নুরুল হাসান সোহান। কখনো আবার এবাদতের বল লেগে স্টাম্পের আলো জ্বললেও পড়লো না বেল।  

প্রথম সেশনের তিন উইকেটের স্বস্তির পর দ্বিতীয় সেশনের শুরুতেই মিলেছিল উইকেট। কিন্তু এরপর দীর্ঘক্ষণ নানা ঘটনায় হতাশ হতে হয় বাংলাদেশকে। শেষ বিকেলে আবারও উইকেট এনে দিয়ে পরে স্বস্তি দেন দিনজুড়ে দুর্দান্ত বোলিং করা তাইজুল ইসলাম। পরে মেহেদী হাসান মিরাজ দিনের একদম শেষ বলে উইকেট নিয়ে দিনটি পুরোপুরি নিজেদের করে নেন।

চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে দুই ম্যাচ টেস্ট সিরিজের প্রথমটিতে মুখোমুখি হয়েছে বাংলাদেশ-ভারত। টস জিতে ব্যাট করতে নেমে প্রথম দিনশেষে ৬ উইকেট হারিয়ে ২৭৮ রান করেছে সফরকারীরা।  

দিনের প্রথম ঘণ্টার শেষদিকে গিলকে ফেরান তাইজুল। ইনিংসের ১৪তম ওভারে দ্বিতীয় বল লেগ স্টাম্পে ফুল লেন্থে করেন তাইজুল। প্যাডল সুইপ করতে গিয়ে টপ এজ হয়ে যায় গিলের। প্রথম স্লিপে দাঁড়ানো ইয়াসির আলি রাব্বি সহজ ক্যাচ নেন লেগ স্লিপ পজিশনে গিয়ে। ৩ চারে ৪০ বলে ২০ রান করেন গিল।  

চার ওভার পর আরেক উদ্বোধনী ব্যাটার ও অধিনায়ক লোকেশ রাহুলকে সাজঘরে ফেরান খালেদ আহমেদ। তার লেন্থ বল লাইনে না গিয়ে ব্যাট চালান রাহুল, ব্যাটে ইনসাইড এজ হয় বল আঘাত হানে স্টাম্পে। বোল্ড আউট হয়ে হতাশায় মাঠ ছাড়েন রাহুল। ৩ চারে ৫৪ বলে ২২ রান করে সাজঘরে ফেরেন তিনি।  

বাংলাদেশের জন্য বড় বাধা হতে পারতেন কোহলি। তাকেও ক্রিজে বেশিক্ষণ থাকতে দেননি তাইজুল ইসলাম। তার দারুণ এক ডেলেভারি কোহলির প্যাডে লাগলে আউট দেন আম্পায়ার। ভারতীয় ব্যাটার রিভিউ নিলেও বাঁচতে পারেননি। ৫ বলে ১ রান করেই ফিরতে হয় কোহলিকে।  

এরপর হাল ধরেন চেতেশ্বর পূজারা ও ঋষভ পন্থ। নিজের স্বভাবসুলভ ব্যাটিং করতে থাকেন পন্থ। ৪ চার ও ১ ছক্কায় ২৬ বলে ২৯ রান করে যান লাঞ্চের বিরতিতে। দ্বিতীয় সেশনের দ্বিতীয় বলেই এবাদতের ওভারে পূজারা ক্যাচ দিয়েছিলেন উইকেটের পেছনে। কিন্তু নুরুল হাসান সোহান ধরতে পারেননি সেটি।

কিছুক্ষণ পর পন্থকে ফিরিয়ে স্বাগতিক শিবিরে স্বস্তি আনেন মেহেদী হাসান মিরাজ। তার আর্ম বলে প্লেইড অন হয়ে সাজঘরে ফেরত যান পন্থ। ৬ চার ও ২ ছক্কায় ৪৫ বলে ৪৬ রান করেন তিনি। ভাঙে পূজারার সঙ্গে তার ৬৪ রানের জুটি। দ্বিতীয় সেশনের বাকি সময় শ্রেয়াস আয়ারের সঙ্গে কাটিয়ে দেন পূজারা।  

তৃতীয় সেশনে ছুটতে থাকেন তারা। এর মধ্যে মিরাজের করা ৭৬তম ওভারে জীবন পান শ্রেয়াস আয়ার। মিডউইকেটে দাঁড়িয়ে তার লোপ্পা ক্যাচ ছাড়েন এবাদত হোসেন। জীবন পেয়ে ছুটছেন আয়ার। প্রথম দিনশেষে তাকে আউট করতে পারেননি বাংলাদেশের বোলাররা।  

এদিকে ইনিংসের ৮৪তম ওভারে ঘটে অদ্ভূত এক ঘটনা। কয়েক বল আগেই স্টাম্পের বেল বদলানো হয়। এবাদতের করা পঞ্চম বলে স্টাম্পে লেগেও ভাঙেনি উইকেট। বেল ও স্টাম্পের বাতি জ্বললেও আয়ার থাকেন অপরাজিত। তাকে ফেরাতে না পারলেও আরেক প্রান্তে দাঁড়িয়ে থাকা পূজারাকে ঠিকই ফিরিয়েছে বাংলাদেশ।  

দিনে বেশ কয়েকবারই পূজারাকে পরাস্ত করেছিলেন তাইজুল। কিন্তু পাচ্ছিলেন না কাঙ্ক্ষিত উইকেটের দেখা। ৮৫তম ওভারে এসে পূর্ণ হয় তার আকাঙ্ক্ষা। অফ স্টাম্পের বাইরে থেকে হালকা টার্ন করা বল আঘাত হানে স্টাম্পে। সেঞ্চুরির আক্ষেপ নিয়ে ১১ চারে ২০৩ বলে ৯০ রান করে ফিরতে হয় পূজারাকে। আয়ারের সঙ্গে ১৪৯ রানের জুটি ভাঙে।  

এরপর আরও এক উইকেট নিয়ে দিনটি পুরোপুরি নিজেদের করে নেওয়ার সুযোগ ছিল বাংলাদেশের সামনে। তাইজুলের বলে অক্ষর প্যাটেলের ব্যাটে লেগে ক্যাচ ধরেন। আবেদন করলেও আম্পায়ার আউট দেননি। রিভিউ নিলে ফিরতে হতো ভারতীয় ব্যাটারকে। পরে কিছুটা কঠিন ক্যাচ ফেলেন সোহান। সারাদিনে সবমিলিয়ে তিনটি সুযোগ হারিয়েছেন এই উইকেটরক্ষক।

দিন পুরোপুরি বাংলাদেশের করার দায়িত্ব নেন মেহেদী হাসান মিরাজ। এই স্পিনার ২৬ বলে ১৩ রান করা অক্ষর প্যাডেলকে এলবিডব্লিউ করেন। ভারতীয় ব্যাটার রিভিউ নিলেও বাঁচতে পারেননি। তার আউটের পরই দিনের খেলার শেষ ঘোষণা করা হয়।  

১৬৯ বলে ৮২ রান করে অপরাজিত আছেন আয়ার। বাংলাদেশের পক্ষে ৩০ ওভার হাত ঘুরিয়ে ৮৪ রান দিয়ে ৩ উইকেট নিয়েছেন তাইজুল ইসলাম। ১৮ ওভারে ৭১ রান দিয়ে ২ উইকেট নিয়েছেন মিরাজ। ১২ ওভারে ১ উইকেট পেয়েছেন খালেদ আহমেদও।  

বাংলাদেশ সময় : ১৪১৫ ঘণ্টা, ১৪ ডিসেম্বর, ২০২২
এমএইচবি
 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।