ঢাকা, শুক্রবার, ৬ বৈশাখ ১৪৩১, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ০৯ শাওয়াল ১৪৪৫

বাজেট

কর বাড়ায় মোটর পার্টস ব্যবসায়ীরা বিপাকে

শাহজাহান মোল্লা, স্টাফ করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ০০৫৮ ঘণ্টা, জুন ৯, ২০১৪
কর বাড়ায় মোটর পার্টস ব্যবসায়ীরা বিপাকে

ঢাকা: ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে এবার ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন এফবিসিসিআই’র দ্বারস্থ হতে যাচ্ছেন মোটর পার্টস ব্যবসায়ীরা। সরকার ঘোষিত ২০১৪-১৫ অর্থ বছরের বাজেটে মোটর পার্টসের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করায় এখন ব্যবসা টিকিয়ে রাখাই বড় চ্যালেঞ্জ বলে মনে করছেন তারা।



নিজেদের দাবি তুলে ধরতে দুই এক দিনের মধ্যে তারা এফবিসিসিআই কার্যালয়ে যাবেন বলে জানিয়েছে মোটর পার্টস ব্যবসায়ীরা।
 
অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আবদুল মুহিত-ঘোষিত বাজেটে টায়ার-টিউবের উপর অতিরিক্ত কর আরোপ করায় এসব পণ্যের দাম বাড়বে। বাংলানিউজকে এমনটিই জানিয়েছেন ঢাকা মোটর পার্টস ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি মো. শাহিদুর রহমান।

এ ব্যাপারে খোঁজ নিতে রোববার দুপুরে রাজধানীর বাংলামোটরে মোটর পার্টস দোকানগুলোতে সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, কিছু ব্যবসায়ী দাম বাড়িয়ে পণ্য বিক্রি শুরু করে দিয়েছেন।   আবার অনেকে জুলাই থেকে বাড়াবেন বলেও জানান।
 
বাংলামোটরের নিজ কার্যালয়ে মোটর পার্টস ব্যবসায়ীদের এই নেতা আরো বলেন, ‘এমনিতেই দীর্ঘ ক’মাস ধরে আমাদের ব্যবসা খুব খারাপ যাচ্ছে। মৌচাক-মগবাজার ফ্লাইওভার নির্মাণের কারণে এই এলাকায় কোনো গাড়ি প্রবেশ করে না। বেচা-কেনা নাই। সামান্য যা বিক্রি হচ্ছে তা দিয়ে কোনো রকমে কর্মচারীদের বেতন দিয়ে কোনোমতে দিন চলে যাচ্ছে। তারপর আবার বাজেটের ঘোষণায় সব রকমের মোটর পার্টসের ওপর অতিরিক্ত কর আরোপ করা হয়েছে। এতে বেচা-বিক্রি কমে যাবে। ’
 
শাহিদুর রহমান জানান, তারা সবাই বসে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন আগামী দুই-এক দিনের মধ্যে এফবিসিসিআই’র কাছে কিছু দাবি নিয়ে যাবেন। আমদানি করা মোটর পার্টসের ওপর অধিক হারে কর আরোপ যেন না করা হয় –অন্যসব দাবির মধ্যে এ দাবিও আছে। সরকার যে বাজেট করেছে তাতেই এই ব্যবসায় ধস নামতে পারে বলে আশংকা করছেন তারা। এরপর আবার যদি বাড়তি ট্যাক্স দিতে হয় তাহলে ব্যবসা বন্ধ করে দেওয়া ছাড়া আর কোনো উপায় থাকবে না।

তিনি বলেন, অনেক সময় দেখা যায়, বাজেট ঘোষণার পরে সংসদে আলোচনা শেষে আরো এক দফা কর বাড়ানো হয়ে থাকে। তাই আমাদের দাবি, এক দফা কর বড়ানোর পর যেন দ্বিতীয় দফা কর আরোপ না করা হয়।
 
এ বিষয়ে কথা হয় বাংলামোটরের আরেক মোটর পার্টস ব্যবসায়ী মো. মাহবুব হোসেনের সঙ্গে।
 
তিনি জানান, নতুন অর্থ বছরের বাজেট ঘোষণা করা হয়েছে। আমরা এখনও আগেও দামেই সব রকমের গাড়ির টায়ার বিক্রি করছি। তবে জুলাই মাস হতে টায়ার বা চাকার ওপর পাঁচ শতাংশ  করে দাম বৃদ্ধি পাবে। জুলাই থেকে যেহেতু বাজেট বাস্তবায়ন শুরু হয় তাই জুলাই মাসেই গাড়ির চাকার দাম বাড়বে।
 
তবে ব্যবসায়ীদের কথার সঙ্গে বাস্তব অবস্থার মিল খুঁজে পাওয়া কঠিন। মোটর বাইক মালিকদের সঙ্গে কথা বলে সে ধারণাই পাওয়া গেছে।

এ বিষয়ে কথা হয় মোটর বাইকের মালিক মো. শরিফুল ইসলামের সঙ্গে। পাশেই একটি দোকান থেকে নিজের বাইকের জন্য একটি ইয়াকোহামা টায়ার কেনেন তিনি। কেমন দাম পড়েছে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আগে এই টায়ার কিনেছি ১৮০০ টাকা দিয়ে। আজ কিনতে  হলো ২ হাজার টাকায়। বাজেট ঘোষণার পর  থেকেই  দাম বেড়ে গেছে বলে অভিযোগ করেন এই মোটর বাইক মালিক ।
 
বাংলামোটর এলাকায় কথা হয় মাইক্রোবাস চালক মো. আজিমের সঙ্গে। বাংলানিউজকে তিনি জানান, গাড়ির টায়ারসহ সব পার্টসের দাম বেড়েছে। একটা সিলভার স্টোন টায়ার কেনার জন্য বেশ কয়েকটি দোকান যাচাই করে দেখেছি। প্রতি দোকানেই ২০০-৩০০ টাকা বাড়তি দাম চাওয়া হচ্ছে।

গত ৫ জুন জাতীয় সংসদে অর্থমন্ত্রী আবুল মাল আব্দুল মুহিত-প্রস্তাবিত ২০১৪-১৫ অর্থবছরের বাজেটে আমদানি করা বাসের টায়ারের ওপর অতিরিক্ত পাঁচ শতাংশ হারে রেগুলেটরি ডিউটি আরোপের প্রস্তাব করা হয়েছে।

এছাড়া, বাইসাইকেল টিউবের আমদানিশুল্ক ১০ শতাংশ থেকে বাড়িয়ে ২৫ শতাংশে নির্ধারণের প্রস্তাব করা হয়েছে। এতে পণ্যটির দাম বাড়ার জোর সম্ভাবনা রয়েছে। আসছে জুলাই মাস থেকেই ঘোষিত বাজেট বাস্তবায়ন হবে আর তখন থেকেই ক্রেতাদের বাড়তি টাকা গুণতে হবে।
 
বাংলাদেশ সময়: ০০৪৩ ঘণ্টা, জুন ০৯, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।