ঢাকা: চাক ভেঙে মধু খাওয়ার লোভ সামলাতে পারেন নি দুই জওয়ান। আর তাতেই জীবন যায় যায় অবস্থা।
মাওবাদী দমনে পশ্চিমবঙ্গের পুরুলিয়ার অযোধ্যা পাহাড়তলি সিরকাবাদ পুলিশ শিবিরে মোতায়েন ছিলেন আইআরবি ১১ নম্বর ব্যাটেলিয়ানের দুই নাগা জওয়ান সেণ্টি ওয়ালিং ও কুমবে মোর। ক্যাম্পের পাশেই অশ্বত্থ গাছে একাধিক মৌমাছির বাসা। শুক্রবার ভরদুপুরে তারই একটি চাকে ঢিল মারার সঙ্গে সঙ্গে শয়ে শয়ে মৌমাছি উড়তে থাকে৷
অদৃশ্য হয়ে যায় মৌমাছি৷ আর তখনই গাছে চড়ে ডালে বসে চাকে পাইপ গুঁজে মনের সুখে মধু পান করছিলেন সশস্ত্র নাগাল্যান্ড পুলিশের এই দুই জওয়ান৷ মুহূর্তে সেই চাক থেকে উড়ে যাওয়া মৌমাছি নাগা জওয়ানদের ঘিরে ধরে৷
মাথার উপর বনবন করে ঘুরতে ঘুরতে শরীরে হুল ফোটায়৷ অদ্ভুতভাবে অন্য চাকে বসে থাকা মৌমাছিও দুই নাগা জওয়ানকে ছেঁকে ধরে৷ মৌমাছির আক্রমণে দুই নাগা জওয়ানের চিত্কারে বেরিয়ে আসেন এলাকার মানুষ৷ প্রাণে বাঁচতে তারা খালি দৌড়ে যাচিছলেন৷ প্রায় আধঘণ্টা ধরে মৌমাছির চরকি পাকের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে ইক্ষু জমিতে দুই জওয়ান জ্ঞান হারানোর পর শান্ত হয় মৌমাছির দল৷
সিরকাবাদের বাসিন্দা চিন্ময় কুইরির কথায়, দুই নাগা জওয়ানকে গ্রামবাসীরা উদ্ধার করতে চাইলেও মৌমাছিদের কাছে হার মানতে হয়েছিল সকলকে৷ পরে স্থানীয় বাসিন্দা ও পুলিশ ক্যাম্প থেকে থাকা সহকর্মীরা তাঁদের সিরকাবাদ ব্লক স্বাস্থ্যকেন্দ্রে নিয়ে যায়৷ সারা শরীরে লাল চাক-চাক দাগ হয়ে যায়৷
সঙ্গে সঙ্গে দুটো করে অ্যাণ্টি অ্যালার্জি ইঞ্জেকশন পুশ করা হয়। তার পরেও জ্বর চলে আসায় শুক্রবার সন্ধ্যায় দুই জওয়ানকে পুরুলিয়া সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হয়৷ রাতভর স্যালাইন চলে৷ এখন দুই জওয়ানের শারীরিক অবস্থা স্থিতিশীল বলেই হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন৷
মাওবাদী দমনের জন্য জঙ্গলে ঘণ্টার পর ঘণ্টা অ্যাম্বুশ করে বসার ক্ষমতা আছে৷ পাহাড়ের চড়াই-উতরাই পথে শত্রূকে শায়েস্তা করার কৌশলও জানেন তাঁরা৷ কিন্তু অযোধ্যা পাহাড়তলির জঙ্গলের মৌমাছি যে এমন আক্রমণাত্মক হয় তা জানতেন না পাহাড়ি যুদ্ধে পটু ওই দুই নাগা জওয়ান৷ যে মৌমাছি এঁদের কামড়েছে সেগুলি চলতি ভাষায় বাঘা-মোমাছি (স্থানীয় ভাষায় লেলে মাছি)৷ এদের কামড়ে মৃত্যু পর্যন্ত ঘটাতে পারে৷
বাংলাদেশ সময়: ১৬২৩ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৪