ঢাকা, মঙ্গলবার, ৭ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১, ২১ মে ২০২৪, ১২ জিলকদ ১৪৪৫

বিনোদন

আবোল তাবোল পাগলের গল্প

সিয়াম আনোয়ার | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৩৫১ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৪
আবোল তাবোল পাগলের গল্প ছবি : নূর /বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম

তারা তিনজন আবোল তাবোল পাগলের দল। কায়েস আরজু আবোল তাবোল ছেলে আর আইরিন পাগল পাগল মেয়ে।

তাদের এই আচরণকে উসকে দিয়েছেন পরিচালক সাইফ চন্দন। একেবারে হাতেপায়ে ধরিয়ে দেখিয়ে দিয়েছেন কীভাবে আবোল তাবোল আর পাগল হতে হয়!

তিনজনের সম্মিলিত প্রচেষ্টায় হয়ে গেল একটি সিনেমা। ‘ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল’। একটু বোধহয় ভুল হলো। শুধু এই তিনজনকে দিয়েই কি সিনেমা হয়ে যায়? এত সহজ? না, এরমধ্যে অনেক গল্প আছে, আছে অসংখ্য জোড়া হাতের পরিশ্রম। সে সব কথা শুনতেই বাংলানিউজ আমন্ত্রণ জানিয়েছিল সাইফ চন্দন, আরজু আর আইরিনকে। ‘ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল’ সিনেমার পর্দা আর পর্দার পেছনের মূল তিন কুশলী তারা-
নামের মধ্যেই বুঝা যায়, প্রেমের গল্পের ছবি এটি। তবে নির্মাতা সাইফ চন্দনের কথায় জানা গেল,  ‘ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল’ শুধুই একটি প্রেমের ছবি না, থ্রিলারও। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র ইন্ডাস্ট্রির গল্প নিয়েই এর কাহিনি। এই সিনেমায় জড়িয়ে আছে সাইফের বাস্তব জীবনের গল্পও। '



সেই গল্প তুলে ধরতে আরজু আইরিন কেন? সাইফ বললেন, ‘আমি একটা ভালো সিনেমা বানাতে চেয়েছি। এখানে ছবির গল্পই তাদের মতো দু’জনকে চেয়েছে। আমি বড় মাপের আর্টিস্ট নিতে চাইনি। আমার মনে হয়েছে আরজু আইরিনকে আমি যতটুকু জানি তারা সিরিয়াস, কাজে মনোযোগী। শেষপর্যন্ত আমার কাজটা খুব ভালোভাবেই শেষ হয়েছে। ’

নিরব শ্রোতা হয়ে পরিচালকের কথা শুনছিলেন আরজু। সাইফ চন্দনের এটি প্রথম সিনেমা হলেও আরজুর জন্য নয়। ২০০৭ সালে ‘তুমি আছো হৃদয়ে’ দিয়ে চলচ্চিত্রে তার অভিষেক। এরপর মুক্তি পেয়েছে আরো কয়েকটি। ‘ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল’ তার ষষ্ঠ সিনেমা।



আরজু বললেন, ‘এই সিনেমাটা নিয়ে আমাদের প্রত্যাশা অনেক। এখন তো দর্শক দেশের বাইরের মুভি-ই বেশি দেখছে। তাদের মতো করে সম্ভব না, তবে কাছাকাছি পর্যায়ে পৌঁছানোর চেষ্টা করা হয়েছে। আমার জায়গা থেকে আমি চেষ্টা করেছি। সবাই মিলে একটা টিম হয়ে কাজ করেছি। ’

আর আইরিন কী বলেন? সিনেমার মত বাস্তব জীবনে তিনি কতটা পাগল পাগল ধরনের? শুনেই হেসে ওঠেন। বলেন, ‘এমনিতে আমি কিছুটা আউলা ঝাউলা। আর পাগল পাগল.. হয়তো কিছুটা। এখানে আমি দুইটা চরিত্রে কাজ করেছি। তরুণী চরিত্র একটা আর আরেকটা বৃদ্ধা চরিত্র। এই সিনেমাটায় অনেক কষ্ট করেছি তো, তাই আশাটা বেশি। মজার ঘটনা হচ্ছে, শুটিংয়ের সময় আমাদের ইউনিটের যতজনের জন্মদিন ছিল, সবার জন্মদিন উদযাপন করেছি আমরা। ’
আইরিনের কথার সমর্থনে আনন্দজাগানিয়া অনেক কথা বের হয়ে এলো সাইফ-আরজুর মুখেও। তবে এই সিনেমা সবটুকু যে আনন্দের ছিল, তাও না। বেশ কিছু বাধা-বিপত্তি আসে শুরুর থেকেই।



শুটিং শুরুর তিনদিনের মাথায় মোটরসাইকেলের এক শট দিতে গিয়ে আঘাত পান আরজু। সেই এক আঘাতের চোটে তিনমাস বিছানায় কাটাতে হয় তাকে। আরেকবার পরিচালক নিজেই স্টান্টম্যানের একটি দৃশ্যে নায়িকাকে নিয়ে শট দিচ্ছিলেন। সেবার পড়ে গিয়ে আইরিনের হাত আর কোমরের অংশ কেটে যায়। হাতে ব্যথা পান পরিচালক সাইফ। এই নিয়ে আবার একমাস শুটিং বন্ধ। এছাড়া সিনেমার আরেক নায়িকা সিগারেট খাওয়ার দৃশ্যে অভিনয় করতে গিয়ে অসুস্থ হয়ে হাসপাতালে ভর্তি, ইউনিটের একজনের মাথায় লাইট ভেঙে পড়া, তিনদিনের শিডিউলে কক্সবাজারে গিয়ে প্রথম দুইদিনই বৃষ্টিতে পণ্ড- এমন নানান অপ্রত্যাশিত ঘটনা তো ছিলই।

তবে বড় এক দূর্ভোগে পড়তে হয়েছে শুটিয়ের শেষের দিকে এসে। ক্যামেরা থেকে শুটিংয়ের ফুটেজ নিতে গিয়ে দেখা গেল পাক্কা দুইদিনের শুটিং নাই। তিন সাড়ে তিন লাখ টাকার ক্ষতি!
তবে প্রযোজক শামীম আলমের সহযোগিতায় সে ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পেরেছিলেন পরিচালক।



প্রযোজকের পাশাপাশি সাইফ চন্দন প্রশংসা করলেন ক্যামেরাম্যন হৃদয় খান, এডিটিং প্যানেলের মোস্তফা কামাল রাজ, ডাবিংয়ের রিপন নাথসহ শাহীন কবির টুটুল, শেখ এমদাদ সুমনদেরও। বিভিন্নভাবে তারা ‘ছেলেটি আবোল তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল’ সিনেমার জন্য সহায়তা করেছেন।

পোস্ট প্রডাকশনের কাজ শেষে চলতি মাসের শেষ দিকে সিনেমাটি সেন্সর বোর্ডে জমা দেয়া হবে। গত বছরের ফেব্রুয়ারিতে সিনেমাটির অডিও প্রকাশ করা হয়েছিল। সাইফ চন্দন জানালেন, এবার আরো বেশি চমক রেখে সিনেমাটির প্রিমিয়ার করা হবে। মুক্তি দেয়া হবে রমজানের আগেই।

বাংলাদেশ সময়: ১৩৪০ ঘণ্টা, মে ৩১, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বিনোদন এর সর্বশেষ