নওগাঁ: স্থানীয়দের প্রতিরোধের মুখে আলতাদীঘি বনে আর ছাড়া সম্ভব হয়নি খাদ্যের সন্ধানে লোকালয়ে চলে আসা সেই অজগর সাপটিকে। আলোচিত এই অজগরকে ঠিক কোথায় রাখা হবে বা কোথায় পাঠানো হবে তা নির্ধারণ না হওয়ায় এখনো খাঁচাতেই বন্দি থাকতে হচ্ছে তাকে।
নওগাঁর ধামইরহাট উপজেলার মঙ্গলকোঠা গ্রামের আলতাদীঘি শালবন জাতীয় উদ্যান থেকে সোমবার দিবাগত রাত ৩টার দিকে অজগরটি শালবন সংলগ্ন স্থানীয় বাসিন্দা আরাফাতের বাড়িতে চলে আসে। সেখান থেকে গ্রামবাসী ৬ ফুট দীর্ঘ ও ২৫ কেজি ওজনের সাপটিকে আটক করে।
ধামইরহাট উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) হেমায়েত উদ্দিন বাংলানিউজকে জানান, অজগরটি আটকের পর বাংলানিউজসহ বেশকয়েকটি সংবাদ মাধ্যমে খবরটি প্রকাশ হলে বিষয়টি সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ সবার নজরে আসে।
তিনি আরো বলেন, অজগরটিকে ওই শালবনে ছাড়ার বিষয়ে এখনো কোনো সিদ্ধান্ত হয়নি। স্থানীয় জনগণের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে বিষয়টি নিয়ে জেলা প্রশাসকের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে।
এর আগেও কয়েকবার আদিবাসীদের বসতবাড়িতে ওই বনের অজগরসহ হিংস প্রাণী হামলা চালিয়েছে। সাপের নিরাপত্তা এবং মানুষের নিরাপত্তার কথা বিবেচনা করে জেলা প্রশাসক বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে নিয়ে মন্ত্রণালয়ে চিঠি পাঠিয়েছেন।
এ সংক্রান্ত চিঠি বিভাগীয় বন কর্মকর্তা অজিত রায়সহ সংশ্লিষ্ট বিভিন্ন দফতরের কাছেও পাঠানো হয়েছে।
এদিকে বসতবাড়িতে অজগর সাপের হামলার পর জাতীয় আদিবাসী পরিষদ, জাতীয় আদিবাসী যুবপরিষদ ও বাসদসহ কয়েকটি সংগঠন আন্দোলনের প্রস্তুতি নিচ্ছে বলে জানা গেছে।
তারা বলেন, হিংসপ্রাণী বন থেকে নিরাপদ স্থানে সরিয়ে স্থানীয় জনগণের নিরাপত্তা নিশ্চিত করা না হলে বৃহৎ আন্দোলন করা হবে।
এ বিষয়ে জাতীয় আদিবাসী যুব পরিষদের উপদেষ্টা মোশারফ হোসেন চৌধুরী বাংলানিউজকে জানান, খাদ্যের অভাবে হিংস সাপ বসতবাড়িতে হানা দেওয়ার খবর পেয়ে তারা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
তিনি অভিযোগ করেন, বনের আশপাশ থেকে আদিবাসীদে উচ্ছেদ করার উদ্দেশে এ সাপ ছাড়া হয়েছে। তারা দরিদ্র হওয়ায় ওই বন থেকে বিভিন্ন খাবার সংগ্রহ করে। তা যাতে না করতে পারে এজন্য এসব হিংস প্রাণী ছাড়া হয়েছে।
প্রাণী সংরক্ষণ সেবক আহমিদ হোসেন বলেন, ধরার সময় সাপটি খুবই ক্ষুধার্ত ছিলো। তাই তাকে দু’টি মুরগী খেতে দেওয়া হয়েছে। তবে ডাক্তারি পরীক্ষা করা হয়নি।
অবমুক্ত করার বিষয়ে কোনো সিদ্ধান্ত না হওয়ায় সাপটি এখনো ধামইরহাট বন বিট কর্মকর্তার অফিসে খাঁচায় বন্দি রয়েছে বলে জানান তিনি।
এদিকে, অজগরটি আটকের পর ধামইরহাট বনবিট কর্মকর্তার কার্যালয়ের একটি খাঁচায় আটকে রাখা হয়েছে। বিষয়টি জানাজানি হলে মঙ্গলবার সকাল থেকে সাপটি দেখতে দূর-দূরান্ত থেকে অসংখ্য মানুষ বনবিট কর্মকতার কার্যালয়ে ভিড় করছে।
বাংলাদেশ সময়: ১৮১৮ ঘণ্টা, আগস্ট ১২, ২০১৪
** খাদ্যের খোঁজে লোকালয়ে সেই অজগর
** ধামইরহাট শালবনে অবমুক্ত অজগর নিয়ে আতংক
** অজগর দু’টি সরিয়ে নেয়ার পরামর্শ বিশেষজ্ঞদের