ঢাকা: ছাপা খরচের ভার বহন না করতে পারায় পৃষ্ঠাসংখ্যা কমিয়ে দাম বাড়াতে বাধ্য হলো প্রথম আলো। ব্যয় সংকোচন নীতির কারণে পত্রিকার দাম শনিবার থেকে ৮ টাকার বদলে ১০ টাকা।
বাড়তি ২ টাকা দিয়ে পাঠক পত্রিকাটি কিনলেও বাড়তি কোনো পৃষ্ঠা পাবেন না। বরং আগের তুলনায় ৮ পৃষ্ঠা বা তার বেশিই কম। এতে একদিকে যেমন পাঠককে বেশি টাকা দিতে হচ্ছে অন্যদিকে পৃষ্ঠাসংখ্যাও কম। তবে দাম বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নেওয়া ছাড়া উপায় ছিল না প্রথম আলো কর্তৃপক্ষের।
শুক্রবার প্রথম আলো সম্পাদক মতিউর রহমান মূল্য বৃদ্ধির কারণ তুলে ধরে লেখেন, আন্তর্জাতিক বাজারে নিউজপ্রিন্টের মূল্যবৃদ্ধি, আমদানিকৃত নিউজপ্রিন্টের ওপর অতিরিক্ত কর ধার্য, পরিবহন খরচসহ আনুষঙ্গিক ব্যয় বৃদ্ধির কারণে প্রতিদিনের পত্রিকার দাম দুই টাকা বাড়ল। তাই শনিবার থেকে প্রথম আলোর দাম ৮ টাকার স্থলে ১০ টাকা হবে। শুক্রবারও পত্রিকার দাম একই থাকবে।
পত্রিকাটির দায়িত্বশীল সূত্র জানায়, ২৪ পৃষ্ঠার এ পত্রিকাটির দাম ৮ টাকা থাকলে সামনে বড় লোকসানের সম্ভাবনা ছিল। একারণে শনিবার থেকে ২ টাকা বাড়ানোর সিদ্ধান্ত নিয়েছে কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি প্রথম আলোর প্রিন্ট সেকশনকে সংকুচিত করে তাদের অনলাইন সেকশনকে আরো প্রসারিত করার চিন্তা করা হচ্ছে। এক্ষেত্রে প্রথম আলো অনলাইনে নতুন নিয়োগ দেওয়ারও পরিকল্পনা করছে এ দৈনিকটি। বিশ্বব্যাপী অনলাইন মিডিয়ার প্রসারের কারণে প্রথম আলো প্রিন্টের চাইতে অনলাইনের দিকে বেশি মনযোগী হচ্ছে।
প্রথম আলোর নিজস্ব পর্যবেক্ষণে তাদের কাগজের পাঠকের চাইতে অনলাইনের পাঠক সংখ্যাই কয়েকগুণ বেশি।
নতুন এ মূল্য বৃদ্ধির ঘোষণার আগেই প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ পৃষ্ঠা সংখ্যা কমিয়ে দেয়। প্রায় প্রতিদিন ৩২ পৃষ্ঠা এবং কোনো কোনোদিন ৪০ পৃষ্ঠা বের করলেও বর্তমানে ২৪ পৃষ্ঠা বের হচ্ছে প্রথম আলো। বন্ধ করে দেয়া হয়েছে নারীমঞ্চ, স্টেডিয়ামসহ জনপ্রিয় কয়েকটি বিভাগ।
একসময় পত্রিকাটির বিভিন্ন বিজ্ঞাপনে তাদের স্লোগান ছিল-‘সর্বাধিক প্রচারিত দৈনিক’ ও ‘বড় কাগজ পড়ুন বেশি খবর জানুন’। এখন এসব স্লোগান থেকে সরে এসে অনলাইনে কতটি দেশে প্রথম আলো পড়া হয় সেই বিজ্ঞাপন দিচ্ছে তারা।
তবে সূত্রটি জানিয়েছে, ব্যয় কমানোর জন্য প্রিন্ট সেকশনে এখনও কর্মী ছাঁটাইয়ের কোনো সিদ্ধান্ত নেয়নি প্রথম আলো কর্তৃপক্ষ।
এজেন্ট, ডিলার ও হকারদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, ২ টাকা দাম বাড়ানোর নেতিবাচক প্রভাব পড়তে পারে এর প্রচার সংখ্যায়।
বাংলাদেশ সময়: ১৮০৬ ঘণ্টা, জুলাই ০৫, ২০১৩
এডিএ/আরআর