ভালোবাসা, মমত্ববোধ, সর্বোপরি মাতৃত্ব। সৃষ্টিকূলের আচরণে এ ধরনের শব্দের অর্থে কোনো পার্থক্য চোখে পড়ে না।
তবে, যুক্তরাষ্ট্রের জীববৈচিত্র্য বিষয়ক প্রখ্যাত চিত্রগ্রাহক রায়ান টেইলরের ক্যামেরায় যে চিত্র বন্দি হয়েছে, তাতে আধুনিক মনুষ্য সমাজকেও আপ্লুত হতে হবে।
পুঁজিবাদের আগ্রাসনে মানুষের মনে বিলাসিতা ছড়িয়ে পড়ায় পাশের জন অভুক্ত থাকলেও তাতে অনুভূতি জাগবার কথা দূরে থাক, ফুটপাতে কেউ রোগে-শোকে মরলে তাকে ফিরেও দেখার প্রয়োজন মনে করে না। এমনকি খেয়ালি কোনো নর-নারীর ফূর্তির ফসল নবজাতক নর্দমার স্তূপে পড়ে গলা ফাটিয়ে কান্নার ছলে জগতকে অভিশাপ দিতে থাকলেও মানুষের তাতে ভ্রুক্ষেপ করার সময় হয় না।
অথচ, স্বাস্থ্য বিষয়ক সংবাদ প্রতিষ্ঠান প্রেভেন্টডিজিজ.কম’র ফেসবুক পেজে প্রকাশিত রায়ানের তোলা ছবিটিতে দেখা যায়, মানুষের চেয়েও কতো বেশি আবেগ-অনুভূতি থাকে প্রাণীকূলে। কতো বেশি বুদ্ধিমান তারা মানুষের চেয়েও।
প্রকাশিত ছবিতে দেখা যায়, পরিত্যক্ত নীড় থেকে একটি সদ্যজাত কাঠবিড়ালের বাচ্চাকে পরম মমতায় কোলে আগলে নিচ্ছে পড়শী এক কাঠবিড়াল মা।
হয়তো কোনো দুর্ঘটনায় পড়ে বাচ্চাটির মা ইহধাম ত্যাগ করেছে। মাকে কাছে না পেয়ে চেঁচামেচি করছিল বাচ্চাটি। আর বাচ্চার অস্বাভাবিক চিৎকারে ছুটে আসে পাশের নীড়ের মা কাঠবিড়ালটি। পরম মমতায় স্নেহের কোলে তুলে নেয় বাচ্চাটিকে। এরপর রওয়ানা হয় আপন নীড়ের পথে।
সাধারণত কাঠবিড়ালরা অন্তর্মুখী হয়। কিন্তু বিশেষ এক ধরনের ডাকে পড়শীর খোঁজ-খবর আন্দাজ করতে পারে এরা। যদি বেশি দিন কোনো সাড়া-শব্দ না পাওয়া যায়, তখন ধরে নেয় কোনো বিপদ ঘটেছে। এরপর খোঁজ-খবর নেয়, অনুমান সত্য হলে অর্থাৎ কোনো দুর্ঘটনা ঘটে থাকলে অনাথ বাচ্চাগুলোকে নিয়ে নিজের বাচ্চার মতো লালন-পালন করে বড় করে তোলে।
বাংলাদেশ সময়: ০৫৫৬ ঘণ্টা, মে ০৭, ২০১৪