ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১২ বৈশাখ ১৪৩১, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১৫ শাওয়াল ১৪৪৫

বঙ্গবন্ধু বিপিএল-২০১৯

প্রচারণার অভাব নাকি রোদে দর্শকহীন গ্যালারি?

নাসির উদ্দিন, সিনিয়র করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ২৩১৭ ঘণ্টা, জানুয়ারি ২, ২০২০
প্রচারণার অভাব নাকি রোদে দর্শকহীন গ্যালারি? ছবি: বাংলানিউজ

সিলেট: সিলেটের সঙ্গে ক্রিকেটের নিবিড় সম্পর্ক। এ অঞ্চলের চায়ের কড়া লিকার যেমন উষ্ণ করে প্রাণ, তেমনি ক্রিকেট মানেই সিলেটিদের মনের বাড়তি খোরাক। বড় কোনো ম্যাচে স্টেডিয়াম, গ্যালারি এমনকি মাঠের বাইরেও দর্শক সামলানো দায় হয়ে পড়ে।

দেশের ফুটবল যেখানে দর্শক পায় না, ক্রিকেটে সেখানে বিরাজ করে দর্শক উন্মাদনা। সিলেটেও এর ব্যতিক্রম হয় না।

এদিকে শুরু হয়েছে বঙ্গবন্ধু বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগের (বিপিএল) সিলেট পর্ব। কিন্তু দেশের ক্রিকেটের মেগা এই ইভেন্ট নিয়েও সিলেটের দর্শকদের মাঝে উন্মাদনার দেখা পাওয়া যাচ্ছে না।  

এবারের বিপিএল ৪র্থ পর্বের খেলা বৃহস্পতিবার (০২ জানুয়ারি) বেলা দেড়টা থেকে শুরু হয়েছে। রংপুর আর রাজশাহী রয়্যালসের মধ্যকার খেলা দিয়ে শুরু এই ম্যাচে দর্শক সমাগম নেই বললেই চলে।

মাঠের পশ্চিম গ্যালারি ও গ্রিন গ্যালারিতে কিছু দর্শক দেখা গেলেও কার্যত শুন্য ইস্টার্ন ও নর্দান (ভিআইপি) গ্যালারি। মাঠের বাইরেও ফটকেও দর্শকদের লম্বা লাইন নেই। টিকিট কাউন্টারেও নেই মানুষের জটলা। যে কারণে এবার দর্শক শূন্যতা নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে, তবে কি প্রচারণার অভাব, নাকি রোদের কারণে বিশাল ইস্টার্ন গ্যালারি দর্শকহীন?  

খেলা দেখতে আসা বালুচরের সুফিয়ান আহমদ বলেন, 'আমি নিজেও জানতাম না বৃহস্পতিবার থেকে সিলেটে বিপিএল শুরু হচ্ছে। বিপিএল নিয়ে অন্যবার প্রচারণা চালানো হলেও এবার প্রচারণা নেই। ' 

সিলেট ক্রীড়া সংস্থা সূত্র জানায়, এবার প্রচারণায় সিলেটে মাত্র চারটি বিলবোর্ড সাঁটানো হয়েছে।  

.সরেজমিনে দেখা যায়, স্টেডিয়ামের চারটি ফটকের মধ্যে সব ক’টিতেই ক্রিকেটভক্তদের ভীড় নেই। আবার বিপিএল’র টিকিট বিক্রির জন্য স্টেডিয়ামের প্রধান ফটকে ও নগরের রিকাবিবাজার জেলা স্টেডিয়ামের সামনে বুথ খোলা হলেও নেই ক্রেতা।

সংশ্লিষ্টরা জানান, এবার স্টেডিয়ামটিতে প্রায় ১০ কোটি টাকা ব্যয়ে আসন সংখ্যা বাড়ানো হয়েছে। আগে এ স্টেডিয়ামে আসন সংখ্যা ছিল ১৩ হাজার ৫৩৩টি। বর্তমানে স্টেডিয়ামের পূর্ব দিকের গ্যালারি দ্বিতল করা হয়েছে। এ নতুন গ্যালারিতে আসন সংখ্যা থাকছে তিন হাজার ৬৬০টি। ৬১৫ ফুট দৈর্ঘ্য এবং ৪৮৫ ফুট প্রস্থের স্টেডিয়ামে সবমিলিয়ে আসন সংখ্যা দাঁড়াচ্ছে ১৭ হাজার ১৯৩টি।

