রাজবাড়ী : রাজবাড়ী সরকারি কলেজে চলছে নানা সঙ্কট। কলেজটিতে কয়েকটি বিষয়ে অর্নাস ও মাস্টার্স কোর্স চালু থাকলেও শিক্ষকের কোনো পদ সৃষ্টি হয়নি।
জেলার সর্বোচ্চ বিদ্যাপীঠ রাজবাড়ী সরকারি কলেজ স্থাপিত হয় ১৯৬১ সালের ২৩ জুন। ১৯৮০ সালে এটি সরকারি হয়। বর্তমানে এ করেজে ১২টি বিষয়ে স্নাতক সম্মানসহ ৪টি বিষয়ে স্নাতকোত্তর কোর্স চালু রয়েছে।
কলেজ সূত্রে জানা যায়, ২০০১ সালে প্রাণিবিদ্যা সম্মান চূড়ান্ত পরীক্ষায় প্রথম শ্রেণীতে প্রথম, তৃতীয় ও চতুর্থ স্থান অধিকারের গৌরব অর্জন করে এই প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা। কিন্তু এনাম কমিটির সুপারিশ অনুযায়ী স্নাতকোত্তর কোর্স চালু থাকলে সে বিষয়ে ১২ জন ও স্নাতক কোর্সের জন্য ৭ জন শিক্ষক প্রয়োজন।
সে হিসেবে এ প্রতিষ্ঠানটিতে ১২০ জন শিক্ষক প্রয়োজন। অথচ বর্তমানে কলেজের অধ্যক্ষ, উপাধ্যক্ষসহ শিক্ষক রয়েছেন মাত্র ৫০ জন। অবশ্য সম্প্রতি শিক্ষা মন্ত্রণালয় ১৪টি পদ অনুমোদন দিয়েছে।
সুষ্ঠুভাবে শিক্ষা কার্যক্রম পরিচালনার জন্য কলেজে ৭৩টি শ্রেণিকক্ষের প্রয়োজন হলেও রয়েছে মাত্র ২১টি। গণিত বিভাগে সম্মান কোর্স চালু থাকলেও তাদের নিজস্ব কোনো শ্রেণিকক্ষ নেই। এ বিভাগের শিক্ষার্থীরা ক্লাস করেন বারান্দায়, কখনো বা অন্য বিভাগের কক্ষে। প্রাণিবিদ্যা বিভাগে উচ্চ মাধ্যমিক থেকে মাস্টার্স কোর্স চালু থাকলেও শ্রেণিকক্ষ মাত্র ১টি। । তারা ক্লাস করেন সেমিনার কক্ষ ও ল্যাবরেটরিতে। অন্যান্য বিভাগেরও একই অবস্থা।
অর্ধযুগের পুরনো এই শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের নিজস্ব কোনো পরিবহন ব্যবস্থা নেই। ফলে দূর-দুরান্তের শিক্ষার্থীরা সময় মতো কলেজে উপস্থিত হতে পারে ন।
কলেজে ৩য় ও ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারীর পদগুলোর অর্ধেকের বেশি শূন্য। ৩য় শ্রেণীর কর্মচারীর ৮ পদেও বিপরীতে আছেন ৩জন। ২৭ পদের বিপরীতে ৪র্থ শ্রেণীর কর্মচারী রয়েছেন ১৪জন।
এছাড়া কলেজের চারপাশে কোনো সীমানা প্রাচীর না থাকায় বহিরাগতরা অনায়াসে ক্যাম্পাসে এসে পরিবেশ নষ্ট করে। কলেজ মাঠে অবাধে চরে বেড়ায় গরু-ছাগল।
কলেজের অধ্যক্ষ সোহরাব হোসেন এসব সঙ্কটের কথা স্বীকার করে বাংলানিউজকে বলেন, ‘ইতোমধ্যে ১৪টি নতুন পদ সৃষ্টি হয়েছে। নতুন অ্যাকাডেমিক ভবন নির্মাণের বরাদ্দও পাওয়া গেছে। বাস কেনার প্রয়োজন হলেও তহবিলে পর্যাপ্ত টাকা না থাকায় আপাতত তা সম্ভব হচ্ছে না। আশা করি অচিরেই এ সব সমস্যার সমাধান হবে। ’
এ ব্যাপারে রাজবাড়ী সরকারি কলেজ ছাত্রলীগের সভাপতি আহম্মেদ আল কাম্মার উদ্দিন পরাগ বলেন, ‘কলেজের বিভিন্ন সমস্যা সমাধানের জন্য আমরা আন্দোলন করেছি। এসব সমস্যা সমাধানের জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষে সঙ্গে আলোচন চালিয়ে যাচ্ছি। ’
ছাত্র ইউনিয়ন নেতা সুমন বিশ্বাস বলেন, ‘আমরা দীর্ঘদিন ধরে শিক্ষক নিয়োগ, অ্যাকাডেমিক ও আবাসিক ভবন নির্মাণ, পরিবহন চালু, লাইব্রেরিতে পর্যাপ্ত বই সরবরাহ এবং হোস্টেল নির্মাণসহ বিভিন্ন দাবিতে ধারাবাহিক আন্দোলন করে যাচ্ছি। ’
বাংলাদেশ সময়: ১৩৫২ ঘণ্টা, নভেম্বর ২৩, ২০১১