ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

ঢাকায় বায়ু দূষণের অসহনীয় মাত্রার তিন কারণ: পরিবেশমন্ত্রী

স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৫৬ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৯
ঢাকায় বায়ু দূষণের অসহনীয় মাত্রার তিন কারণ: পরিবেশমন্ত্রী

ঢাকা: রাজধানীর আশেপাশের ইটভাটা, ইচ্ছা অনুযায়ী নির্মাণ কাজ ও মোটরযানের ধোঁয়ার কারণে ঢাকায় বায়ু দূষণের মাত্রা অসহনীয় পর্যায়ে চলে গেছে বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী মো. শাহাব উদ্দিন।

তিনি বলেছেন, গত আট বছর ধরে এই তিন উৎস ক্রমেই বাড়ছে। ফলে বায়ু দূষণ মোকাবিলায় দূষণের উৎস বন্ধ করে শহরের বিভিন্ন স্থানে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তুলতে হবে।

পাশাপাশি ঢাকার চারপাশের জলাশয়গুলোকে রক্ষা করতে হবে। একইসঙ্গে সরকারি-বেসরকারি অবকাঠমো ও বিভিন্ন কাজে সমন্বয় করা প্রয়োজন।

সোমবার (২৫ নভেম্বর) সচিবালয়ে পরিবেশ বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের সভাকক্ষে ঢাকার বায়ু ও শব্দ দূষণ বিষয়ে আন্তঃমন্ত্রণালয় সভার শুরুতে তিনি এসব কথা বলেন।

পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রী বলেন, কীভাবে জনগণকে বায়ু দূষণ থেকে মুক্ত করতে পারি সেজন্য এ সভা ডাকা হয়েছে। ঢাকা সিটিতে বায়ু দূষণের বিভিন্ন কারণ রয়েছে। ইউটিলিটি সার্ভিসের কাজের জন্য সংস্থাগুলোর মধ্যে সমন্বয় করতে হবে। এলিভেটেট এক্সপ্রেস-হাইওয়েসহ বিভিন্ন প্রকল্পের জন্য সঠিক ব্যবস্থাপনা নিশ্চিত করতে হবে।

‘শহরের বিভিন্ন স্থানে ভবন নির্মাণের সময় পানি ছেটানো, নির্মাণসামগ্রী যত্রতত্র ফেলে না রাখা ও এগুলো নির্ধারিত বেষ্টনীর মধ্যে আছে কিনা সেটি দেখতে হবে। ঢাকা সিটি করপোরেশনের বায়ু দূষণের অবস্থা দিন দিন খারাপ হচ্ছে। এ সমস্যা রোধে মূল দায়িত্ব পরিবেশ অধিদপ্তরের। ইটভাটার বিরুদ্ধে অভিযান বাড়ানো হয়েছে। ’

মন্ত্রী আরও বলেন, রাস্তার ফেলে দেওয়া বর্জ্য ও ময়লা আবর্জনার ওপর দিয়ে যানবাহন চলাচলের ফলে বায়ু দূষণের সৃষ্টি হচ্ছে। এ বিষয়ে অবকাঠামোগত উন্নয়ন ও নির্মাণ কার্যক্রমের বায়ু দূষণ নিয়ন্ত্রণে মহামান্য হাইকোর্ট বিভাগ কর্তৃক সুনির্দিষ্ট নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে। নির্দেশনা অনুযায়ী পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় কর্তৃক প্রতিমাসে হাইকোর্ট বিভাগে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন দাখিল করতে হয়। প্রকৃতি সংরক্ষণ বিষয়ক সংস্থাগুলোর আন্তর্জাতিক জোট আইইউসিএনের এ দেশিয় পরিচালক রাকিবুল আমিনের মতে, বায়ুদূষণ মোকাবিলার প্রথম কাজ হচ্ছে দূষণের উৎস বন্ধ করা। দ্বিতীয় কাজ হচ্ছে শহরের বিভিন্ন স্থানে সবুজ বেষ্টনী গড়ে তোলা এবং জলাশয়গুলো রক্ষা করা। এই দূষিত বায়ুর মাধ্যে নগরের মানুষ কীভাবে নিরাপদ থাকবে, সেই ব্যবস্থাপনা গড়ে তোলা। তবে সবার আগে বায়ু দূষণকে জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ সংকট হিসেবে দেখতে হবে।

বাংলাদেশে বায়ু দূষণের উৎস নিয়ে চলতি বছরের মার্চে একটি গবেষণা প্রকাশ করে পরিবেশ অধিদপ্তর ও বিশ্ব ব্যাংক। তাতে দেখা যায়, দেশে বায়ু দূষণের প্রধান তিনটি উৎস হচ্ছে ইট ভাটা, যানবাহনের কালো ধোঁয়া ও নির্মাণ কাজ। আট বছর ধরে এই তিন উৎস ক্রমেই বাড়ছে।

২০১৩ সালে পরিসংখ্যান ব্যুরো থেকে দেশের ইটভাটাগুলোর ওপর একটি জরিপ করা হয়। তাতে দেখা যায়, দেশে ইটভাটার সংখ্যা ৪ হাজার ৯৯৫টি। পরে ২০১৮ সালে পরিবেশ অধিদপ্তর থেকে পরিচালিত জরিপে দেখা যায় ইটভাটার সংখ্যা বেড়ে ৭ হাজার ৯০২টি হয়েছে। এর মধ্যে ২ হাজার ৪৮৭ টি ইটভাটা ঢাকা বিভাগের মধ্যে গড়ে উঠেছে।

ওই গবেষণার তথ্য অনুযায়ী, ২০১০ সালে দেশে মোট যানবাহনের পরিমাণ ছিল ৩ লাখ ৬৯ হাজার ৬৭৭টি। ২০১৮ সালে তা বেড়ে হয়েছে ৬ লাখ ১৯ হাজার ৬৫৪টি।

বাংলাদেশ সময়: ১৬৫৫ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৫, ২০১৯
জিসিজি/এইচএডি/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।