ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

জলবায়ু ও পরিবেশ

উপকূলে ‘গর্ভজনিত দুর্যোগ’

এস এম আব্বাস, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১১২৩ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৪
উপকূলে ‘গর্ভজনিত দুর্যোগ’ ছবি:বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

ঢাকা: জলবায়ু পরিবর্তন ও গর্ভজনিত সমস্যায় বছরে দেশের প্রায় ২০ হাজার নারী প্রাণ হারাচ্ছেন,  যাকে গবেষকরা রীতিমতো ‘গর্ভজনিত দুর্যোগ’  হিসেবে চিহ্নিত করছেন।

এ অবস্থা দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলীয় অঞ্চলে বেশি এবং এর প্রভাবে বাড়ছে গর্ভপাত ও মৃত শিশুর জন্মহার।



গবেষকরা বলছেন, উপকূলীয় অঞ্চলগুলোতে গর্ভবতী নারীসহ অন্য নারীরা কোমর পর্যন্ত পানিতে ঘণ্টার পর ঘণ্টা দাঁড়িয়ে চিংড়ির পোনা ধরছেন। যা গর্ভবতী মায়ের জন্য খুবই ক্ষতিকর। আর লবণাক্ত পানি প্রজনন স্বাস্থ্য ঝুঁকিতে ফেলছে নারীদের।

জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবে প্রজনন স্বাস্থ্যের ঝুঁকি নিয়ে দক্ষিণ-পশ্চিম উপকূলের দু’টি উপজেলায় গবেষণা চালিয়ে এ ধরনের তথ্য পেয়েছে বেসরকারি গবেষণা সংস্থা এমিনেন্স।

সংস্থাটির কর্মসূচি বিষয়ক সমন্বয়ক উম্মে সালমা বাংলানিউজকে জানান, উপকূলীয় সাতক্ষীরা জেলার শরণখোলা ও গাবুরা উপজেলায় গবেষণা চালিয়ে তারা এ তথ্য পেয়েছেন।

তিনি বলেন, এছাড়াও নিরাপদ পানীয় জলের অভাবে গর্ভবতী মায়েদের প্রতিদিন একাধিকবার তিন থেকে চার মাইল হেঁটে সুপেয় পানি সংগ্রহ করতে হচ্ছে। এতে গর্ভজনিত সমস্যার সৃষ্টি হচ্ছে। মোট কথা, এ অঞ্চলের নারীরা প্রজনন স্বাস্থ্যজনিত চরম ঝুঁকির মধ্যে রয়েছেন।

নারীর প্রজনন স্বাস্থ্য নিয়ে গবেষণা করতে গিয়ে আরো কিছু সমস্যার কথাও জানতে পেরেছেন বলে জানান উম্মে সালমা।

তিনি বলেন, জলবায়ু পরিবর্তনের প্রভাবে অনিরাপদ স্যানিটেশন ব্যবস্থা তাদের হাইপার টেনশন সৃষ্টি করছে। যা গর্ভবতী মা ও শিশু দুজনের জন্যই বিপদজনক ও ঝুঁকিপূর্ণ।

এছাড়া আর্থিক অনটনের কারণে অনিরাপদ ও স্বাচ্ছন্দহীন যৌনজীবনও উপকূলীয় নারীদের মানসিকভাবে অসুস্থ করে তুলছে- যোগ করেন এ গবেষক।

ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন অধ্যয়ন বিভাগের অধ্যাপক ও এমিনেন্স’র চেয়ারম্যান কাজী মারুফুল ইসলাম বাংলানিউজকে বলেন, ন্যায়সঙ্গত স্বাস্থ্য অধিকার নিয়ে একটি গবেষণা করতে গিয়ে দেখা গেছে, উপকূলীয় সাতক্ষীরায় নারীদের প্রজনন স্বাস্থ্যঝুঁকি তৈরি হচ্ছে জলবায়ু পরিবর্তনজনিত প্রভাবে।

তিনি জানান, দারিদ্র্যের কারণে নারীরা অর্থ উপার্জনের জন্য গর্ভবতী অবস্থাতেও ভারি কাজ করতে বাধ্য হচ্ছেন। সেখানকার লবণাক্ত পানি প্রজনন স্বাস্থ্যঝুঁকির সৃষ্টি করছে। শুধু তাই নয়, মৃত শিশু জন্ম নেওয়ার ঘটনা অনেকটা দুর্যোগের মতো অবস্থায় চলে গেছে।

কিন্তু এসব নারীদের উপযুক্ত চিকিৎসার জন্য উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স হাসপাতাল ছাড়া তেমন বিকল্প কিছু নেই। আর নিরক্ষরতার হার বেশি হওয়ায় সেখানকার মানুষের মধ্যে স্বাস্থ্য সচেতনতাও সেভাবে গুরুত্বপূর্ণ হয়ে ওঠেনি।

বাংলাদেশ সময়: ১১২০ ঘণ্টা, এপ্রিল ২০, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।
welcome-ad
welcome-ad