ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

সুরমার পানি বৃদ্ধি, সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১০৭ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২০
সুরমার পানি বৃদ্ধি, সুনামগঞ্জে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি

সুনামগঞ্জ: সুনামগঞ্জে সুরমার পানি বেড়ে ৭০ সেন্টিমিটার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হচ্ছে। ফলে নদী তীরবর্তী এলাকা ও নিম্নাঞ্চলে বন্যা পরিস্থিতি অবনতি হয়েছে।

রোববার (২৮ জুন) সকাল ৯টায় সুরমা নদীর ষোলঘর পয়েন্ট ৭০ সেন্টিমিটার পানি রেকর্ড করা হয়। গতকাল যা ছিল ৫৭ সেন্টিমিটার।

এক দিনের ব্যবধানে পানি বৃদ্ধি পেয়েছে ১৩ সেন্টিমিটার।

গত ২৪ ঘণ্টায় সুনামগঞ্জ সদর উপজেলায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ২১৩ মিলিমিটার। এদিকে তাহিপুর উপজেলায় বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে ৩৬০ মিলিমিটার। যা এই কয়েক দিনের মধ্যে সর্বোচ্চ বৃষ্টিপাত।

আবহাওয়া বার্তার বরাত দিয়ে পানি উন্নয়ন বোর্ড জানিয়েছে, বন্যার পানি আরও বাড়তে পারে আগামী এক দুই দিন। তবে সেটা নির্ভর করছে ভারতে চেরাপুঞ্জিতে কী পরিমাণ বৃষ্টিপাত হয় তার ওপর। ওই এলাকায় যদি বৃষ্টিপাতের পরিমাণ বৃদ্ধি পায় তাহলে সুনামগঞ্জে পানি হু হু করে বেড়ে যাবে।  

এদিকে পানি বাড়ার কারণে আতঙ্কিত হয়ে পড়েছে সুনামগঞ্জ শহরের বাসিন্দারা। নিচু এলাকা গতকাল শনিবার প্লাবিত হলেও নতুন করে পানি বাড়ার ফলে উঁচু এলাকার মানুষের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। বৃষ্টির পরিমাণ আরও বৃদ্ধি পেলে এবং এক থেকে দেড় ফুট পানি বৃদ্ধি পেলে উঁচু ঘরবাড়িতেও পানি ওঠে যাবে।

এখনও সুনামগঞ্জ শহরে বিভিন্ন এলাকা পানিতে ডুবে আছে। শহরে তেঘরিয়া, আরপিন নগর, বড়পাড়া, কাজির পয়েন্ট যোষলঘর, ওয়েজখালি, মল্লিকপুরসহ বিভিন্ন এলাকা পানির নিচে।  
 
মুদি দোকানে ঢুকে পড়েছে বন্যার পানি।  ছবি: বাংলানিউজবন্যার পানি বেড়ে যাওয়ার কারণে সদর উপজেলার পক্ষ থেকে সদর ও পৌর এলাকার সব স্কুল খুলে দেওয়া হয়েছে। যাদের বাড়িতে পানি ওঠে গেছে তাদের স্কুলে গিয়ে আশ্রয় নেওয়ার জন্য আহ্বান জানানো হয়েছে। অথবা যেকোনো জরুরি প্রয়োজনে (০১৭৫২৪৭৬৪৫১ ও ০১৭১৬৮৮৫১৪৪) নম্বরে যোগাযোগ করার জন্য বলা হয়েছে সদর উপজেলার ফেসবুক পেজ থেকে।

এদিকে সুনামগঞ্জ শহরের মানুষ তথা পুরো জেলার মানুষ হঠাৎ এই বন্যা ও কোভিড-১৯ করোনা ভাইরাসের মধ্যে পড়েছেন চরম বিপাকে। কারো কারো বাড়িতে পানি ওঠে সব কিছু ভিজে গেছে। জেলার তাহিপুর, বিশ্বম্ভরপুর ও দোয়ারাবাজার উপজেলার বিভিন্ন এলাকা বন্যার পানিতে প্লাবিত হয়ে গেছে।

সদর উপজেলার লালপুর গ্রামের সড়ক পানিতে ডুবে যাওয়ার ফলে তাহিপুর–বিশ্বম্ভরপুর উপজেলার সঙ্গে প্রায় সড়ক যোগাযোগ বন্ধ রয়েছে। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে জরুরি প্রয়োজনে কেউ কেউ যাচ্ছেন এই সড়ক দিয়ে।

দোয়ারাজার উপজেলার সুরমা ইউনিয়ন, সদর ইউনিয়ন ও লক্ষ্মীপুর ইউনিয়ন পানিতে প্লাবিত হয়ে বন্যার সৃষ্টি হয়েছে। এ ছাড়া বৃষ্টি বাড়লেই দোহালিয়া ও পান্ডার গাঁও ইউনিয়নে পানি প্রবেশ করে বন্যার সৃষ্টি হবে।

তাহিপুর উপজেলা লাউড় গড়ে আজ রেকর্ড পরিমাণ বৃষ্টি হয়েছে। এই উপজেলার প্রায় সব গ্রাম বন্যার পানিতে প্লাবিত। বিশ্বম্ভরপুর উপজেলায় বিভিন্ন গ্রাম প্লাবিত হয়ে মানুষসহ গৃহপালিত পশু পাখি নিয়ে বিপাকে পড়েছেন গৃহস্থরা।

সুনামগঞ্জ পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী সবিবুর রহমান বাংলানিউজকে জানিয়েছেন, সুনামগঞ্জে বন্যার পানি কমার কোনো সম্ভাবনা নেই দুই দিনের মধ্যে। বরং যে বৃষ্টি অব্যাহত রয়েছে তাতে পানি বাড়ার আশঙ্কা রয়েছে। আজকে তাহিপুররের লাড়উগড়ে ৩৬০ মিলিমিটার বৃষ্টিপাত রেকর্ড করা হয়েছে।

বাংলাদেশ সময়: ১১০০ ঘণ্টা, জুন ২৮, ২০২০
আরএ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।