ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

কর্পোরেট কর্নার

সিঙ্গাপুরে রমজান সম্প্রীতির চমৎকার পরিবেশ তৈরি করে

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৮৫৩ ঘণ্টা, মে ২৮, ২০১৯
সিঙ্গাপুরে রমজান সম্প্রীতির চমৎকার পরিবেশ তৈরি করে সিঙ্গাপুরের বিখ্যাত সুলতান মসজিদ। ছবি: সংগৃহীত

রমজান মাসে সিঙ্গাপুরে ভিন্ন এক পরিবেশ তৈরি হয়। সর্বত্র বিরাজকরে অপার্থিব হাওয়া। মুসলিমদের পাশাপাশি অমুসলিমরাও শরিক হয় রমজানের ইফতারে। নগরের মসজিদগুলোতে ভিড় লেগে থাকে মুসল্লিদের। তাই ইফতারের প্রস্তুতিতে মানুষের থাকে নানামুখী প্রস্তুতি ও সহযোগিতা। এতে সম্প্রীতি ও ভালোবাসার এক অনাবিল শান্তিচিত্র বিরাজ করে সবার মাঝে। ইফতার পরিণত হয় অবিচ্ছেদ্য নাগরিক সংস্কৃতিতে। পাড়া-প্রতিবেশী ও বন্ধু-বান্ধবদের সঙ্গে খাবার গ্রহণের অন্যতম মাধ্যম হয় ইফতার।

সিঙ্গাপুরের মসজিদগুলোতে নামাজের সময় ছড়াও মুসল্লিদের ভিড়।  ছবি: সংগৃহীত

মুসলিম নাগরিকদের ভাব-গাম্ভীর্যপূর্ণ ধর্মীয় আচার-অনুষ্ঠানের প্রতি অমুসলিমদেরও থাকে শ্রদ্ধাবোধ।

তাই রমজানে অনেক অমুসলিম দিনের বেলা প্রকাশ্যে খাবার খাওয়া থেকে বিরত থাকেন। সম্প্রীতি ও সৌহার্দের সঙ্গে এখামে নানা বর্ণ ও ধর্মের লোক বসবাস করে।

সিঙ্গাপুরের বাজারগুলো রমজান উপলক্ষে সাজে নতুন রূপে।  ছবি: সংগৃহীত

রমজান আসার আগেই সিঙ্গাপুরের শহর-নগর সেজে ওঠে ঝাড়-বাতির বর্ণিল সাজে। পথ-ঘাট, মসজিদের গম্বুজ ও মিনারগুলোর অপরূপ সাজ আকর্ষণ করে মানুষের হৃদয়-মন। অনেকে আবার মসজিদেই ইফতার সম্পন্ন করে। তাই মসজিদকেন্দ্রিক ইফতারের সংস্কৃতিও গড়ে ওঠেছে। অনেকে বাসা থেকে মসজিদগুলোতে ইফতার পাঠায়। তবে বেশিরভাগ সময় অত্যাধিক ইফতার হওয়ায় মসজিদে ইফতার গ্রহণ করা হয় না। ইফতারের আগ মুহূর্ত পর্যন্ত মসজিদে কোরআন-হাদিসের আলোচনা হয়। ইফতারে খেজুর, জুস, ফলফলাদি ছাড়াও বিরিয়ানি ও অন্যান্য খাবার থাকে।

সিঙ্গাপুরের ইফতার।  ইফতারের সিঙ্গাপুর।  ছবি: সংগৃহীত

সিঙ্গাপুরের কাম্পুনগ্লাম শহরের ঠিক মাঝে অবস্থিত সুলতান মসজিদ। নানা ধর্ম-বর্ণ লোকের বসবাস এ নগরে। ইফতারের মুহূর্তে এ মসজিদে এসে সমবেত হয় নানা শ্রেণির মানুষ। আরব স্ট্রিটে অবস্থিত অস্থায়ী দোকানগুলোতে লেগে থাকে প্রচণ্ড ভীড়। রমজান উপলক্ষ্যে ব্যবস্থা করা আরবের স্থানীয় অনেক দুর্লভ খাবারের। ফলে সিঙ্গাপুর ভ্রমণে বিভিন্ন দেশের মুসলিম পর্যটকদের দারুণ আগ্রহ তৈরি হয়।

