ঢাকা, শনিবার, ৭ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

প্রদর্শনীতে পরিচিত বাংলাদেশের ডলফিন

| বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৮৩১ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৯
প্রদর্শনীতে পরিচিত বাংলাদেশের ডলফিন

ঢাকা: সমুদ্রে পথহারা নাবিক যে প্রাণীটির দেখা পেলে আনন্দে আত্মহারা হয়ে ওঠে সেটি হচ্ছে ডলফিন। বলা হয়ে থাকে মানুষের পর জলচর স্তন্যপায়ী এ প্রাণীটিই সবচেয়ে বুদ্ধিমান। আর এই ডলফিনকে নিয়েই প্রদর্শনী চলছে রাজধানীর মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরে।

বন অধিদপ্তর, আইইউসিএন ও ইউএনডিপির সহযোগিতায় এ প্রদর্শনীতে আয়োজন করা হয়েছে ডলফিন সংরক্ষণমূলক প্রচারণার। সবার মাঝে ডলফিন সম্পর্কে সচেতনতা ও এটি সংরক্ষণে ভূমিকা রাখতেই এই প্রদর্শনী বলে জানিয়েছেন আয়োজকরা।

শুক্রবার (২৫ অক্টোবর) মুক্তিযুদ্ধ জাদুঘরের প্রাঙ্গণে প্রদর্শনী ঘুরে দেখা যায়, এতে স্থান পেয়েছে বিভিন্ন ধরনের ডলফিনের আলোকচিত্র এবং তথ্যচিত্র। ডলফিন নিয়ে প্রকাশিত বিভিন্ন বইয়ের প্রদর্শনীও স্থান পেয়েছে এ আয়োজনে।  

আর বাংলাদেশে ডলফিনের বর্তমান অবস্থা সম্পর্কে জানতে এই প্রদর্শনী এক অনন্য স্থান বলে মনে করেছেন অনেকেই।

তবে স্কুল ও কলেজ পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের মধ্যে সবচেয়ে বেশি সাড়া ফেলেছে ডলফিন, রয়েল বেঙ্গল টাইগার ও সুন্দরবন নিয়ে তৈরি পুতুল নাচ, বায়োস্কোপ এবং সুন্দবনের মৌওয়ালদের কাহিনীচিত্র।  

প্রদর্শনীতে ডলফিনের বিভিন্ন চিত্র ও তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।  ছবি: বাংলানিউজএ প্রসঙ্গে বায়োস্কোপের পরিচালক খুলনার আব্দুল হামিদ সর্দার বলেন, ছাত্র-ছাত্রী যারা আসছে, তাদের অধিকাংশই বায়োস্কোপ দেখতে বেশি আগ্রহী। এই বায়োস্কোপের মাধ্যমে সুন্দরবন, বাঘ, হরিণ এবং ডলফিন সম্পর্কে তাদের জানানো হচ্ছে বিভিন্ন তথ্য।

প্রদর্শনী ঘুরে কথা হয় অষ্টম শ্রেণির ছাত্র লাবিব আহমেদের সঙ্গে। ডলফিন ধরে ছবি উঠতে পেরে বেশ আনন্দিত সে। কথা হলে লাবিব বলে, এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে ডলফিন সম্পর্কে অনেক কিছু জানতে পেরেছি যা আগে জানতাম না। তবে সত্যিকারের ডলফিন হলে আরো বেশি ভালো লাগতো।

লাবিবের বন্ধু নাজমুল ইসলাম বলেন, আগে ডলফিন সম্পর্কে খুব অল্পই জানতাম। এখানে এসে বেশ অনেক তথ্য জানতে পারলাম। আর বাংলাদেশেও যে ডলফিন আছে, সেটা আগে কখনও ভাবিনি। এখানে এসে সেটাও জানলাম যে সুন্দরবনে বাঘ আর হরিণের সঙ্গে ডলফিনও পাওয়া যায়। তাই এরপর সুন্দরবন যাবো শুধু ডলফিন দেখার জন্য।  

ছিল বায়োস্কোপের ব্যবস্থা।  ছবি: বাংলানিউজ‘এই আয়োজনের মৌওয়ালদের মধু আহরণ ও বায়োস্কোপের সঙ্গে পুতুল নাচটাও বেশ ভালো লেগেছে,’ যোগ করে নাজমুল।  

প্রদর্শনী নিয়ে আইইউসিএন-এর কান্ট্রি রিপ্রেজেনটেটিভ রাকিবুল আমিন বাংলানিউজকে বলেন, এই প্রদর্শনীর মাধ্যমে শিক্ষার্থীরা ডলফিন সম্পর্কে আরো আগ্রহী হচ্ছে। ছবির মাধ্যমে হলেও তাদের সঙ্গে ডলফিনের একটা সম্পর্ক গড়ে উঠছে। আর ডলফিনের প্রতি তাদের এই ভালোবাসাটা এ প্রদর্শনীর অন্যতম উদ্দেশ্য।

প্রদর্শনী নিয়ে বন অধিদপ্তরের প্রধান বন সংরক্ষক শফিউল আলম চৌধুরী জানান, ডলফিনের মাধ্যমে একটি জাতিকে, একটি দেশকে চেনা যায়। তাদের পরিবেশ ও আচার ব্যবহার সম্পর্কে ধারণা পাওয়া যায়। আর আমাদের শিশুরা তো শুধু টিভিতে ডলফিন দেখে একটা কল্পনায় থাকে এটি নিয়ে।  

‘কিন্তু এ আয়োজন তাদের ডলফিন সম্পর্কে স্বচ্ছ একটা ধারণা দিচ্ছে। এখান থেকে তারা বৈশ্বিকের সঙ্গে বাংলাদেশের ডলফিন সম্পর্কেও জানতে পারছে। ’

ডলফিন সংরক্ষণের প্রচারণামূলক তিন দিনের এ আয়োজনে শুরু হয়েছে বৃহস্পতিবার (২৪ অক্টোবর)। প্রতিদিন ঘুড়ি উৎসব, বায়োস্কোপ, চিত্র প্রদর্শনী, পুতুল নাচ, সুন্দরবনের মৌওয়ালদের গল্পসহ বিভিন্ন আয়োজন রাখা হয়েছে শিক্ষার্থী এবং সাধারণ দর্শকদের জন্য এই আয়োজনে।  

শনিবার (২৬ অক্টোবর) শেষ হওয়া এ প্রদর্শনী খোলা থাকবে সকাল ১০টা থেকে বিকেল ৫টা পর্যন্ত।

বাংলাদেশ সময়: ০৪২৭ ঘণ্টা, অক্টোবর ২৬, ২০১৯
এইচএমএস/এমএ 

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।