ঢাকা: অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২০২৬ সালের এপ্রিলের প্রথমার্ধে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের ঘোষণা দিয়েছেন। তবে তার এ সিদ্ধান্তকে ঘিরে শুরু হয়েছে ব্যাপক বিতর্ক।
গত শুক্রবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে প্রধান উপদেষ্টা বলেন, এই সরকারের প্রধান দায়িত্ব হচ্ছে একটি পরিচ্ছন্ন, অংশগ্রহণমূলক, শান্তিপূর্ণ ও উৎসবমুখর নির্বাচন আয়োজন করা— যাতে ভবিষ্যতে দেশ আর কোনো নতুন সংকটে না পড়ে।
তিনি বলেন, নির্বাচনের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানগুলোয় সুশাসন নিশ্চিত না হলে, অতীতে ছাত্র-জনতার যেসব আত্মত্যাগ হয়েছে, তা বিফলে যাবে। তাই সংস্কার, বিচার ও নির্বাচন- এই তিনটি ম্যান্ডেট নিয়ে আমরা দায়িত্ব গ্রহণ করেছি। আগামী রোজার ঈদের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে একটি গ্রহণযোগ্য অবস্থানে পৌঁছানো সম্ভব হবে। বিশেষ করে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার— যা জুলাইয়ের গণ-অভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি ‘সম্মিলিত দায়’ বলেও উল্লেখ করেন তিনি।
ড. ইউনূস আশা প্রকাশ করে বলেন, আগামী রোজার ঈদের মধ্যে সংস্কার ও বিচারের বিষয়ে আমরা একটি গ্রহণযোগ্য জায়গায় পৌঁছাতে পারব। বিশেষ করে মানবতাবিরোধী অপরাধের বিচার— যা জুলাইয়ের গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের প্রতি আমাদের সম্মিলিত দায়, সে বিষয়ে দৃশ্যমান অগ্রগতি হবে। এ সময় তিনি ইতোমধ্যে বিচার, সংস্কার ও নির্বাচনী ব্যবস্থা নিয়ে সব পক্ষের সঙ্গে আলোচনা হয়েছে বলে জানান।
সবশেষ রাজনৈতিক সংলাপে বিএনপিসহ বেশিরভাগ দল দাবি করে, জাতীয় নির্বাচন হতে হবে ২০২৫ সালের ডিসেম্বরের মধ্যেই। তবে জামায়াতে ইসলামীর পক্ষ থেকে জানানো হয়, ফেব্রুয়ারি থেকে এপ্রিলের মধ্যে নির্বাচন হলে তারা তেমন আপত্তি করবে না। অন্যদিকে, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি) প্রস্তাব দেয়— প্রথমে রাষ্ট্রীয় সংস্কার, শেখ হাসিনার বিচার ও তার ফাঁসির রায় কার্যকর করতে হবে। এরপর ‘হাসিনা উৎখাত আন্দোলন’ সফল করে ‘জুলাই সনদ’ প্রকাশের পরেই সাধারণ নির্বাচন দেওয়া যেতে পারে।
সিংহভাগ রাজনৈতিক দলের দাবি ছিল ডিসেম্বরেই নির্বাচন, অথচ তা উপেক্ষা করে হঠাৎ করেই ৬ জুন শুক্রবার জাতির উদ্দেশ্যে দেওয়া ভাষণে ড. মুহাম্মদ ইউনূস ২০২৬ সালের এপ্রিলেই নির্বাচন আয়োজনের ঘোষণা দেন। এতে বিস্মিত হয়েছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। ফলে এখন সবচেয়ে বড় প্রশ্ন হয়ে দাঁড়িয়েছে— কাকে সন্তুষ্ট করতে গিয়ে তিনি ডিসেম্বর নয়, এপ্রিলে নির্বাচন করতে চাইছেন?
