ঢাকা, রবিবার, ২৭ আশ্বিন ১৪৩২, ১২ অক্টোবর ২০২৫, ১৯ রবিউস সানি ১৪৪৭

কর্পোরেট কর্নার

ইউনিলিভার বাংলাদেশের কালুরঘাট কারখানা পরিদর্শনে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যদূত

বিজনেস ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১:৫৯, অক্টোবর ১২, ২০২৫
ইউনিলিভার বাংলাদেশের কালুরঘাট কারখানা পরিদর্শনে যুক্তরাজ্যের বাণিজ্যদূত

ঢাকা: দেশের শীর্ষস্থানীয় নিত্য-ব্যবহার্য ও ভোগ্যপণ্য (এফএমসিজি) উৎপাদন ও বিপণনকারী প্রতিষ্ঠান ইউনিলিভার বাংলাদেশ লিমিটেডের (ইউবিএল) চট্টগ্রামের কালুরঘাট কারখানা পরিদর্শন করেছেন যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশবিষয়ক ট্রেড এনভয় দ্য রাইট অনারেবল ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন ডিবিই, বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার হার এক্সেলেন্সি সারা কুক এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনের ঊর্ধ্বতন প্রতিনিধিদল।
    
পরিদর্শনকালে প্রতিনিধিদলকে স্বাগত জানান ইউনিলিভার বাংলাদেশের জ্যেষ্ঠ কর্মকর্তারা।

তাদের মধ্যে উপস্থিত ছিলেন ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার, চিফ ফাইন্যান্স অফিসার ও ফাইন্যান্স ডিরেক্টর জিনিয়া হক, করপোরেট অ্যাফেয়ার্স, পার্টনারশিপস অ্যান্ড কমিউনিকেশনস ডিরেক্টর শামিমা আক্তার  এবং কালুরঘাট কারখানার হেড অব ফ্যাক্টরি এস এম তারেক সাইফুল্লাহ।
 
এ উচ্চপর্যায়ের সফরটি ছিল এমন একটি সুযোগ, যেখানে ইউনিলিভারের বাংলাদেশে দীর্ঘ পথচলার সূচনা ও ঐতিহ্য তুলে ধরার হয়। ১৯৬২ সালে চট্টগ্রামের কালুরঘাটে প্রথম সাবান উৎপাদন কারখানা প্রতিষ্ঠার মধ্য দিয়ে ইউনিলিভারের বাংলাদেশে কার্যক্রমের যাত্রা শুরু হয়, যা ছয় দশকজুড়ে গড়ে তুলেছে অংশীদারিত্ব, উদ্ভাবন ও আস্থার এক উজ্জ্বল ঐতিহ্য। বর্তমানে ইউনিলিভার বাংলাদেশের প্রতিটি ঘরে ঘরে উচ্চারিত নাম, যার ২১টিরও বেশি আইকনিক ব্র্যান্ডের ৯৬ শতাংশের বেশি দেশেই উৎপাদিত হয়। ১৯৭৩ সাল থেকে ইউনিলিভার বাংলাদেশের ৩৯.২৫ শতাংশ শেয়ারের মালিকানা রয়েছে বাংলাদেশ সরকারের, যা সরকারি–বেসরকারি অংশীদারিত্বের এক অনন্য ও সফল দৃষ্টান্ত।

কর্ণফুলী নদীর তীরে ১৫ একর জমিতে গড়ে ওঠা ইউনিলিভারের কালুরঘাট কারখানাটি উদ্ভাবন ও দৃঢ়তার প্রতীক।

২০১৪ সাল থেকে কারখানাটি ‘জিরো ওয়েস্ট টু ল্যান্ডফিল’ রেকর্ড ধরে রেখেছে এবং ২০২১ সালে অর্জন করেছে শতভাগ নবায়নযোগ্য জ্বালানির সার্টিফিকেশন। প্রক্রিয়াগত উন্নয়নের মাধ্যমে ২০১০ সাল থেকে কারখানাটি সাশ্রয় করেছে ২৪০ কোটি লিটার পানি, যা ইউনিলিভারের টেকসই উৎপাদন ও দায়িত্বশীল প্রবৃদ্ধির প্রতিশ্রুতির প্রতিফলন।

