ঢাকা: বৃষ্টিভেজা দিনে হাঁটছিলাম আনমনে। গাছপালা-তরুলতা সতেজ প্রাণবন্ত।
আর তাতেই আটকে গেল উৎসুক দৃষ্টি। গাছের দিকে তাকিয়ে দেখি তখনো পাতার ফাঁকে স্নিগ্ধ হাসছে থোকা থোকা ফুল। নাম তার কামিনী।
ফুলের পাপড়ি ঝরে গাছের তলাটি যেন মায়াবী চাদর হয়ে উঠেছে। ফুলটিকে একটু ছুঁয়ে দেখার ইচ্ছায় হাত বাড়াতেই ঝরে গেল পাপড়ি, আঙুলে লেগে থাকল লেবুর মিষ্টি গন্ধ। মনে পড়ে গেল রবি ঠাকুরের কবিতা:
দূর হতে দেখিবারে, ছুঁইবারে নহে সে/ দূর হতে মৃদু বায়, গন্ধ তার দিয়ে যায়/ কাছে গেলে মানুষের শ্বাস নাহি সহে সে।
ফুলের পাঁচ পাপড়ির মাঝে একটি হলদে পরাগকেশর। ফুল গুচ্ছবদ্ধ, দুধ সাদা, অনেকটা লেবুর ফুলের মতো। গন্ধও তাই। গাছভরা ফুল যেন চারপাশে লেবুর সৌরভ ছড়ায়। কামিনী বাগানের সৌন্দর্য সৃষ্টিতে যোগ করে ভিন্নমাত্রা। গাছের আকার গুল্ম-ঝোপ থেকে মাঝারি হতে পারে। কেটে-ছেটে বাগানের বিভিন্ন আকৃতি দিতে দেখা যায়। বর্ষার ফুল হলেও বছরে বেশ কয়েকবারই ফোটে কামিনী।
শুধু ফুলের সৌরভ কিংবা রূপ নয়, কামিনীর পাতার সৌন্দর্য মুগ্ধ হওয়ার মতো। ঘন বিন্যস্ত ছোট চিরসবুজ পাতাগুলো বেশ দৃষ্টিনন্দন। তাই এর বাণিজ্যিক ব্যবহারও লক্ষণীয়। পুষ্পস্তবক তৈরি ও বিয়ের সজ্জায় কামিনীর পাতার ব্যবহার বেশ জনপ্রিয়। আদি নিবাস দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়া। কারো কারো মতে চীন। ইংরেজি নাম চায়না বক্স। আমাদের দেশে প্রায় সব বাগানেই কামিনীর উপস্থিতি অবাধ ও অবারিত। ঢাকার বিভিন্ন পার্ক ও উদ্যানে গাছটি সহজলভ্য। বৈজ্ঞানিক নাম Murraya exotica (ম্যুরায়া এক্সোটিকা)।
বাংলাদেশ সময়: ০১০৯ ঘণ্টা, জুন ০৪, ২০১৪