এপ্রিলে নির্বাচনের সময়সূচি ঘোষণার পর বিএনপি কড়া প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে। তারা বলেছে, অন্তর্বর্তীকালীন সরকার ঐকমত্য প্রতিষ্ঠার কথা বললেও, একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর প্রভাবে সিংহভাগ রাজনৈতিক দলের মতামত উপেক্ষা করছে। এর ফলে তাদের নিরপেক্ষতা নিয়ে বড় প্রশ্ন উঠেছে। দলটির দাবি, এই সিদ্ধান্তে জনগণের মনে স্বাভাবিকভাবেই সন্দেহ তৈরি হতে পারে— আসন্ন নির্বাচন আদৌ অবাধ ও নিরপেক্ষ হবে কি না তা নিয়ে।
এপ্রিল মাসে নির্বাচন আয়োজন নিয়ে সমালোচনার মাত্রা আরও বেড়েছে সময়সূচি ও বাস্তবতার প্রশ্নে। রমজানের ঠিক পরপরই এ সময় পড়ায় রাজনৈতিক দলগুলো বলছে—সে সময় নির্বাচনী প্রচারণা চালানো সম্ভব নয়। তার ওপর এপ্রিল মাসে শিক্ষার্থীদের পরীক্ষা, আবহাওয়ার অনিশ্চয়তা, চৈত্রের খরা আর কালবৈশাখীর ঝুঁকিও রয়েছে। এসব কারণে শুধু বিএনপি নয়, বেশিরভাগ রাজনৈতিক দলই এপ্রিলকে একটি ‘অবাস্তব সময়’ হিসেবে দেখছে।
এই প্রসঙ্গে ১২ দলীয় জোট এক বিবৃতিতে বলেছে, ডিসেম্বর নির্বাচন শুধু একটি দলের দাবি নয়, দেশের সব গণতান্ত্রিক রাজনৈতিক দলের অভিন্ন আকাঙ্ক্ষা। এপ্রিল নির্বাচন ঘোষণাটি যেন ‘এপ্রিল ফুল’ না হয়ে দাঁড়ায়।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়, ডিসেম্বরে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব। এমনকি দেশপ্রেমিক সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকেও সেই বিষয়টি বিভিন্নভাবে তুলে ধরা হয়েছে। এখন সময় এসেছে জনগণের দীর্ঘদিনের চাওয়াকে সম্মান জানানোর।
এপ্রিলের নির্বাচনী ঘোষণা নিয়ে বাম জোটও তাদের অসন্তোষ প্রকাশ করেছে। গণমাধ্যমে দেওয়া এক বিবৃতিতে জোটের নেতারা বলেছেন, নির্বাচন কেন ডিসেম্বরের বদলে এপ্রিলে নেওয়া হলো—তা বোধগম্য নয়। তাদের ভাষায়, এতে অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার অভিলাষই প্রকাশ পেয়েছে। বাম জোটের অভিযোগ, দেশের অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ও জনগণের মতামত উপেক্ষা করে, বিশেষ দল বা গোষ্ঠীর স্বার্থে নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়ার মাধ্যমে অধ্যাপক ইউনূস তার নিরপেক্ষতার অবস্থান হারিয়েছেন।
নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে অধিকাংশ রাজনৈতিক দলের মত উপেক্ষিত হওয়ায় হতাশা প্রকাশ করে বিপ্লবী ওয়ার্কার্স পার্টির সাধারণ সম্পাদক সাইফুল হক বলেন, বিভিন্ন রাজনৈতিক দলের যে যৌক্তিক দাবিগুলো ছিল, সেগুলো প্রধান উপদেষ্টা আমলে না নেওয়াটা অত্যন্ত হতাশাজনক।