পরিদর্শনকালে প্রতিনিধিদল কারখানার উৎপাদন লাইন ও নিরাপত্তা ব্যবস্থা ঘুরে দেখেন এবং কারখানার কর্মকর্তা  ও কর্মীদের সঙ্গে টেকসই উৎপাদন প্রক্রিয়া সম্পর্কে মতবিনিময় করেন। কারখানার প্রধান এস এম তারেক সাইফুল্লাহ প্রতিনিধিদলকে বিভিন্ন ইউনিটের কার্যক্রম সম্পর্কে অবহিত করেন এবং কেজিএফকে একটি আধুনিক, ভবিষ্যতমুখী উৎপাদন কেন্দ্রে রূপান্তরের যাত্রা তুলে ধরেন। সফর শেষে প্রতিনিধিদল বৃক্ষরোপণ কর্মসূচিতে অংশ নিয়ে একটি সবুজ ও টেকসই ভবিষ্যতের প্রতি তাদের যৌথ প্রতিশ্রুতি পুনর্ব্যক্ত করেন।

হার এক্সেলেন্সি ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন ডিবিই বলেন, ইউনিলিভারের কালুরঘাট কারখানা পরিদর্শন আমার জন্য একটি সমৃদ্ধ ও অনুপ্রেরণাদায়ী অভিজ্ঞতা। কর্মীদের সবার আন্তরিকতা, উদ্যম আর ইতিবাচক মনোভাব সত্যিই প্রশংসনীয়। দেশের মানুষের জন্য মানসম্মত পণ্য তৈরি করতে ইউনিলিভারের টেকসই উৎপাদন ব্যবস্থা ও আধুনিক দৃষ্টিভঙ্গি আমাকে গভীরভাবে মুগ্ধ করেছে। ব্রিটিশ ঐতিহ্যের একটি প্রতিষ্ঠান যেভাবে বাংলাদেশের উন্নয়নযাত্রার অংশ হয়ে উঠেছে, তা দুই দেশের সহযোগিতা ও বন্ধুত্বের এক সুন্দর দৃষ্টান্ত।

বাংলাদেশে নিযুক্ত যুক্তরাজ্যের হাইকমিশনার হার এক্সেলেন্সি সারাহ কুক বলেন, বাংলাদেশের অন্তর্ভুক্তিমূলক ও সবুজ প্রবৃদ্ধির যাত্রা সত্যিই অনুপ্রেরণাদায়ক। ইউনিলিভারের মতো দীর্ঘদিন ধরে বিনিয়োগ করা ও স্থানীয়ভাবে অঙ্গীকারবদ্ধ ব্রিটিশ প্রতিষ্ঠানগুলো এই পরিবর্তনের গুরুত্বপূর্ণ অংশীদার। টেকসই উন্নয়ন ও জীবিকার স্থিতিশীলতায় তাদের বিনিয়োগ সেই দূরদর্শী নেতৃত্বেরই নিদর্শন, যা বাংলাদেশের অগ্রযাত্রার জন্য প্রয়োজন।

ইউনিলিভার বাংলাদেশের চেয়ারম্যান ও ব্যবস্থাপনা পরিচালক জাভেদ আখতার বলেন, ছয় দশকেরও বেশি সময় ধরে কালুরঘাট কারখানাটি ইউনিলিভার বাংলাদেশের উন্নয়ন, উদ্ভাবন আর পরিবর্তনের প্রতীক হিসেবে কাজ করছে। সাবান তৈরির এক ছোট উদ্যোগ থেকে শুরু করে আজকের আধুনিক অটোমেশন ও টেকসই উৎপাদনের এই যাত্রা আমাদের দেশের শিল্প বিকাশের ইতিহাসকেও তুলে ধরে। আমরা গর্বিত যে, যুক্তরাজ্যের বাংলাদেশ বিষয়ক ট্রেড এনভয় ব্যারোনেস রোজি উইন্টারটন ডিবিই এবং ব্রিটিশ হাইকমিশনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা প্রথমবারের মতো চট্টগ্রামে আমাদের কারখানা পরিদর্শন করেছেন। তাদের সুচিন্তিত মন্তব্য ও উৎসাহ শিল্পের উৎকর্ষ ও টেকসই অগ্রগতির পথে এগিয়ে যেতে আমাদের আরও আত্মবিশ্বাসী করে তুলেছে।

সফরকালে ইউনিলিভারের ভবিষ্যৎ-উপযোগী টেকসই উন্নয়ন যাত্রার বিভিন্ন উদ্যোগগুলোও তুলে ধরা হয়, যা জলবায়ু সহনশীলতা, প্লাস্টিক হ্রাস, ডিজিটাল অন্তর্ভুক্তি এবং কমিউনিটি ক্ষমতায়নের মতো নানা ক্ষেত্রে বিস্তৃত। উদ্ভাবনকে কেন্দ্রে রেখে ইউনিলিভার বাংলাদেশ জাতীয় উন্নয়ন অগ্রাধিকারগুলোর সঙ্গে নিজেদের ব্যবসায়িক কৌশল সমন্বয় করে কাজ করছে, যাতে অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি ও সামাজিক কল্যাণ একসাথে অগ্রসর হয়।

আরআইএস

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।