ঢাকা, শুক্রবার, ১৪ চৈত্র ১৪৩০, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৮ রমজান ১৪৪৫

বিএনপি

‘এ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না’ 

ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১২১১ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৭
‘এ সরকারের অধীনে নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না’  অনুষ্ঠানে বক্তব্য রাখছেন ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন। ছবি: বাংলানিউজ

নারায়ণগঞ্জ: বর্তমান আওয়ামী লীগ সরকারের অধীনে কোনো নির্বাচন আর হতে দেওয়া হবে না বলে হুঁশিয়ারি দিয়েছেন বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ড. খন্দকার মোশারফ হোসেন।

শনিবার (৩০ ডিসেম্বর) দুপুরে নারায়ণগঞ্জের বিবি রোডে একটি কমিউনিটি সেন্টারে জেলা ও মহানগর মহিলা দলের কর্মী সম্মেলনে প্রধান অতিথির বক্তৃতাকালে তিনি এ হুঁশিয়ারি দেন।

ড. খন্দকার মোশাররফ বলেন, জনগণ আর ৫ জানুয়ারির নির্বাচন দেখতে চায় না।

২০১৪ সালের মতো ভোটারবিহীন কোনো নির্বাচন এ দেশের মাটিতে আর হবে না, বর্তমান সরকারের অধীনে এমন কোনো নির্বাচন হতে দেওয়া হবে না।  

সরকার নিজেদের আজীবন ক্ষমতায় রাখার জন্যই তত্ত্বাবধায়ক সরকার ব্যবস্থা বাতিল করে দিয়েছে অভিযোগ করে বিএনপির এ নেতা বলেন, বিশ্বের কোনো দেশে সরকার ও সংসদ বহাল থেকে নির্বাচন ব্যবস্থা নেই। মনে রাখা দরকার, কোনো স্বৈরাচারই আজীবন ক্ষমতায় থাকতে পারেনি।  

তিনি বলেন, আমাদের নেত্রী (বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়া) চিকিৎসার জন্য দেশের বাইরে গিয়েছিলেন। কিন্তু এ সময় সরকার অপপ্রচার ছড়িয়ে বলেছিলো, বিএনপি শেষ হয়ে গেছে। কিন্তু নেত্রী দেশে আসার পর বিমানবন্দর থেকে গুলশানে তার বাড়ি পর্যন্ত তাকে এতো মানুষের অভ্যর্থনা দেখে সরকার পাগল যায়।  

দেশের মানুষ ভোট দেয়ার জন্য মুখিয়ে আছে উল্লেখ করে তিনি বলেন, এখন যদি ভোট দেওয়ার সুযোগ তারা পায়, তাহলে তারা তাদের রায় দিয়ে দেবে।  

খন্দকার মোশাররফ বলেন, আমাদের নেতাকর্মীদের নেত্রীর হাজিরার সময় রাস্তায় দাঁড়াতে দেয় না সরকার। শত বাধা পেরিয়েও হাজার-হাজার নেতাকর্মী ও জনতা রাস্তায় নেমে আসে। যদি বিএনপি শেষই হয়ে যায়, তাহলে এতো মানুষ আসে কোথা থেকে।  

আগামী নির্বাচনে সেনাবাহিনীকে নির্বাহী ক্ষমতা দিয়ে দায়িত্ব পালনের সুযোগ দেওয়ার দাবি তুলে বিএনপির এ নেতা বলেন, সংসদ ভেঙে দিতে হবে। নির্বাচন হবে নির্বাচনের মতোই। আওয়ামী লীগের লুট, আওয়ামী লীগের দুর্নীতি তৃণমূল পর্যন্ত আজকে এমন অবস্থার সৃষ্টি করেছে, এমন অবস্থায় যদি ভোট হয় এবং নির্বাচন হয় তাহলে তাদের অস্তিত্ব থাকবে না। এই ভয়েই আজকে তারা খালেদা জিয়াকে সাজা দিয়ে, দলের নেতাকর্মীদের কারাগারে রেখে নির্বাচন করতে চায়।

বিএনপির স্থায়ী কমিটির এ সদস্য বলেন, ২০১৪ আর ২০১৮ এক নয়। নদী দিয়ে অনেক পানি গড়িয়ে গেছে, এই প্রধানমন্ত্রীই ২০১৪ সালে বলেছিলেন, এই নির্বাচন নিয়ম রক্ষার নির্বাচন, অচিরেই তিনি আবার নির্বাচন দেবেন। তিনি তার কথা রাখেননি। দেশের জনগণ আজ প্রতারিত। এ দেশের মানুষ আর ২০১৪ দেখতে চায় না, তারা নিজেদের অধিকার প্রতিষ্ঠা করতে চায়। নিজের হাতে নিজেরা ভোট দিতে চায়।

অনুষ্ঠানে কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সভাপতি আফরোজা আব্বাস বলেন, মহিলের দলের নেতাকর্মীরা ঐক্যবদ্ধ রয়েছে। জেলা ও মহানগর মহিলা দল এক হয়ে সম্মেলন করছে। এটা দেখেই আমাদের সিনিয়র নেতাসহ সবার এক হওয়া উচিত।  

সম্মেলনের উদ্বোধন করেন আফরোজা আব্বাস। এতে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা অ্যাডভোকেট তৈমুর আলম খন্দকার, কেন্দ্রীয় মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক সুলতানা আহমেদ, কেন্দ্রীয় নেতা শাম্মী আক্তার, হেলেন জেরিন খান, সাবেক প্রতিমন্ত্রী রেজাউল করিম, নারায়ণগঞ্জ জেলা বিএনপির সভাপতি কাজী মনিরুজ্জামান মনির, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক মামুন মাহামুদ, সহ-সভাপতি আজহারুল ইসলাম মান্নান, আবদুল হাই রাজু, মহানগর বিএনপির সভাপতি অ্যাডভোকেট আবুল কালাম, সিনিয়র সহ-সভাপতি অ্যাডভোকেট সাখাওয়াত হোসেন খান, সাধারণ সম্পাদক এটিএম কামাল ও প্রবীণ বিএনপি নেতা জামাল উদ্দীন কালু।

এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন জেলা বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক জাহিদ হাসান রোজেল, মাসুকুল ইসলাম রাজীব, মহানগর বিএনপির সাংগঠনিক সম্পাদক অ্যাডভোকেট আবু আল ইউসুফ খান টিপু, সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক রুহুল আমিন সিকদার, মহানগর বিএনপির সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক মনিরুল ইসলাম সজল প্রমুখ।
 
নারায়ণগঞ্জ জেলা মহিলা দলের আহ্বায়ক নুরুন্নাহারের সভাপতিত্বে সম্মেলনে উপস্থিত ছিলেন জেলা মহিলা দলের সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক রহিমা শরীফ মায়া, মহানগর মহিলা দলের আহ্বায়ক রাশিদা জামাল, সিনিয়র যুগ্ম-আহ্বায়ক কাউন্সিলর আয়েশা আক্তার দিনা, সাজেদা খাতুন মিতা, বন্দর উপজেলা পরিষদের ভাইস চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মাহামুদা আক্তার, সোনারগাঁও উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি সালমা আক্তার, আড়াইহাজার উপজেলা মহিলা দলের সভাপতি পারভীন আক্তার, শহর  মহিলা দলের সাবেক সভাপতি দিলারা মাসুদ ময়না, মহিলা দল নেত্রী ডলি আক্তারসহ অন্যান্যরা।

বাংলাদেশ সময়: ১৮০৪ ঘণ্টা, ডিসেম্বর ৩০, ২০১৭
এইচএ/

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।