ঢাকা, শুক্রবার, ১৫ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

সাগরে পানির উচ্চতা বাড়ায় ঝুঁকির মুখে কোটি কোটি মানুষ 

আন্তর্জাতিক ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩০৮ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৯
 সাগরে পানির উচ্চতা বাড়ায় ঝুঁকির মুখে কোটি কোটি মানুষ 

জলবায়ু সংকটের ফলে সাগরে পানির উচ্চতা বেড়ে যাওয়ায় মারাত্মক ঝুঁকির মুখে রয়েছেন বিশ্বের বিভিন্ন দেশের কোটি কোটি মানুষ। আগামী কয়েক যুগের মধ্যে অনেক দেশেই আস্ত শহর ডুবে যাওয়ার আশঙ্কা রয়েছে। এতে ঘরহারা হতে পারে কয়েক কোটি মানুষ। 

বিজ্ঞান বিষয়ক আন্তর্জাতিক জার্নাল ‘ন্যাচার কমিউনিকেশনস’ প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদন থেকে এ তথ্য জানা যায়। কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা ও পরিসংখ্যানের ওপর ভিত্তি করে এ গবেষণা চালানো হয়।

 

এতে বলা হয়, বিশ্বব্যাপী চলমান জলবায়ু সংকট বাড়তে থাকলে আগামী তিন যুগে সাগরে পানির উচ্চতা বাড়বে দুই থেকে সাত ফুট কিংবা তারও বেশি। এর ফলে আগে যা বলা হয়েছিল তারও চেয়ে তিনগুণ বেশি সংখ্যক এলাকা ও মানুষ ঝুঁকির মুখে পড়বেন। সাগরের পানি বিপদসীমা অতিক্রম করায় এ শতাব্দীর শেষে ঘরহারা হতে পারে ২০ কোটি মানুষ। এছাড়া ২০৫০ সালের মধ্যে প্রতি বছরই প্রবল বন্যার মুখে পড়তে পারে বিশ্বের উপকূলীয় এলাকার প্রায় ৩০ কোটি মানুষ।

এশিয়ার আটটি দেশের প্রায় ৭০ শতাংশ মানুষ প্রতি বছর বন্যা ও স্থায়ী প্লাবনের ঝুঁকিতে রয়েছেন। দেশগুলো হলো- বাংলাদেশ, চীন, ভারত, ভিয়েতনাম, ইন্দোনেশিয়া, থাইল্যান্ড, ফিলিপাইন ও জাপান।  

বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকা, পশ্চিমবঙ্গের কলকাতা, ভিয়েতনামের রাজধানী হানোই, চীনের নিচু শহর সাংহাই, তিয়ানজিন, হংকং বেশি ঝুঁকিতে আছে। ভিয়েতনামের সর্ব দক্ষিণের পুরোটাই ডুবে যেতে পারে বলে গবেষণায় বলা হয়।  

শুধু এশিয়া নয়, এ শতাব্দীর শেষ নাগাদ ব্রাজিল ও যুক্তরাজ্যসহ ১৯টি দেশের বেশকিছু এলাকা পুরোপুরি সাগরে বিলীন হয়ে যেতে পারে। যুক্তরাষ্ট্রের উপকূলীয় অঞ্চলগুলো থেকে অসংখ্য মানুষকে সরে যেতে হতে পারে অন্য জায়গায়। ভবিষ্যতের এ দুর্যোগ মোকাবিলায় উপকূলীয় এলাকাগুলোতে এখনই প্রস্তুতি নিতে হবে।  

গবেষণা বলে, হিমালয় থেকে অ্যান্টার্কটিকা সব জায়গায় দ্রুত বরফের স্তর গলে যাচ্ছে। আগের এক গবেষণায় বলা হয়েছিল, আগামীতে সাগরের পানির উচ্চতা বাড়বে তিন ফুট। কিন্তু নতুন গবেষণা বলছে, কোথাও কোথাও সাগরের পানির উচ্চতা সাত ফুটেরও বেশি বেড়ে যেতে পারে। সবচেয়ে দ্রুত গলছে গ্রিনল্যান্ডের বরফ। ২০০৬ থেকে ২০১৫ সময়কালে গড়ে প্রতি বছর এর পরিমাণ ২৭৫ গিগাটন। এছাড়া আগের দশ বছরের তুলনায় ২০০৭ থেকে ২০১৬ সালে অ্যান্টার্কটিকায় বরফ গলার হার বেড়েছে তিনগুণ।  

এসব কিছুর বাইরেও বিশ্বব্যাপী সুপেয় খাবার পানির সংকটে পড়তে যাচ্ছে কোটি কোটি মানুষ।  

গবেষণা প্রতিবেদনটির সহ-লেখক ও অলাভজনক সংস্থা ক্লাইমেট সেন্ট্রালের সিইও বেনজামিন স্ট্রস জানান, সাগরে পানির উচ্চতা বাড়লে আমাদের ধারণার চেয়েও বেশি সংখ্যক মানুষ ঝুঁকির মুখে পড়বে। পুরো প্যাসিফিক আইল্যান্ড ডুবে যেতে পারে। এতে উপকূলীয় এলাকার মানুষ পরিণত হবে ‘জলবায়ু শরণার্থীতে’। মানবিক ও অর্থনৈতিক বিপর্যয় এড়াতে ঝুঁকিপূর্ণ এলাকাগুলোতে আগে থেকেই ব্যবস্থা নিতে হবে।  

বাংলাদেশ সময়: ১৯০৬ ঘণ্টা, অক্টোবর ৩০, ২০১৯
এফএম/এইচজে 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।