ঢাকা, শনিবার, ১৩ বৈশাখ ১৪৩১, ২৭ এপ্রিল ২০২৪, ১৭ শাওয়াল ১৪৪৫

বাংলানিউজ স্পেশাল

হারাগাছ এখন ফেন্সিডিলের রাজধানী!

সাজ্জাদ বাপ্পী,ডিস্ট্রিক্ট করেসপন্ডেন্ট | বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম
আপডেট: ১৫৪৩ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৪
হারাগাছ এখন ফেন্সিডিলের রাজধানী! ফাইল ফটো

রংপুর: এক সময়ের বিড়ি শিল্পের রাজধানী খ্যাত হারাগাছ পৌরসভা এখন ফেন্সিডিলের রাজধানী হিসেবে পরিচিতি লাভ করেছে।

হারাগাছ পৌর এলাকার বিভিন্ন অলি গলিতে প্রকাশ্যে দিন দুপুরে অবাধে বিক্রি হচ্ছে ফেন্সিডিল সহ অন্যান্য নেশাসামগ্রী।



ফেন্সিডিল বিক্রি বন্ধে ইতোপূর্বে বিভিন্ন সংগঠন আন্দোলন সংগ্রাম গড়ে তুললেও মাঝ পথে গিয়ে থমকে দাঁড়িয়েছেন অনেকেই। আন্দোলনকারীরা জানান, পুলিশ সহ প্রশাসনের সহযোগিতা না পাওয়ায় তারা এগুতে পারছেন না।

রংপুর নগরী থেকে হারাগাছের দূরত্ব কম হওয়ায়, সকাল থেকে রাত পর্যন্ত বিভিন্ন বয়সের মাদকসেবীরা শহর থেকে মোটরসাইকেল নিয়ে ছুটছেন মাদকদ্রব্য বিক্রির স্পটগুলোতে। এই স্পট গুলোতে প্রতিদিন প্রায় ২০ থেকে ৩০ হাজার বোতল ফেন্সিডিল বিক্রি হয়ে থাকে।

এখান থেকে দেশের বিভিন্ন স্থানে পাচার করা হয় ফেন্সিডিল। পুলিশের তেমন কোন তৎপরতা না থাকায় বেপরোয়া হয়ে উঠেছে মাদক ব্যবসায়ীরা। এখন ঈদ উপলক্ষ্যে ফেন্সিডিলের মজুদ গড়ে তোলা হচ্ছে এখানে।

এদিকে ফেন্সিডিল ব্যবসার কারণে হারাগাছের দুর্নাম সর্বত্র ছড়িয়ে পড়ায় উদ্বিগ্ন হয়ে পড়েছে এলাকাবাসী।

স্থানীয়দের থেকে জানা যায়, ৯০ দশক থেকেই হারাগাছে ফেন্সিডিলের ব্যবসা হয়ে আসছে। এরপর ব্যবসা দিন দিন বৃদ্ধি পেয়েছে।

এই ব্যবসার সাথে সেখানে এখন প্রত্যক্ষ ও পরোক্ষভাবে জড়িয়ে আছে ৩ শতাধিক ব্যক্তি। এখানকার ফেন্সিডিল ব্যবসায়ীদের মূল গ্রাহক রংপুর জেলা শহরের বিভিন্ন শ্রেণী ও পেশার মানুষ। এছাড়া পার্শ্ববর্তী বিভিন্ন জেলা উপজেলা থেকে আসা মাদকের পাইকারি ব্যবসায়ীরাও এখান থেকে ফেন্সিডিল কিনে নিয়ে যায়।

জানা গেছে, রংপুর শহর থেকে প্রতিদিনই বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মী, শিক্ষক-ছাত্র, ব্যবসায়ী, চিকিৎসক, বিভিন্ন বাণিজ্যিক কোম্পানির রিপ্রেজিনটেটিভ, শ্রমিক, বেকার যুবক, সরকারি-আধাসরকারি চাকরিজীবীসহ  বিভিন্ন পেশার মানুষ হারাগাছে এসে ফেন্সিডিল পান করে যায়।
 
স্থানীয় সূত্র জানায়, পৌর এলাকার চাঁনকুঠি, সৎবাজার, বানুপাড়া থেকে শুরু করে বাঁধের পাড়, সাদা মসজিদ, আমতলা, মায়া বাজার, হারাগাছ কলেজ সংলগ্ন মোড়, টেম্পু স্ট্যান্ড, টাওয়ার সহ বিভিন্ন স্থানে প্রকাশ্যেই ফেন্সিডিল বিক্রি করা হচ্ছে।

হারাগাছ পৌর এলাকা কাউনিয়া থানা পুলিশের আওতায় হলেও এখানে তাদের কার্যক্রম নেই বললেই চলে। অভিযোগ উঠেছে থানা পুলিশকে ম্যানেজ করে মাদক ব্যবসায়ীরা এই ব্যবসা চালাচ্ছে।

এলাকাবাসী জানায়, মাদক ব্যবসা প্রতিরোধের জন্য সামাজিক আন্দোলনের পাশাপাশি এখানে একটি পুলিশ ক্যাম্প বসানো দরকার।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে রংপুর মাদকদ্রব্য অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক দিলারা জামান বলেন, সামাজিক প্রতিরোধ ছাড়া আমাদের একার পক্ষে এই ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ করা সম্ভব নয়। তবে আমরা যথাসাধ্য চেষ্টা করছি।

বাংলাদেশ সময়: ১৫৩৪ ঘণ্টা, জুলাই ২৪, ২০১৪

বাংলানিউজটোয়েন্টিফোর.কম'র প্রকাশিত/প্রচারিত কোনো সংবাদ, তথ্য, ছবি, আলোকচিত্র, রেখাচিত্র, ভিডিওচিত্র, অডিও কনটেন্ট কপিরাইট আইনে পূর্বানুমতি ছাড়া ব্যবহার করা যাবে না।

বাংলানিউজ স্পেশাল এর সর্বশেষ