ঢাকা, শনিবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ১০ শাওয়াল ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

ডুবোচরে আটকে যাচ্ছে পাহাড়ের জনজীবন

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২১৪৬ ঘণ্টা, মে ৩, ২০১৪
ডুবোচরে আটকে যাচ্ছে পাহাড়ের জনজীবন

রাঙামাটি: গ্রীষ্মের তাপদাহ ও জলবিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য পানি ছাড়তে গিয়ে এবং টানা বৃষ্টিহীনতায় কাপ্তাই হ্রদে পানি দিন দিন কমে যাচ্ছে। হ্রদে পানি কমতে থাকায় জেগে উঠছে ডুবোচর।

এতে রাঙামাটির সাত উপজেলায় নৌ যোগাযোগ ব্যহত হচ্ছে।

ইতোমধ্যে কয়েকটি উপজেলায় যাত্রীবাহী লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। নৌ যোগাযোগ স্বাভাবিক না থাকায় দুর্ভোগে পড়েছে জেলার কয়েক লাখ মানুষ। চর এড়িয়ে লঞ্চ ও বোটগুলোকে ঘুরে যেতে হয় অনেক পথ। এতে একদিকে নষ্ট হচ্ছে সময় অন্যদিকে জ্বালানি খরচ হয় বেশি।

রাঙামাটির দশ উপজেলার মধ্যে সাত উপজেলায় নৌ পথে যোগাযোগ রয়েছে। তবে এর মধ্যে দুইটি উপজেলা কাপ্তাই ও নানিয়ারচরে সড়ক পথে যোগাযোগ থাকলেও বাকী উপজেলারগুলোর একমাত্র মাধ্যম লঞ্চ কিংবা বোট।

অন্যদিকে বাঘাইছড়ি ও লংগদুতে জেলার সঙ্গে সরাসরি সড়ক পথে যোগাযোগ না থাকলেও খাগড়াছড়ি দিয়ে এই দুইটি উপজেলায় যাওয়া যায়।

এ দিকটি বিবেচনা করলে বাকি তিন উপজেলা বরকল, জুরাছড়ি ও বিলাইছড়ির একমাত্র যোগাযোগের মাধ্যম নৌ পথ। কিন্তু পানি কমতে থাকায় এই তিন উপজেলায় যাতায়াতে সমস্যা সৃষ্টি হচ্ছে। লঞ্চ, তারপর ছোট বোট আবার ছোট বোট এভাবেই পার হতে হচ্ছে এক জায়গা থেকে অন্য জায়গা। তাও আবার দীর্ঘ পথ হেঁটেই।

বাঘাইছড়ির সঙ্গে নৌ যোগাযোগ ইতোমধ্যে বন্ধ হয়ে গেছে। খাগড়াছড়ির ওপর সড়ক পথে বাঘাইছড়িতে যেতে হচ্ছে। নৌ পথে রাঙামারি লঞ্চ ঘাট থেকে বোটে দুরছড়ি পর্যন্ত যাওয়ার পর সেখান থেকে মোটর সাইকেলে বাঘাইছড়ি যাওয়া যাচ্ছে। যা খুবই সময়সাপেক্ষ ও ব্যয়বহুল।

লংগদুতে স্বাভাবিক অবস্থায় যেতে সাড়ে তিন ঘণ্টা থেকে চার ঘণ্টা সময় লাগলেও বর্তমানে প্রায় পাঁচ ঘণ্টা থেকে সাড়ে পাঁচ ঘণ্টা সময় লাগছে। এরপরও দীর্ঘ পথ হেঁটে যেতে হচ্ছে।

উপজেলাগুলোতে পরিবহন সঙ্কটের কারণে এলাকায় খাদ্য ঘাটতি আশঙ্কা দেখা দিয়েছে। প্রত্যন্ত এলাকায় উৎপাদিত ফসল বাজারজাত করতে হিমশিম খাচ্ছে চাষিরা। উপজেলাগুলোতে পণ্য পরিবহন খরচ বৃদ্ধি পেয়েছে প্রায় দ্বিগুনেরও বেশি। পানি শুকিয়ে যাওয়ায় শ্রমিকদের দীর্ঘ পথ হেঁটে পণ্য আনা নেওয়া করতে হচ্ছে।

কাপ্তাই হ্রদে রুলকার্ভ অনুসারে এসময় পানির স্তর ৮০ এমএসএল থাকার কথা থাকলেও বর্তমানে পানির স্তর এর চাইতে প্রায় ৪ এমএসএল কম রয়েছে। বৃষ্টিপাত না হওয়া, বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য পানি ছেড়ে দেওয়া ও গ্রীষ্মের তীব্র তাপদাহে কাপ্তাই হ্রদে স্বাভাবিকের চেয়ে কম পানি রয়েছে। চলতি সপ্তাহের মধ্যে বড় ধরনের বৃষ্টিপাত না হলে হ্রদে আরো দুরাবস্থা হবে বলে মনে করছেন সংশি¬ষ্টরা।

রাঙামাটি লঞ্চ মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক মঈন উদ্দিন সেলিম বাংলানিউজকে জানান, বাঘাইছড়ি উপজেলায় যাত্রী লঞ্চ চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ হয়ে গেছে। বরকল উপজেলায় হরিনা, ছোট হরিণায় লঞ্চ চলাচল বন্ধ হয়ে গেছে। বর্তমানে ওই উপজেলায় বরকল সদর পর্যন্ত লঞ্চ যেতে পারে।

বাংলাদেশ সময়: ২১৪৬, মে ০৩, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।