সিঙ্গাপুরের রমাজান উপলক্ষে শিশুর উচ্ছ্বাস।  ছবি: সংগৃহীত

বিভিন্ন পণ্য ও খাবারের বাজার এবং বিরিয়ানি দিয়ে ইফতার করা সিঙ্গাপুরে রমজানের অন্যতম একটি দৃশ্য। রমজান উপলক্ষে সিঙ্গাপুরে গড়ে ওঠে অনেক নামীদামি বাজার। ঐতিহ্যবাহী মালাই খাবারের প্রসিদ্ধ লালোলাং বাজার। আরব স্ট্রিটে সুলতান মসজিদের পাশে গড়ে ওঠা সুলতান বাজারও খাবারের জন্য বেশ বিখ্যাত।

সিঙ্গাপুরের বিখ্যাত সুলতান মসজিদ।  ছবি: সংগৃহীত

মসজিদে মাওয়াদ্দার রমজান উপলক্ষে গড়ে ওঠা বাজারও সবার কাছে বেশ পরিচিত। মুসলিম-অমুসলিম সবাই এখানে এসে আসে। তবে রমজানের নির্দষ্ট কয়েকদিনের জন্য এসব বাজারের ব্যবস্থা করা হয়।

ঈদের সেলামি নিচ্ছে সিঙ্গাপুরের ক্ষুদে মুসল্লি।  ছবি: সংগৃহীত

রমজানের শেষ দশ দিন মুসলিম পরিবারের ছোট-বড় সবার মনোযোগ নিবদ্ধ থাকে মসজিদের আঙিনায়। তাই তাবু টাঙিয়ে সবার জন্য শোয়ারও ব্যবস্থা করা হয়। মসজিদে নামাজ আদায় করে তাবুতে গিয়ে সবাই বিশ্রাম নেয়। লাইতুল কদরের সন্ধানে ইবাদতে যত্নবান থাকে সবাই। আর ঈদের রাতে সবার মনে বিরাজ করে অনাবিল আনন্দ-উচ্ছ্বাস। কেটুপাত নামে এক ধরনের খাবার তৈরি করা হয় ঈদের রাতে, যা ঈদের দিন ভুনা মাংসের সঙ্গে সবাই খায়।

ঈদ-আনন্দে উচ্ছ্বসিত সিঙ্গাপুরের মুসলিম শিশুরা।  ছবি: সংগৃহীত

দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার সর্বাধুনিক রাষ্ট্র সিঙ্গাপুরের মোট জনসংখ্যা ৫.৬ মিলিয়নের মাত্র ১৫ শতাংশ মুসলিম। মালয়, চীনা, ইয়ামানের হাদরামি, ভারতীয়, কোকেশিয়ানসহ নানান লোকের বসবাস এখানে। তাছাড়া সিঙ্গাপুর বিশ্বের চতুর্থ অর্থনৈতিক কেন্দ্র হিসেবে পরিচিত। নানান সংস্কৃতির লোকের সম্মিলন ঘটে এখানে। মোট জনসংখ্যার প্রায় অর্ধেক শিক্ষা বা কাজের উদ্দেশ্যে সেখানে বসবাস করে। তাই পৃথিবীর বহুজাতিক রাষ্ট্রগুলোর মধ্যেও গণ্য করা হয় সিঙ্গাপুরকে। রমজানে মুসলিম পর্যটকদের আকৃষ্ট করতে নেওয়া হয় বিভিন্ন পদক্ষেপ। দেশের পর্যটন বিভাগ সুষ্ঠুভাবে তা পরিচালনা করে থাকে।

রমজানবিষয়ক যেকোনো লেখা আপনিও দিতে পারেন। লেখা পাঠাতে মেইল করুন: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৩ ঘন্টা, মে ২৮, ২০১৯
এমএমইউ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।