ঢাকা, শনিবার, ২১ বৈশাখ ১৪৩১, ০৪ মে ২০২৪, ২৪ শাওয়াল ১৪৪৫

জাতীয়

সামরিক জাদুঘরে মুজিব ব্যাটারি কর্নার

সিনিয়ির করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২০৫৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১১

ঢাকা: বাংলাদেশ সামরিক জাদুঘরে ‘মুজিব ব্যাটারি কর্নার’ নামে একটি কর্নার চালু হয়েছে। মঙ্গলবার আনুষ্ঠানিকভাবে এর উদ্বোধন করা হয়।



আন্ত:বাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ কথা বলা হয়।

মুক্তিযুদ্ধ বিষয়ক প্রতিমন্ত্রী ক্যাপ্টেন (অব.) এ বি তাজুল ইসলাম প্রধান অতিথি হিসেবে ‘মুজিব ব্যাটারি কর্নার’ উদ্বোধন করেন।

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল মোহাম্মদ আব্দুল মুবীন, এনডিসি, পিএসসিসহ সশস্ত্র বাহিনীর উচ্চপদস্থ কর্মকর্তা ও দেশের বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধারা উপস্থিত ছিলেন।

বাংলাদেশ সেনাবাহিনীর চিফ অব জেনারেল স্টাফ ও সামরিক জাদুঘর সংস্কার-আধুনিকায়ন কমিটির সভাপতি লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. মইনুল ইসলাম, এডবি¬উসি, পিএসসি অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন।

উলে¬খ্য, বাংলাদেশের মহান মুক্তিযুদ্ধের গৌরবময় ইতিহাসের এক উজ্জ্বল অধ্যায়ে আপন মহিমায় ভাস্বর হয়ে আছে বাংলাদেশের গোলন্দাজ বাহিনী। এই বাহিনীর পথিকৃত হিসেবে মুজিব ব্যাটারি’র রয়েছে গৌরবোজ্জ্বল ভূমিকা। ভারতীয় সেনা বাহিনীর ৫৯ মাউন্টেন রেজিমেন্ট’র তত্ত্বাবধানে ১৯৭১ সালের ২২ জুলাই জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের নামানুসারে ৬টি ৩.৭ ইঞ্চি হাউইটজারে সজ্জিত হয়ে ভারতের ত্রিপুরা রাজ্যের কোনাবনে সংগঠিত হয় মুজিব ব্যাটারি।

আর্টিলারি কোর’র কিছু সংখ্যক বাঙালি অফিসার, জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার ও অন্যান্য পদবির সৈনিক এবং বিভিন্ন্ আর্মস ও সার্ভিস’র জুনিয়র কমিশন্ড অফিসার ও অন্যান্য পদবির সৈনিক, কিছু অসামরিক মুক্তিযোদ্ধা এবং ভারতীয় সেনা বাহিনীর আর্টিলারি কোর’র কতিপয় অফিসার দ্বারা এই ব্যাটারি’র গোড়াপত্তন হয়।

রেজিমেন্ট অব আর্টিলারি’র কাছে এই কামানগুলো বিশেষ গুরুত্ব বহন করে। কারণ, এখানেই প্রোথিত রয়েছে বাংলাদেশ গোলন্দাজ বাহিনীর শেকড়। জন্মের মাত্র এক সপ্তাহের মধ্যেই ১৯৭১ সালের ২৯ জুলাই গর্জে ওঠে মুজিব ব্যাটারি’র কামান।

পরবর্তীতে বেশ কয়েকবার শত্রুর ওপর ধ্বংসাত্মক আঘাত হেনে ২৮ সেপ্টেম্বর কায়েমপুর, ১৩ থেকে ২২ অক্টোবর কসবা, ১৫ নভেম্বর সালদানদী এবং ১ ডিসেম্বর আখাউড়া বিজয়ে প্রত্যক্ষ অবদান রাখতে সক্ষম হয় এ ব্যাটারি।

এছাড়া নিপুণ লক্ষ্যভেদী ফায়ার সহায়তা দিয়ে ১৯৭১ সালের ১৪ ডিসেম্বর নাজিরহাট দখলে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখে মুজিব ব্যাটারি।

১৯৭২ সালের ১ এপ্রিল মুজিব ব্যাটারি ১ ফিল্ড রেজিমেন্ট আর্টিলারি হিসেবে কুমিল্লায় পুনর্গঠিত হয়।

ভারতীয় সেনাবাহিনী প্রধান জেনারেল বিজয় কুমার সিং গত জুনে বাংলদেশে তার সফরকালে শুভেচ্ছার নিদর্শন হিসেবে মুজিব ব্যাটারি’র দুইটি কামান বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের কাছে হস্তান্তর করেন। বাংলাদেশ সেনাবাহিনী প্রধানের অনুরোধে এ ব্যাটারি’র বাকি ৪টি কামানও ভারত সরকার বাংলাদেশের কাছে হস্তান্তর করে।

মহান স্বাধীনতা যুদ্ধে এ ব্যাটারি ও এর সঙ্গে সংশ্লিষ্ট বীর মুক্তিযোদ্ধাদের অবদান ও তাদের আত্মত্যাগকে চিরস্মরণীয় করে রাখতে এ কামানগুলো সামরিক জাদুঘরে সংরক্ষণের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয়েছে।

জাদুঘর ভবনের নিচতলায় তিনটি বে-জুড়ে ছ’টি কামান রাখার স্থানটিকে নামকরণ করা হয়েছে ‘মুজিব ব্যাটারি কর্নার’।

মহান মুক্তিযুদ্ধের ইতিহাস সংরক্ষণের পাশাপাশি এই কামানগুলো বঙ্গবন্ধুর স্মৃতিবিজড়িত ১ম গোলন্দাজ ইউনিট এবং বাঙালি মুক্তিযোদ্ধাদের দুঃসাহসিক অভিযান ও সাফল্যকে ইতিহাসে অমর করে রাখবে।

এছাড়া এর মাধ্যমে দুই প্রতিবেশী দেশ বাংলাদেশ ও ভারতের জনগণ ও সেনাবাহিনীর ভ্রাতৃপ্রতিম বন্ধন আরো সুদৃঢ় হবে।

বাংলাদেশ সময়: ২০৪৮ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ২০, ২০১১

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

জাতীয় এর সর্বশেষ