ঢাকা, শুক্রবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৬ এপ্রিল ২০২৪, ১৬ শাওয়াল ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

পাহাড়ি ঝরনার পানগির্দি

বিশ্বজিৎ ভট্টাচার্য বাপন, স্পেশালিস্ট এনভায়রনমেন্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৫৪৪ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৪
পাহাড়ি ঝরনার পানগির্দি ছবি: তানিয়া খান / বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

কালচে শরীরের মাথায় যেন সাদা টুপি পরা। তাতেই সৌন্দর্য তার।

বেশ ছটপটে। পাহাড়ি জলধারার আশপাশেই ঘুরে বেড়ায় সারাক্ষণ। ওখানেই খাবার সংগ্রহ। ওভাবেই বেঁচে থাকা। পখিটির নাম ধলাটুপি পানগির্দি।

ছোট আকৃতির এ পাখির শরীরে কালো, সিঁদুর লাল ও সাদা রঙের উপস্থিতি দেখা যায়। এদের দৈর্ঘ্য ১৩ সেমি.। ওজন ৩৩.৫ গ্রাম। ছেলে ও মেয়ে পাখির চেহারা একই। মূলত এরা শীতকালের বিরল পরিযায়ী পাখি।  

বাংলাদেশের প্রখ্যাত পাখি গবেষক ও পাখি পর্যবেক্ষক এবং বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবের প্রতিষ্ঠাতা ইনাম আল হক বাংলানিউজকে বলেন, এরা ছোট আকারের পতঙ্গভুক পাখি। পানির পাশে থাকা গির্দি। গির্দি দু’রকমের রয়েছে বাংলাদেশে। যারা শুকনো এলাকায় ঘোরে ও যারা পানির পাশে ঘোরে। পানির উপর এবং পানির আশপাশে ঘুরে বেড়ায় এমন দুটো গির্দি বাংলাদেশে দেখা যায়। একটি ধলাটুপি পানগির্দি, অপরটি নীল পানগির্দি। ‌পান মানেই পানি। আমি গির্দিকেই পানদির্গি বলি। এই দু’টি পাখিকেই পাওয়া যায় সিলেটের মাধবকুন্ড জলপ্রপাতের আশপাশে। এছাড়াও পার্বত্য চট্টগ্রামের বিভিন্ন ঝরনার আশপাশে তাদের পাওয়া যায়। শীত মৌসুমে এ পাখি বাংলাদেশে আসে। শীত শেষে তিন-চার মাস পর আবার উত্তরের দিকে চলে যায়।

তিনি আরও বলেন, এই Muscicapidae অর্থাৎ ‘দামা-চুটকি’ পরিবারভুক্ত অনেক পাখি রয়েছে। আমাদের জাতীয় পাখি উদয়ী দোয়েলসহ চেরালেজ নামক আরো তিন প্রজাতির পাখি রয়েছে যারা একই পরিবারভুক্ত পাখি। চেরালেজ পাখিদের বৈশিষ্ট্য ধলাটুপি পানগির্দির মতোই। অর্থাৎ, ঝরনাপাড়ের আশপাশে ঘুরে কীট-পতঙ্গ খুঁজে খাওয়া। এরা একই পরিবারভুক্ত পাখি। পবর্তের জলধারা, নির্জন পাহাড়ি ছড়া, শিলাময় অঞ্চলসহ আংশিক বরফে ঢাকা এলাকায় একা অথবা জোড়ায় ঘুরে বেড়ায়। কখনোই তাদের বিল-হাওরে খুঁজে পাওয়া যায় না। পানির ধার কিংবা উঁচু পর্বতের তৃণভূমিতে এরা খাবার খোঁজে। এদের খাদ্য তালিকায় রয়েছে পোকা ও ফল।

এই পাখির অবস্থান সম্পর্কে ইনাম আল হক বলেন, যেহেতু এরা পাহাড়ি ঝরনার আশপাশে ঘুরে বেড়ায় তাই তাদের শত্রু খুব কম। এরা ভালোভাবেই টিকে রয়েছে। তবে বাংলাদেশে এরা বিরল। সহজে চোখে পড়ে না। এর অন্যতম কারণ পাহাড়ি ঝরনা কম থাকা। পাখি যারা দেখেন তাদের জন্য এই পাখিটি ‘ভিআইপি’ ক্যাটাগরির পাখি। নেপাল বা ভারতের পাহাড়ি ঝরনায় এরা অধিক সংখ্যায় রয়েছে। এরা লোকালয়ে থাকে না বলে মানুষের সাথে তাদের কোনো সংঘাত নেই। সবদিক বিবেচনায় এরা বেশ ভালোভাবেই টিকে আছে।

পাখি পর্যবেক্ষক ও গবেষক তানিয়া খান বলেন, আমি ২০১২ সালের ফেব্রুয়ারিতে এই পাখির ছবিগুলো সিলেটের মাধবকুন্ড এলাকা থেকে তুলেছি।

পরিবেশ-জীববৈচিত্র্য পাতায় লেখা পাঠান এই মেইলে: [email protected]

বাংলাদেশ সময়: ০৫৩০ ঘণ্টা, মে ২৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।