একই সুরে মন্তব্য করেছেন বাংলাদেশের কমিউনিস্ট পার্টির (সিপিবি) সাধারণ সম্পাদক রুহিন হোসেন প্রিন্সও। তিনি বলেন, নির্বাচনের সময়সীমা ঘোষণা একটি ধাপে অগ্রগতি হলেও, এতে জনগণের আকাঙ্ক্ষার প্রতিফলন ঘটেনি। দেশের মানুষ চায়, ডিসেম্বরের মধ্যেই একটি নির্বাচিত সরকার গঠিত হোক।
বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য সালাহউদ্দিন আহমেদও নির্বাচনের সময়সীমা নিয়ে জাতির প্রত্যাশা পূরণ হয়নি বলে জানিয়েছেন। এ প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে তিনি বলেন, রাজনৈতিক দলগুলো ডিসেম্বরের কথা বলেছে। সেগুলো আমলে না নিয়ে প্রধান উপদেষ্টা অনুপযোগী বর্ষা, পরীক্ষা ও রোজার সময়ে নির্বাচন অনুষ্ঠানের কথা বলেছেন। সার্বিক বিবেচনায় জানুয়ারির মধ্যেও যদি নির্বাচন হতে পারতো, কিন্তু প্রধান উপদেষ্টা এটা আমলে নেননি।
এপ্রিল নির্বাচনের জন্য কতটা অনুকূল, তা নিয়ে শঙ্কা প্রকাশ করেছেন গণসংহতি আন্দোলনের প্রধান সমন্বয় জোনায়েদ সাকিও। প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণার পর গণমাধ্যমকে দেওয়া বক্তব্যে তিনি বলেন, আমরা বলেছিলাম, ডিসেম্বরে নির্বাচন দিতে না পারলে তার কারণ সরকারের পক্ষ থেকে স্পষ্ট হওয়া দরকার। প্রধান উপদেষ্টা নির্বাচনের সময় হিসেবে এপ্রিলের প্রথমার্ধের কথা উল্লেখ করেছেন; যে সময়টি প্রতিকূল আবহাওয়া, পাবলিক পরীক্ষা এবং এর আগে রোজা, সব মিলিয়ে নির্বাচনের জন্য কতটা অনুকূল ও বাস্তবসম্মত হবে, সে ব্যাপারে আশঙ্কা রয়েছে।
যদিও জামায়াতে ইসলামী প্রধান উপদেষ্টার এই ঘোষণাকে স্বাগত জানিয়েছে। দলটির আমীর শফিকুর রহমান এ প্রসঙ্গে বলেছেন, এই ঘোষণায় জাতি আশ্বস্ত হয়েছে। ঘোষিত সময়ের মধ্যেই তিনি একটি অবাধ, সুষ্ঠু, নিরপেক্ষ ও গ্রহণযোগ্য নির্বাচন অনুষ্ঠানের পদক্ষেপ গ্রহণ করবেন বলে জাতি আশা প্রকাশ করছে।
আর এতেই রাজনীতির মাঠে নতুন করে প্রশ্নের ডালপালা ছড়াতে শুরু করেছে— জামায়াতে ইসলামীর পরামর্শেই কি এপ্রিল নির্বাচন ঘোষণার সিদ্ধান্ত নিলেন ড. ইউনূস? দেশের ভোটাধিকার কি এখন জামায়াতের ইচ্ছার ওপর নির্ভর করছে? অনেকেই মনে করছেন, অধিকাংশ রাজনৈতিক দল যখন ডিসেম্বর নির্বাচন চায়, তখন শুধুমাত্র জামায়াতই এপ্রিলের সময়সীমা মেনে নেওয়ার ইঙ্গিত দিয়েছিল। ফলে প্রশ্ন উঠেছে— জাতির ভবিষ্যৎ নির্বাচন কি তবে একটি বিতর্কিত দলের ইচ্ছার ভিত্তিতে নির্ধারিত হচ্ছে?
