এই তুলতুলে নরম সাদা বস্তুটিকে নিশ্চয় একটি তুলা বা উলের বল ভাবছেন। হয়তো ভাবছেন ঘর সাজানোর কোনো পুতুল।
কিন্তু আশ্চর্য হলেও সত্য এটা একটি প্রাণী। প্রাণীটি নড়াচড়া করতে পারে, খায়, দৌড়ায়! নিশ্চয় আরও অবাক হবেন যদি জানেন এটি একটি খরগোশ! হ্যাঁ, আমরা অ্যাঙ্গোরা ৠাবিট বা অ্যাঙ্গোরা নামের খরগোশের কথা বলছি। এই খরগোশ পালা হয় মূলত সিল্কি ও কোমল অ্যাঙ্গোরা উল উৎপাদনের জন্য। তবে কেউ কেউ সৌখিন প্রাণীপ্রেমী হিসেবেও এদের পোষেন।
অ্যাঙ্গোরা র্যাবিট বিশ্বের সবচেয়ে পুরনো গৃহপালিত প্রাণীদের একটি। এরা মূলত তুরস্কের অধিবাসী। অষ্টাদশ শতকের প্রথম দিকে কিছু ভ্রমণ পিপাসু নাবিক টার্কির অ্যাঙ্গোরায় নোঙ্গর করেন। নাবিকরা স্থানীয় নারীদের মতো তাদের তৈরি অ্যাঙ্গোরা উলের সুন্দর, রেশমী শালও পছন্দ করতেন। তাই অ্যাঙ্গোরা পোর্ট ত্যাগ করার আগে নাবিকরা অ্যাঙ্গোরার কিছু খরগোশ নিয়ে যান ফ্রান্সে।
ফরাসিরা দাবি করে, অ্যাঙ্গোরা খরগোশের অস্তিত্ব প্রথম রেকর্ড হয় ১৭৬৫ সালে ফরাসি এনসাইক্লোপিডিয়ায়। তবে এটা সত্য যে, ফরাসিরাই প্রথম প্রাণীটিকে ব্যবসায়িক দৃষ্টিকোণ থেকে দেখা শুরু করে। তারাই প্রথম এর লোম থেকে অ্যাঙ্গোরা উল ও সুতা তৈরি করে। তাদের এই বাণিজ্যিক সফলতার পর ফ্রান্সে অ্যাঙ্গোরা খরগোশ পালন জনপ্রিয় হয় এবং একই সঙ্গে সমগ্র ইউরোপজুড়ে এটি পোষা প্রাণী হিসেবে জনপ্রিয়তা লাভ করে।
অ্যাঙ্গোরা খরগোশের পাঁচটি প্রজাতি আছে। ব্রিটিশ প্রজাতিটি মূলত এর সৌন্দর্য এবং তুলতুলে সাদা দেহের কারণে পোষা প্রাণী হিসেবে জনপ্রিয়। ফ্রান্সের একটি প্রজাতি মূলত এর লোম থেকে হাতে তৈরি সুতা উৎপাদনের জন্য জনপ্রিয় জায়ান্ট অ্যাঙ্গোরা।
রঙিন বড় লোমের জন্য স্টেইন অ্যাঙ্গোরা এবং উজ্জ্বল লোমের জন্য জার্মান অ্যাঙ্গোরা বিখ্যাত। প্রজাতি অনুসারে এদের ওজন হয় ৬ থেকে ১২ পাউন্ড। এরা বিভিন্ন রঙের হয়। তবে নাক, কান ও পা মূলত এদের রং নির্দেশ করে।
বাংলাদেশ সময়: ০০১০ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২৪, ২০১৩