ঢাবি: আরেকটি নতুন আবাসিক হল পাচ্ছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়য়ের (ঢাবি) শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের আবাসন সংকট দীর্ঘদিনের।
এর মধ্যে মেয়েদের জন্য দু’তিনটি হল নির্মিত হলেও কোনো হল নির্মিত হয়নি ছেলেদের জন্য।
এসব বিবেচনায় এবং দীর্ঘদিনের দাবির পরিপ্রেক্ষিতে আবাসন সংকট কমাতে কমাতে বর্তমান সরকার ক্ষমতায় এসেই উদ্যোগ নেয়। ।
আগামী ১৪ নভেম্বর আধুনিক সুযোগ সুবিধা সম্বলিত ‘বিজয় একাত্তর’ নামের নতুন হলটি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা উদ্বোধন করবেন বলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জনসংযোগ দফতর সূত্রে জানা গেছে। এটি হবে ঢাবির ১৯তম হল
মনোরম স্থাপত্যশৈলীতে নির্মিত ১১তলা বিশিষ্ট এ হলটি শুধু ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় নয়, দেশের যেকোনো বিশ্ববিদ্যালয়ের মধ্যে বৃহত্তম হল। হলটির অবস্থান মাস্টারদা সূর্যসেন হল এবং জিয়া হলের মাঝামাঝি স্থানে।
বর্তমান সরকার ক্ষমতা গ্রহণের পর ২০০৯ সালের শেষের দিকে এর নির্মাণ কাজ শুরু হয়। প্রাক্কলিত ব্যয় ৪০ কোটি টাকা ধরা হলেও ছাত্রদের ব্যবহার উপযোগী করা পর্যন্ত এর ব্যয় প্রায় ৫৯ কোটি টাকায় গিয়ে দাঁড়ায় বলে জানিয়েছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রধান প্রকৌশলী মফিজুর রহমান।
নির্মাণ প্রতিষ্ঠান তমা কনস্ট্রাকশন লিমিটেড এ হলটির নির্মাণ কাজ সম্পন্ন করেছে।
শিক্ষার্থীদের জন্য যে যে সুবিধা থাকছে
বিজয় একাত্তর হলের মোট আসন সংখ্যা এক হাজার। সে হিসেবে পূর্ণ আবাসিক হিসেবে এক হাজার ছাত্র থাকতে পারবে। কিন্তু বাস্তবে তিন থেকে চার হাজার ছাত্র এ হলে থাকতে পারবে বলে জানা যায়। কেননা সাধারণ অবস্থায় বেশিরভাগ রুমেই দ্বৈতাবাসিক হিসেবে বরাদ্দ দেওয়া হয়।
ঢাবির প্রকৌশল অফিস সূত্রে জানা যায়, হলটিতে ছাত্রদের সার্বক্ষণিক ব্যবহারের জন্য চারটি এবং হাউজ টিউটরদের ব্যবহারের জন্য দু’টিসহ মোট ছয়টি লিফট থাকবে। বিদ্যুৎ চলে গেলে জরুরি প্রয়োজনে জেনারেটরের ব্যবহার করা হবে। তবে সব কক্ষে এ সুবিধা পাওয়া যাবে না। শুধু ক্যান্টিন, ডাইনিং, রিডিং রুম, গেমসরুমসহ প্রয়োজনীয় কক্ষগুলোতে জেনারেটরের ব্যবস্থা থাকবে।
মুখোমুখি অবস্থিত ১১তলা বিশিষ্ট দু’টি ভবনের মাঝে রয়েছে আরও একটি চারতলা ভবন। জানা যায়, এ ভবনটিতে থাকবে ছাত্রদের ক্যান্টিন, রিডিং রুম, গেমসরুম ও গেস্টরুমসহ ছাত্রদের এক্সট্রা কারিকুলার অ্যাক্টিভিটিসের জন্য প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা।
কারা এ হলে থাকতে পারবেন
বিজ্ঞান অনুষদভুক্ত বিষয়সমূহের ছাত্ররা ব্যতীত অন্যান্য অনুষদের শিক্ষার্থীরা এ হলে সিট বরাদ্দ পাবেন। ২০১৩-১৪ শিক্ষাবর্ষের শিক্ষার্থীদের (বিজ্ঞান অনুষদ ছাড়া) সরাসরি এ হলে বরাদ্দ দেওয়া হবে। তবে বর্তমানে যারা অন্য হলে বরাদ্দ পাওয়া ছাত্র তারাও আবেদন করতে পারবেন বলে প্রশাসনিক ভবন সূত্রে জানা যায়।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলা বিভাগের এমএ শেষ বর্ষের ছাত্র তমাল বলেন, এ হলটি তৈরিতে শিক্ষার্থীদের আবাসন সমস্যা কিছুটা হলেও কমবে বলে আশা করছি। আমি নিজে থাকতে পারছি না সে আফসোস থেকেই যায়। তবে নতুনরা সুযোগ পাক, ভালো থাকুক সেটাই আমি চাই। এজন্য হলের ম্যানেজমেন্ট ভালো হওয়া দরকার।
রাষ্ট্রবিজ্ঞান তৃতীয় বর্ষের ছাত্র ফয়সাল বলেন, এমন একটি হল ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রত্যেকের দীর্ঘদিনের দাবি ছিল। সে দাবি পূরণ হওয়ায় ভালো লাগছে। আর হলটির স্থাপত্যশিল্প দারুণ।
সবমিলিয়ে নবনির্মিত ‘বিজয় একাত্তর’ হল ঢাবি ছাত্রদের আবাসন ব্যবস্থায় এক নতুন মাত্রা যোগ করবে বলেই ধারণা সংশ্লিষ্ট সবার। ইতোমধ্যেই অন্য হলে সিট বরাদ্দ পাওয়া ছাত্ররাও এ হলে ওঠার জন্য আগ্রহী হয়ে উঠেছেন। কীভাবে এ হলে বরাদ্দ পাওয়া যায় সে ব্যাপারে খোঁজ খবর নিচ্ছেন সংশ্লিষ্টদের কাছে।
বাংলাদেশ সময়: ০৩৪৮ ঘণ্টা, নভেম্বর ১২, ২০১৩
এসএ/কেএইচ/এএ/আরআইএস