দর্শকহীনতার অভিযোগের প্রেক্ষিতে সিলেট ক্রীড়া সংস্থার সাধারণ সম্পাদক মারিয়া চৌধুরী মাম্মি বাংলানিউজকে বলেন, ‘আমি মাঠে আসিনি, তাই এ বিষয় নিয়ে মন্তব্য করতে চাই না। '  

সিলেট বিভাগীয় ক্রীড়া সংস্থার সদস্য ও বিপিএল সিলেট পর্বের মিডিয়া ম্যানেজার ফরহাদ হোসেন বলেন, এবার ইস্টার্ন গ্যালারিতে টিকিটের মূল্য ৩০০ টাকা, দু’তলার উপরে ৫০০, ওয়েস্টার্ন গ্যালারি ২০০, গ্রীন গ্যালারি ২০০ এবং গ্র্যান্ড স্ট্যান্ড ২০০ ভিআইপি গ্যালারির টিকিট ২ হাজার টাকা করে রাখা হচ্ছে।  

সংশ্লিষ্টরা জানান, সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে সাড়ে ১৮ হাজার দর্শক একসঙ্গে বসে খেলা উপভোগ করতে পারেন।

.২০০৭ সালে স্টেডিয়ামটি নির্মিত হয়। ২০১৪ সালে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের বাছাইপর্বের খেলার মধ্য দিয়ে আন্তর্জাতিক ভেন্যু হিসেবে স্টেডিয়ামটির অভিষেক হয়। ২০১৬ সালের অনূর্ধ্ব-১৯ বিশ্বকাপ, ২০১৭ বিপিএলের ছয়টি এবং ২০১৮ সালের বিপিএলের আটটি খেলা, বাংলাদেশ-শ্রীলঙ্কার একটি ওয়ানডে এবং বাংলাদেশ-জিম্বাবুয়ের টেস্ট ও টি-টোয়েন্টি ম্যাচও এ মাঠে অনুষ্ঠিত হয়েছিল। এ পর্যন্ত অনুষ্ঠিত হওয়া সবক'টি খেলায় দর্শকরা স্টেডিয়ামের গ্যালারি মাতিয়েছেন।

বিপিএলের গত আসরে সিলেট পর্বে রীতিমতো লঙ্কাকাণ্ড হয়েছে। প্রথমেই ‘সোনার হরিণ’ টিকিট চলে যায় কালোবাজারে। সেবার আগের রাত থেকেই সিলেট জেলা স্টেডিয়ামের বুথে হাজারো মানুষ লাইনে দাঁড়িয়েছিলেন; যার দৈর্ঘ্য এক কিলোমিটারেরও বেশি ছিল।  

চাহিদার তুলনায় টিকিটের সংখ্যা কম থাকায় গত আসরে ঘণ্টা তিনেকের মধ্যেই হাহাকার শুরু হয়েছিল। অনেকেই দীর্ঘ সময় লাইনে দাঁড়িয়ে টিকিট না পাওয়ার আক্ষেপ নিয়ে ফিরে গেছেন। ফলে নগরীর বিভিন্ন মোড়ে মোড়ে বড় পর্দায় খেলা দেখানোর ব্যবস্থাও করা হয়েছিল। এরপর স্থানীয় পর্যায়ে চায়ের কাপে ঝড় তুলেছিল বিপিএল। কিন্তু এবার চিত্র যেন একেবারে ভিন্ন।

বাংলাদেশ সময়: ১৮১৬ ঘন্টা, জানুয়ারি ০২, ২০২০
এনইউ/এমএইচএম

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বঙ্গবন্ধু বিপিএল-২০১৯ এর সর্বশেষ

welcome-ad