ঢাকা, মঙ্গলবার, ৪ ভাদ্র ১৪৩২, ১৯ আগস্ট ২০২৫, ২৪ সফর ১৪৪৭

জলবায়ু ও পরিবেশ

নারী ইঁদুরের মন গলাতে গান গায় পুরুষ ইঁদুর!

পরিবেশ-জীববৈচিত্র্য ডেস্ক | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০:১৬, এপ্রিল ৯, ২০১৫
নারী ইঁদুরের মন গলাতে গান গায় পুরুষ ইঁদুর! ছবি : সংগৃহীত

ঢাকা: গান শুনতে কার না ভাল লাগে! গান শুনে মোহাবিষ্ট হয়ে হুঁশ হারানোর ঘটনাও মনুষ্য সমাজে একেবারে বিরল নয়। কিন্তু বিষয়টি যদি এমন হয়- সুন্দরী নারী ইঁদুরকে আকৃষ্ট করতে গান গায় পুরুষ ইঁদুর!

অনেকে ভ্রুঁ কুচকে বলতে পারেন- এ আবার হয় নাকি?

কিন্তু সম্প্রতি যুক্তরাষ্ট্রের একটি খ্যাতনামা জার্নালে প্রকাশিত একটি গবেষণার প্রতিবেদন এমনটি হয়ে আসছে বলেই জানাচ্ছে।



প্রতিবেদনে বিজ্ঞানীরা বলছেন, ইঁদুরও গান গাইতে পারে। পুরুষ ইঁদুর নারী ইঁদুরকে আকৃষ্ট করতে পাখির মতো গানও গায়! গান গাইতে ঋতু, সময় এবং আবহাওয়ার ওপর ভিত্তি করে তারা তাদের গলার স্বরও পরিবর্তন করে থাকে।

কেবল তা-ই নয়, গবেষকদের দাবি; ইঁদুর পাখি এবং মানুষের চেয়েও ভাল গান গেয়ে থাকে।

ইঁদুরের গান গাওয়ার বিষয়টি নতুন কিছু নয় বলে ‍আগেই প্রমাণ পেয়েছিল যুক্তরাষ্ট্রের নর্থ ক্যারোলিনার ডিউক ইউনিভার্সিটির ওই গবেষক দল।

এবার পরিচালিত গবেষণায় নারী ইঁদুরকে আকৃষ্ট করতেই গান গাওয়ার বিষয়টি আবিষ্কার করেন ওই গবেষকরা। গবেষণায় তারা পাশাপাশি দুইটি খাঁচায় কিছু পুরুষ এবং নারী ইঁদুর রাখেন। তারপর তাদের উচ্চ মাত্রার স্বর ধারণ এবং বিশ্লেষণ করতে বিশেষ এক ধরনের যন্ত্রও ব্যবহার করেন। মানুষের শ্রবণ শক্তির চেয়ে ইঁদুরের শ্রুতি ক্ষমত‍া অনেক বেশি এ যন্ত্র ব্যবহার করা হয়।

আওয়াজ ধারণ করার পরে দেখা গেছে, পুরুষ ইঁদুর নারী ইঁদুরের শরীরের গন্ধ পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই গান গাইতে শুরু করে। অর্থাৎ একটি খাঁচায় থাকা পুরুষ ইঁদুর যখন আরেকটি নারী ইঁদুরকে দেখতে পায় তখন সে গান গাইতে শুরু করে।

সম্ভবত, বিপরীত লিঙ্গের সঙ্গে পরিচিত হতেই তারা গান গেয়ে থাকতে পারে। নারী ইঁদুরটি যখন পুরুষ ইঁদুরের দিকে তাকায়, তখন তারা আরও কোমল স্বরে গান গাইতে শুরু করে।

গবেষকদের বিশ্লেষণে দেখা গেছে, গানের স্থায়ী-অন্তরা-সঞ্চারী-আভোগ এর আরোহণ এবং অবরোহণও অনেক সাবলীল হয়।

গবেষক জনার্দান চাবট বলেন, আমরা ভেবেছিলাম তাদের গানের ভাষা অনেক জটিল হবে। কিন্তু নারী ইঁদুরকে দেখার পরে পুরুষ ইঁদুরগুলোর গান অনেক সাবলীল হয়ে এলো। এর কারণ হতে পারে একদিকে শক্তি সঞ্চয় করা, অন্যদিকে কোমল স্বরে আকৃষ্ট করার চেষ্টা। আমরা অবাক হয়েছিলাম, একটি গানেই তারা আবহ অনুযায়ী কতবার গলার স্বর পরিবর্তন করে।

একটা বিষয় পরিষ্কার হয়ে গেছে, ইঁদুরের গান গাওয়ার ক্ষমতা যেকোনো গান গাওয়া পাখি বা মানুষের তুলনায় অনেক বেশি। সেই সঙ্গে গানের গঠনে যে ধরনের পার্থক্য শিল্পীরা এনে থাকেন, সে বিষয়েও তাদের দক্ষতার জুড়ি নেই।

দ্বিতীয় একটি বিষয় লক্ষ্য করা গেছে, নারী ইঁদুরটির পছন্দ জানতে দুই ধরনের গান গায় পুরুষ ইঁদুরটি। আর গান পছন্দ হলেই কেবল নারী ইঁদুররা পুরুষ ইঁদুরকে সময় দেয়।

জনার্দান চাবট বলেন, কুকুর ছানা মাকে ডাকার জন্য গান গায় বলেই জানি। বাকি বিষয়গুলো এখনও আমাদের কাছে অস্পষ্ট।

তিনি জানান, তারা ইঁদুরের মস্তিষ্কের যে অংশ গান নিয়ন্ত্রণ করে তা শনাক্ত করার চেষ্টা করেছেন। একইসঙ্গে এ বিষয়ে জিনের কার্যকারিতাও।

গবেষণায় অংশ নেওয়া আরেক চিকিৎসক ডা. জার্ভিস বলেন, এই গবেষণার ফল আমাদের অটিস্টিকদের (প্রতিবন্ধীদের) যোগাযোগ ক্ষমতা বৃদ্ধির গবেষণার ক্ষেত্রে কার্যকর ভূমিকা পালন করবে বলে আশা করছি।



বাংলাদেশ সময়: ০০১৫ ঘণ্টা, এপ্রিল ০৯, ২০১৫
এটি/এইচএ/এমজেএফ

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।