ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

রাজনীতি

সহিংসতাকে ‘না’

ময়মনসিংহে বিএনপি নেতাদের পদত্যাগ

এম.আব্দুল্লাহ আল মামুন খান, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০৭১৩ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৫
ময়মনসিংহে বিএনপি নেতাদের পদত্যাগ

ময়মনসিংহ: সহিংসতার পথ বেছে নেওয়ার কারণে চরম অস্থিরতা চলছে ময়মনসিংহের মুক্তাগাছা উপজেলা বিএনপির রাজনীতিতে।

প্রতিবাদস্বরূপ সহিংসতাকে ‘না’ জানিয়ে পদত্যাগ করেছেন মুক্তাগাছা উপজেলা ও পৌর বিএনপির দুই প্রভাবশালী নেতা।



পদত্যাগের পাইপ লাইনে রয়েছেন আরো প্রায় ডজনখানেক নেতা।

গত রোববার (২২ ফেব্রুয়ারি) স্থানীয় উপজেলা বিএনপির সহসভাপতি ও বাঁশাটী ইউনিয়ন বিএনপির সভাপতি মো. হাবিবুর রহমান খান রতন দলীয় সব ধরনের পদ থেকে পদত্যাগ করেন।

এর আগে গত ১১ ফেব্রুয়ারি সাবেক পৌর মেয়র আলহাজ্ব মানছুর রহমান রেজুন পৌর বিএনপির সভাপতির পদ থেকে ইস্তফা দেন।  

স্থানীয় প্রেসক্লাবে পাঠানো এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে হাবিবুর রহমান রতন উল্লেখ করেন, বর্তমানে দেশের সার্বিক রাজনৈতিক পরিস্থিতি এবং একই সঙ্গে বাংলাদেশ জাতীয়তাবাদী দলের রাজনৈতিক কর্মসূচি আমার বিবেচনায় দেশ, দেশের জনগণ, গণতন্ত্র ও সু¯’ রাজনৈতিক ধারার সম্পূর্ণ প্রতিকূল।

দেশের একজন সচেতন নাগরিক হিসেবে আমি কোনোভাবেই এ রাজনীতি মেনে নিতে পারিনা।

বিএনপি তথা ২০ দলীয় জোটের রাজনীতির সঙ্গে একমত পোষণ করতে না পারায় ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির কার্যকরী কমিটির সদস্য পদ থেকে, মুক্তাগাছা উপজেলার সহসভাপতি পদ, বাঁশাটি ইউনিয়নের কার্যকরী কমিটির সভাপতির পদ থেকে এবং দলের প্রাথমিক সদস্য পদ থেকে আমি ব্যক্তিগত ও পারিবারিক কারণে পদত্যাগ করছি।

সোমবার (২৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বাংলানিউজকে পদত্যাগের সত্যতা স্বীকার করে তিনি বলেন, ২২ ফেব্রুয়ারি ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সভাপতি ও সাধারণ সম্পাদকের কাছে আমার পদত্যাগপত্র ডাকযোগে পাঠানো হয়েছে। আমার দল সহিংসতার পথ বেছে নেওয়ায় আমি রাজনীতি থেকেই সরে দাঁড়িয়েছি।

প্রায় ১২ দিন আগে সাবেক পৌর মেয়র আলহাজ্ব মানছুর রহমান রেজুন বার্ধক্যজনিত কারণ দেখিয়ে মুক্তাগাছা পৌর বিএনপির সভাপতির পদ থেকে পদত্যাগ করেন। এ নিয়ে দলীয় রাজনীতির পরিমণ্ডলে ও বাইরে নানা কানাঘুষা চলছে।

তবে তার ঘনিষ্ঠজনদের কাছে তিনি বলছেন, মুক্তাগাছার রাজনীতি সব সময় শান্তিপূর্ণ ছিল। সম্প্রতি, পেট্রোল-বোমার অন্ধকার রাজনীতি তার মাঝে অনীহার সৃষ্টি করেছে। শেষবয়সে ঝক্কি-ঝামেলা এড়াতেই তিনি পদত্যাগ করেছেন।

মানছুর রহমান রেজুন মোবাইল ফোনে বাংলানিউজকে বলেন, শারীরিক অসু¯’তার কারণেই পদত্যাগ করেছি।

সাবেক এ পৌর মেয়র বলেন, আগে মুক্তাগাছায় আমরা অনেক শান্তিতে ছিলাম। এখন পেট্রোল-বোমার রাজনীতি চলছে। এটা কারো জন্যই ভালো না।

২০ দলের হরতাল-অবরোধের চলমান কর্মসূচিতে চলতি ফেব্রুয়ারি মাসেই মুক্তাগাছায় তিনটি নাশকতার ঘটনা ঘটে। স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের গাড়িতে পেট্রোল-বোমা নিক্ষেপ, ওই রাতে যাত্রীবাহী বাসে পেট্রোল-বোমা ছুড়ে বাস পোড়ানো এবং মুরগির বা”চা বহনকারী গাড়িতে আগুন দেওয়া হয়।

এ সব ঘটনায় মুক্তাগাছা উপজেলা বিএনপির সভাপতি জাকির হোসেন বাবলু ও সাধারণ সম্পাদক জাকারিয়া হারুনসহ দলের সিনিয়র নেতাদের নামে মামলা দায়ের হয়।

অবশ্য এর আগে থেকেই দলীয় গুরুত্বপূর্ণ পদধারী কোনো নেতারই রাজনীতির মাঠে প্রকাশ্যে দেখা মিলছে না। বিশেষ করে উপজেলা শাখার দুই নেতার রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও প্রজ্ঞা নিয়েও দলের নেতাকর্মীদের মধ্যে প্রচণ্ড ক্ষোভ বিরাজ করছিল।

সহিংসতার এমন রাজনীতিতে ক্ষুব্ধ হয়েই মূলত ওই দুই নেতা পদত্যাগ করেন এবং বিভিন্ন ইউনিয়নের পদধারী আরো ডজনখানেক নেতা পদত্যাগের প্র¯‘তি নিচ্ছেন বলে জানা গেছে।
 
এ বিষয়ে স্থানীয় উপজেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক ও উপজেলা চেয়ারম্যান জাকারিয়া হারুন ও ময়মনসিংহ দক্ষিণ জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক আবু ওয়াহাব আকন্দ ওয়াহিদের সঙ্গে কথা বলতে চাইলেও তারা রাজি হননি।  

বাংলাদেশ সময়: ০৭১৫ ঘণ্টা, ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৫

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

রাজনীতি এর সর্বশেষ