জাতীয় নাগরিক পার্টি প্রধান উপদেষ্টার ঘোষণাকে ইতিবাচকভাবে গ্রহণ করেছে। দলটির নেতারা বলছেন, আগামী বছরের এপ্রিলের প্রথমার্ধের মধ্যে যদি জুলাই সনদ, জুলাই ঘোষণাপত্র ও সংস্কার বাস্তবায়নের ব্যাপারে কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া হয়, তাহলে ঘোষিত এই সময়ে নির্বাচনের বিষয়ে তাদের পক্ষ থেকে কোনো আপত্তি নেই।
নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে শুধু নয়, আরও বহু ইস্যুতে অন্তর্বর্তী সরকারের সঙ্গে রাজনৈতিক দলগুলোর, বিশেষ করে বিএনপির, দূরত্ব ক্রমেই বাড়ছে। রাজনৈতিক বিশ্লেষকদের মতে, নির্বাচন ঘিরে বিএনপির লাগাতার চাপ প্রয়োগে বিরক্ত হন প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূস। একপর্যায়ে তিনি পদত্যাগের হুমকিও দেন। সে সময় বলা হয়েছিল— যদি তাকে স্বাধীনভাবে কাজ করতে না দেওয়া হয় এবং নির্বাচনের প্রস্তুতি যথাযথভাবে নেওয়ার সুযোগ না দেওয়া হয়, তবে তিনি দায়িত্ব ছেড়ে দেবেন।
বিশ্লেষকরা মনে করেন, বিএনপি ডিসেম্বরেই নির্বাচন চেয়ে অনড় অবস্থান নেওয়ায়, এবং জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের কিছু গুরুত্বপূর্ণ সুপারিশে অন্যান্য দল একমত হলেও বিএনপিকে রাজি করানো না যাওয়ায়, ড. ইউনূসের মধ্যে অসন্তোষ তৈরি হয়। এছাড়া, বিএনপি নেতা ইশরাক হোসেনকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের মেয়র হিসেবে ঘোষণা দেওয়ার দাবিতে দলটির নেতাকর্মীরা সিটি করপোরেশন কার্যক্রমে দীর্ঘসময় অচলাবস্থা তৈরি করে। এসব ঘটনায় ড. ইউনূসের বিরক্তি আরও বেড়ে যায় বলেও অনেক রাজনৈতিক বিশ্লেষকের মত।
ডিসেম্বরে নির্বাচন দিতে না পারলেও জানুয়ারি বা ফেব্রুয়ারি মাসে নির্বাচন করার মতো অনুকূল সময় ছিল। তবে কেন এপ্রিল মাস বেছে নেওয়া হলো, এবং এপ্রিলেই বা নির্বাচন হবে কিনা— এ নিয়ে প্রশ্ন উঠছে। বিএনপি অভিযোগ করে, নির্দলীয় ও নিরপেক্ষ থাকার কথা বললেও অন্তর্বর্তী সরকার একটি বিশেষ রাজনৈতিক গোষ্ঠীর প্রভাবে সিংহভাগ রাজনৈতিক দলের মতামত উপেক্ষা করছে। এতে দেশের জনগণের মধ্যে অবাধ ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের বিষয়ে শঙ্কা তৈরি হচ্ছে। জাতীয় ঐকমত্য কমিশনের বৈঠকে বিএনপি ও অধিকাংশ দল ডিসেম্বরের মধ্যে নির্বাচন চেয়েছিল। কিন্তু জামায়াত এপ্রিলের সময়সূচি দাবি করায় শেষ পর্যন্ত সরকার দলটির কথা মেনে নিয়েছে। এটাও বিএনপির ক্ষোভের কারণ।
