বুধবার (২৬ এপ্রিল) দুপুরে ঢাকা রিপোর্টার্স ইউনিটির (ডিআরইউ) সাগর-রুনি মিলনায়তন ‘মুক্তিযুদ্ধ ও জিয়াউর রহমান গবেষণা পরিষদ’ আয়োজিত প্রকাশনা উৎসব ও আলোচনা সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ মন্তব্য করেন।
সম্প্রতি প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ভারত সফরে বাংলাদেশের জন্য গুরুত্বপূর্ণ ইস্যু ছিলো তিস্তার পানি বণ্টন চুক্তি।
তবে যৌথ সংবাদ সম্মেলনে ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী আশ্বস্ত করেন, তার (বিজেপি) ও শেখ হাসিনার (আওয়ামী লীগ) সরকারের আমলেই বহুল প্রতিক্ষীত তিস্তা চুক্তি সই হবে।
কিন্তু, মঙ্গলবার দেওয়া এক বক্তব্যে পশ্চিমবঙ্গের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দোপাধ্যায় স্পষ্ট জানিয়ে দিয়েছেন, তিস্তায় পানি কম থাকায় বাংলাদেশকে পানি দেওয়া হবে না। আগে পশ্চিমবঙ্গের পানির চাহিদাপূরণ করে পরে অন্য চিন্তা।
মমতার এ বক্তব্য উল্লেখ করে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন- আমাদের দুঃখ হয়, প্রধানমন্ত্রী ভারত সফর থেকে ফিরে আসলেন কিন্তু আমরা তাকে ধন্যবাদ জানাতে পারলাম না। কারণ, তিনি আমাদের জন্য কিছু আনেননি, দিয়ে এসেছেন।
তিনি বলেন, প্রধানমন্ত্রী তিস্তার পানির আশ্বাস নিয়ে এসেছিলেন- এটা নাকি খুব শিগগিরই হবে। কিন্তু মমতা বন্দোপাধ্যায় গতকাল সেটা শেষ করে দিয়েছেন- ‘প্রশ্নই ওঠে না, আমার তিস্তায় কোনো পানি নেই, পানি দেওয়ার কোনো কারণ নেই!’
আবার বাঁধও তুলে ফেলতে বলেছেন। গঙ্গা ব্যারেজের যে প্রস্তাব বাংলাদেশ দিয়েছিলো, সে প্রস্তাব নাকচ করে দিয়ে নতুন করে নো ম্যানস ল্যান্ডে ব্যারেজ নির্মাণ করতে বলছেন। তারাও সেটা শেয়ার করবে, আমরাও ভাগ পাবো..! তাহলে আমাদের পাওনাটা কোথায়-জিজ্ঞাসা ফখরুলের।
তিনি বলেন, পাওনার কথা বললেই আমি ভারতবিরোধী হয়ে গেলাম? আমি কখনো ভারত বিরোধী না। আমি ভারতের জনগণের বিরুদ্ধে কখন-ই নই। আমি আমার পাওনা বুঝে পেতে চাই।
পানির জন্য প্রয়োজনে জাতিসংঘে যাওয়ার আহ্বান জানিয়ে মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর বলেন- সরকারের দায়িত্ব হলো জনগণের স্বার্থ রক্ষা করা। তারা স্বার্থ রক্ষা করতে পারেনি। ব্যর্থ হয়েছে। আজ হাওরে ঢল নেমে আসছে। কোথা থেকে আসছে? উজান থেকে আসছে। তারা বাঁধ দিয়ে রেখেছে। যখন বেশি বৃষ্টি হয়, তলিয়ে যাই। সুতরাং অভিন্ন নদীগুলোর ক্ষেত্রে আন্তর্জাতিক আইন আছে। এটার জন্য প্রয়োজনে জাতিসংঘে যাক সরকার-সেটা আমরা চাই।
‘মুক্তিযুদ্ধ ও জিয়াউর রহমান গবেষণা পরিষদ’র সভাপতি মাহতাব উদ্দিন জিমির সভাপতিত্বে অন্যদের মধ্যে বক্তব্য দেন বাংলাদেশ কল্যাণ পার্টির চেয়ারম্যান মেজর জেনারেল (অব.) সৈয়দ মুহাম্মদ ইবরাহিম, গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী, বিএনপির ভাইস চেয়ারম্যান শওকত মাহমুদ, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, কবি আব্দুল হাই সিকদার, খন্দকার আব্দুল মুক্তাদির প্রমুখ।
অনুষ্ঠানে ‘জিয়াউর রহমান বীর উত্তম’ সংকলিত গ্রন্থের মোড়ক উন্মোচন করা হয় এবং ‘মুক্তিযুদ্ধ ও জিয়াউর রহমান গবেষণা পরিষদ’র অফিসিয়াল ওয়েবসাইট উদ্বোধন করা হয়।
বাংলাদেশ সময়: ১৪৫৭ ঘণ্টা, এপ্রিল ২৬, ২০১৭
এজেড/ওএইচ/আরআই