অধিকাংশ রাজনৈতিক দল ডিসেম্বরেই ভোট চেয়েছিল, কিন্তু সরকার তাদের দাবিকে গুরুত্ব না দিয়ে নির্বাচন তিন মাস পিছিয়ে দিয়েছে। যদিও এই তিন মাস সময় বেশি না, তবুও অনেকেই এটাকে ক্ষমতা দীর্ঘায়িত করার একটি কৌশল হিসেবেই দেখছেন। সাংবাদিক, শিক্ষক এবং কলামিস্ট আনিস আলমগীর এ প্রসঙ্গে বাংলানিউজকে বলেন, ‘সরকারের ক্ষমতালিপ্সা দৃশ্যত। ’
প্রধান উপদেষ্টাকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, ‘সরকারে বসে দশ মাসে তেরবার বিদেশ সফর করে ক্ষমতার লিপ্সায় পেয়ে গেছে। তার প্রধান এজেন্ডা নির্বাচন দেওয়া না, ক্ষমতা ভোগ করা এবং তিনি সেটাই করছেন। উনি যতদিন পারবেন, আরও ভোগ করবেন। উনার হিডেন যে এজেন্ডা আছে, সেসব পূরণ করার জন্য হয়তো তার আরও সময় দরকার। এপ্রিলে যে নির্বাচন হবে, এটাও এখনো অনেকে বিশ্বাস করে না। নির্বাচনের একটা সময় ঘোষণা করা হলো, মানুষের মধ্যে কোনো প্রাণচাঞ্চল্য দেখা গেল না। কারও মধ্যে কোনো উৎসাহ নেই। মানুষ এক প্রকার হতাশ। মানুষের মধ্যে শঙ্কা আছে- নির্বাচন আদৌ হবে কিনা। ’
নির্বাচন পেছানো সরকারের পূর্ব উদ্দেশ্য ছিল মন্তব্য করে তিনি আরও বলেন, ‘সরকার জামায়াতে থেকে সমর্থন পেল। এনসিপিও সরকারের নিজের সৃষ্টি। তারাও যে সমর্থন করবে, এটা স্বাভাবিক। ফলে জনগণকে দেখানো যাবে- রাজনীতির মাঠে থাকা দুটি দল তাদেরকে সমর্থন করছে। কিন্তু বাস্তবতা তো হলো, ৯৫ শতাংশ রাজনৈতি দল ডিসেম্বরের মধ্যেই নির্বাচন চেয়েছে। আমি মনে করি, ডিসেম্বরে নির্বাচন অনুষ্ঠিত হওয়ার ক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক দলেরই আপত্তি নেই ইনক্লুডিং জামায়াত-এনসিপি। তারা তো বলে নাই ডিসেম্বরে নির্বাচন হলে তাদের আপত্তি আছে। সরকার নিজেই নির্বাচন পেছাতে চায়, সেই সিদ্ধান্তে তারা জামায়াত-এনসিপির সমর্থন জোগাতে পেরেছে। ’
জাতীয় নির্বাচনের সময়সূচি নিয়ে দেশের রাজনৈতিক মহলে উত্তেজনা বিরাজ করার মধ্যে একপক্ষের ইচ্ছাকে অগ্রাধিকার দিয়ে অন্য পক্ষের মতামত উপেক্ষার অভিযোগ ওঠায় প্রধান উপদেষ্টা ড. মুহাম্মদ ইউনূসের নিরপেক্ষতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। বিশ্লেষকরা মনে করছেন, এপ্রিলে নির্বাচন ঘোষণা করার পেছনে রাজনৈতিক প্রভাব, আভ্যন্তরীণ চাপ এবং সুস্পষ্ট কোনো কৌশল কাজ করছে। অন্তর্বর্তী সরকার গ্রহণযোগ্য, অংশগ্রহণমূলক ও নিরপেক্ষ নির্বাচনের প্রতিশ্রুতি দিয়ে যাত্রা শুরু করলেও বর্তমান পরিস্থিতিতে সেই প্রতিশ্রুতি বাস্তবায়ন কতটা সম্ভব হবে, তা নিয়ে জনগণের মধ্যে সন্দেহ ও উদ্বেগ বাড়ছে।
নির্বাচনকে সর্বজনগ্রাহ্য ও স্বচ্ছ করতে না পারলে, ড. ইউনূসের ভূমিকা ও উদ্দেশ্য নিয়ে সংশয় আরও বাড়বে এবং জাতির নির্বাচনের প্রত্যাশা আবারও হতাশায় পরিণত হবে— এমন আশঙ্কা প্রকাশ করছেন রাজনৈতিক বিশ্লেষকরা।
এসবিডব্লিউ/এমজে